• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

‘ড. কামালকে জানিয়েই শপথ নিয়েছি’


নিজস্ব প্রতিবেদক মার্চ ৭, ২০১৯, ০৪:৩৭ পিএম
‘ড. কামালকে জানিয়েই শপথ নিয়েছি’

ঢাকা: দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে একাদশ জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে শপথ নিয়েছেন গণফোরাম নেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর।

বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) বেলা ১১টার পর সংসদ সচিবালয়ে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে শপথ নেন তিনি।

শপথ নিয়ে বেরিয়ে এসে মৌলভীবাজার-২ আসন থেকে নির্বাচিত এই সংসদ সদস্য বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনের জ্ঞাতসারেই (নলেজেই) শপথ নিয়েছি। তিনি ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচিত বাকি সাত সদস্যকেও শপথ নেয়ার আহ্বান জানান।

দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে শপথ নেয়ায় গণফোরাম তাকে বহিষ্কার করতে পারে-এ বিষয়ে সুলতান মনসুরকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সবার সব কথার উত্তর আমি দেব না। আমি ঐক্যফ্রন্টের প্রতিনিধি। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রতিনিধি হিসেবে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি। একটি কথা বলতে পারি— জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতার (ড. কামাল) নলেজেই আমি শপথ নিয়েছি।

গণফোরাম বহিষ্কার করলে কী করবেন, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, দল তার সিদ্ধান্ত নেবে, আমি আমার ভূমিকা পালন করব। দল হিসেবে তারা সিদ্ধান্ত নিতেই পারে। তাদের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় থাকুন। আর আমার ভূমিকার অপেক্ষায় থাকেন।

তিনি বলেন, আমি এর আগেও সংসদ সদস্য ছিলাম। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ জেনে-বুঝেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের গণশুনানির বিষয়ে এ নেতা বলেন, আমরা আটজন জয়ী হয়েছি। বাকি ২৯২ আসনে তারা একটি মিছিলও বের করতে পারেনি। তারা জনগণকে সম্পৃক্ত করতে পারলে হয়তো আরও অনেকেই জয়ী হতে পারত।

আওয়ামী লীগের সাবেক এ সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, বহু প্রতিকূলতা সত্ত্বেও মৌলভীবাজার-২ আসনের জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে। আমার প্রতি তাদের এই অকুণ্ঠ সমর্থনকে শ্রদ্ধা জানাতে শপথ নিয়েছি। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতাকে জানিয়েই শপথ নিয়েছি।

তিনি বলেন, একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে সংসদে অংশ নেয়া হলো আমার প্রথম ও প্রধান কাজ। আমি আমার সংসদীয় এলাকা এবং জনগণের কথা বলতে শপথ নিয়েছি।

ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের শপথ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে সাবেক এই ডাকসুর ভিপি বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচিত বাকি সাত জনপ্রতিনিধিকেও শপথ নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

১৮ বছর পর সংসদে ফিরছেন জানিয়ে সাবেক এই ছাত্রনেতা বলেন, আজ ৭ মার্চ, ঐতিহাসিক দিন। দিনটি ঐতিহাসিক হয়েই থাকবে। সর্বশেষ ১৯৯৬ সালে সংসদ সদস্য ছিলাম আমি। ১৮ বছর পর আবারও সংসদে আসছি।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরামে নাম লিখিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে মৌলভীবাজার-২ আসনে ভোট করে জয়ী হন সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ। আর দীর্ঘদিন ধরে লন্ডন প্রবাসী মোকাব্বির খান গণফোরামের দলীয় প্রতীক ‘উদীয়মান সূর্য’ নিয়ে সিলেট-২ আসন থেকে জয়ী হন। ওই আসনে ধানের শীষের প্রার্থী না থাকায় বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমর্থন পেয়েছিলেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) গণফোরামের কেন্দ্রীয় নেতা মোকাব্বির খানের শপথ নেয়ার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে তিনি নেননি। তবে শপথ নিলেন সুলতান মনসুর।

৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা জয়ী হলেও জোটের সিদ্ধান্ত না থাকায় এতদিন শপথ নেননি। আজ দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে শপথ নিলেন সুলতান মনসুর।

এদিকে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে সুলতান মনসুর শপথ নেয়ায় তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শরিক গণফোরাম। দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে তাকে বহিষ্কার করার কথা ভাবছে প্রবীণ আইনজীবী ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন দলটি।

সুলতান মনসুরের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিয়ে শিগগিরই স্পিকারের কাছে চিঠি দেবে গণফোরাম। সেই চিঠি মোতাবেক ব্যবস্থা নেবেন স্পিকার।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও গণফোরাম একাদশ নির্বাচনের ফল বর্জন করে শপথ না নেয়ার সিদ্ধান্তে অনড় থাকে। ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচিত অপর পাঁচ সদস্য শপথ না নিলেও একাদশ সংসদে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন সুলতান মনসুর ও মোকাব্বির। পরে অবশ্য শেষ মুহূর্তে ভোল পাল্টান মোকাব্বির। দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে শপথগ্রহণ থেকে বিরত থাকেন তিনি।

সোনালীনিউজ/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!