• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

টিকা নেওয়ার হার কোভিড পূর্ব অবস্থাকে ছাড়িয়েছে


নিজস্ব প্রতিবেদক অক্টোবর ১৩, ২০২০, ০৪:১৭ পিএম
টিকা নেওয়ার হার কোভিড পূর্ব অবস্থাকে ছাড়িয়েছে

ঢাকা : করোনার কারণে দেশে লকডাউন চলার সময় এপ্রিল ও মে মাসে শিশুদের টিকা গ্রহণের হার ব্যাপক মাত্রায় কমে গেলেও জুন-জুলাই মাসে তা কোভিভ-পূর্ব অবস্থাকে ছাড়িয়ে গেছে। এতে সন্তোষ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের শিশু তহবিল (ইউনিসেফ)।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের (এমওএইচএফডব্লিউ) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের (ডিজিএইচএস) সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. মওলা বক্শ চৌধুরী বলেন, যেসব শিশু টিকা গ্রহণ করতে পারেনি আমরা তাদের নিবিড়ভাবে চিহ্নিত করছি এবং আস্থা বাড়াতে বাবা-মা ও যত্নকারীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পৃক্ত হচ্ছি।

জুন এবং জুলাই মাসে আমরা টিকাদানের দিক থেকে প্রাক-কোভিড পর্যায়কে ছাড়িয়ে গিয়েছি। মাসে আমাদের লক্ষ্যের ১০০ শতাংশেরও বেশি অর্জন করেছি। আমরা শিশুদের জন্য বাড়তি কার্যক্রম গ্রহণের মাধ্যমে টিকাদানের ধারাবাহিকতায় যে বিচ্ছেদ পড়েছে তা পূরণের পরিকল্পনা করেছি।

বাংলাদেশে ইউনিসেফের উপপ্রতিনিধি ভিরামেন্ডোনকা বলেন, এটি বাংলাদেশ সরকারের একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন। এর ফলে নিঃসন্দেহে হাজার হাজার শিশুর জীবন বাঁচাবে। এ গতি যাতে বজায় থাকে এবং কোনো শিশু যাতে বাদ না পড়ে তা নিশ্চিতে টিকাদান প্রচেষ্টায় সহায়তা অব্যাহত রাখতে ইউনিসেফ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

করোনার কারণে বাংলাদেশ কার্যকরভাবে লকডাউনের ভেতর দিয়ে যাওয়ায় স্বাস্থ্যসেবা মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হয়। তবে প্রথম দিকের বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও সরকার এই সেবা অব্যাহত রাখায় ইউনিসেফ গুরুত্বপূর্ণ টিকাগুলোর সরবরাহ নিশ্চিত করে। গতকাল সোমবার ইউনিসেফের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের (এমওএইচএফডব্লিউ) স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তরের (ডিজিএইচএস) মা, নবজাতক, শিশু ও কিশোরী স্বাস্থ্যবিষয়ক পরিচালক ড. মো. শামসুল হক বলেন, লকডাউনে বিধিনিষেধের কারণে অনেক বাবা-মা তাদের শিশুদের টিকা দিতে বাড়ির বাইরে বের হওয়া নিয়ে ভয়ের মধ্যে ছিলেন। অন্যদিকে টিকাদান সেবা যে অব্যাহত ছিল সেটাই জানতেন না অনেকে। ফলস্বরূপ মার্চ থেকে মে পর্যন্ত সময়ে টিকা গ্রহণের হার ব্যাপক মাত্রায় কমে যায়।

ইউনিসেফ বলেছে, বাংলাদেশে জাতীয় টিকাদান কর্মসূচির লক্ষ্য হচ্ছে বছরে ৩৮ লাখ শিশুকে টিকা দেওয়া। এপ্রিল ও মে মাসে দুই লাখ ৮৪ হাজারেরও বেশি শিশু পেন্টাভ্যালেন্ট ভ্যাকসিন মিস করেছে, যা প্রতি মাসের লক্ষ্যের এবং কোভিডের আগের পর্যায়ের প্রায় অর্ধেক। পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় অংশীদারদের সহায়তায় টিকাদান কর্মসূচি পুনরুজ্জীবিত করতে নিয়মতান্ত্রিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। টিকার মজুত এবং টিকাদানের সময়গুলো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে।

মহামারীর কারণে ভীতি ও উদ্বেগ মোকাবিলা করে শিশুদের টিকা দিতে এবং তাদের স্বাস্থ্যের সুরক্ষা নিশ্চিতে অভিভাবকদের উৎসাহিত করতে প্রচারাভিযান চালাতে সহায়তা করা হয়। একই সময়ে ইউনিসেফ ও ডব্লিউএইচও (বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা) কোভিড-১৯ চলাকালে স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য নিরাপদ টিকাদান এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণবিষয়ক নির্দেশিকা তৈরি ও প্রশিক্ষণ দিতে বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তা দিয়েছে।

এ ছাড়া মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জাতীয় প্রচেষ্টায় সহায়তা দিতে এ পর্যন্ত ইউনিসেফ এক কোটি ২০ লাখ ডলার সমপরিমাণ ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক ও চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ করেছে। স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য দ্রুত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থার পাশাপাশি কমিউনিটিতে সচেতনতা বাড়াতে জোরদার কর্মসূচি গ্রহণের কারণে জুন থেকে টিকাদানের হার পূর্বাবস্থায় ফিরে যেতে শুরু করে।

ভিরামেন্ডোনকা বলেন, জীবন বাঁচানোর ক্ষেত্রে আমাদের কাছে যত ধরনের উপায় রয়েছে, তার মধ্যে টিকা হচ্ছে অন্যতম সাশ্রয়ী একটি উপায়। বাংলাদেশে শিশুদের বেঁচে থাকার ক্ষেত্রে অবদান রাখার প্রতিশ্রুতিতে ইউনিসেফ অটল রয়েছে। এ ছাড়া আমরা হাম, রুবেলা (মার্চে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা স্থগিত করা হয়) কার্যক্রম পুনরায় তাড়াতাড়ি শুরু করার জন্য সহায়তা দিতে প্রস্তুত।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!