• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

‘ট্রাকচালক হয়ে প্রধানমন্ত্রী পদক পাব স্বপ্নেও ভাবিনি’


দিনাজপুর প্রতিনিধি মার্চ ১৩, ২০১৯, ০৭:৪৯ পিএম
‘ট্রাকচালক হয়ে প্রধানমন্ত্রী পদক পাব স্বপ্নেও ভাবিনি’

দিনাজপুর: ২০১৯ সালে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহে সারা দেশে শ্রেষ্ঠ বিদ্যোৎসাহী সমাজকর্মী হিসেবে নির্বাচিত দিনাজপুরের ট্রাকচালক ফারুক হোসেন এবার প্রধানমন্ত্রী পদক পেয়েছেন।

বুধবার (১৩ মার্চ) দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে প্রাথমিক শিক্ষা পদক গ্রহণ করেন ফারুক হোসেন। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তার হাতে পদক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পদকপ্রাপ্ত ফারুক হোসেনের বাড়ি দিনাজপুরের সদর উপজেলার কাশিমপুর গ্রামে। তার জন্ম ১৯৮৮ সালের ১২ মার্চ। সদর উপজেলার চেরাডাঙ্গী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০০২ সালে অষ্টম শ্রেণি পাস করার পর অভাব-অনটনের জন্য আর লেখাপড়ার সুযোগ হয়নি। এরপর শহরের পুলহাট বিএডিসির বীজ প্রক্রিয়াজাত কেন্দ্রে বস্তা টানার কাজ শুরু করেন। ২০০৭ সালে মাস্টাররোলে বিএডিসির ট্রাক সহকারী হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। ২০১৭ সালে বিএডিসির রংপুর যুগ্ম-পরিচালকের দপ্তরে ট্রাক সহকারী হিসেবে স্থায়ী নিয়োগ পান ফারুক হোসেন।

শিক্ষানুরাগী ফারুক নিজে বিভিন্ন স্কুলে ও পাড়ায়-মহল্লায় গিয়ে হতদরিদ্র ও ঝরে পড়া শিশুদের খুঁজে বের করেন। তাদের লেখাপড়া যাতে বিঘ্নিত না হয় সেজন্য বেতনের ২৫ শতাংশ দিয়ে শিক্ষা উপকরণ কিনে বিতরণ করেন। পাশাপাশি তিনি ও তার স্ত্রী সাবেরা আক্তার মিলে নিজ বাড়ির আঙিনায় গড়ে তুলেছেন বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্র। যার স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা পদক-২০১৯। ফারুক হোসেন সংসার জীবনে এক সন্তানের জনক।

প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক গ্রহণ করে ফারুক হোসেন বলেন, আমার বাবা অর্থের জোগান দিতে না পারায় লেখাপড়া করতে পারিনি বেশি। তখনই পণ করেছিলাম আমার মতো কারও যাতে অর্থের অভাবে লেখাপড়া বন্ধ না হয় সেজন্য উপার্জনের একটা অংশ ব্যয় করব শিক্ষাবঞ্চিত শিশুদের জন্য। ২০০৭ সাল থেকে এই কাজটি করে চলেছি। কোনো স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য নয়, হতদরিদ্র শিশুরা যাতে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত না হয়- সেই চিন্তা থেকেই এই কাজ করছি আমি।

ফারুক হোসেন আরো বলেন, আমি কল্পনা করতে পারিনি এমন কাজ করলে রাষ্ট্র স্বীকৃতি দেয়। স্বপ্নেও ভাবিনি আমি ট্রাকচালক হয়ে প্রধানমন্ত্রী পদক পাব। কিছু চাওয়া-পাওয়ার আশায় এই কাজ করিনি আমি। এই স্বীকৃতি আমাকে আরও উৎসাহিত করবে। যতদিন শিক্ষা থেকে শিশুদের ঝরে পড়া বন্ধ হবে না ততদিন আমার এই কাজ অব্যাহত থাকবে।

সোনালীনিউজ/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!