• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ডা. সাবরিনার মোবাইলে মিললো চাঞ্চল্যকর তথ্য


নিজস্ব প্রতিবেদক জুলাই ১৪, ২০২০, ০৩:৪০ পিএম
ডা. সাবরিনার মোবাইলে মিললো চাঞ্চল্যকর তথ্য

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: জেকেজি হেলথ কেয়ারের চেয়ারম্যান দায়িত্ব পালনের বিষয়টি সরকারি এ চিকিৎসক সবসময় অস্বীকার করলেও তার মোবাইল ফোনে পাওয়া গেছে অসংখ্য এসএমএস, যেখানে তিনি নিজেকে জেকেজির চেয়ারম্যান হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। করোনাভাইরাস পরীক্ষা নিয়ে জেকেজি হেলথকেয়ারের প্রতারণা ও জালিয়াতি মামলার তদন্তভার পেয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। 

এ মামলায় গ্রেপ্তার জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের চিকিৎসক সাবরিনা শারমিন হুসাইন ওরফে সাবরিনা আরিফ চৌধুরীকে ডিবি কার্যালয়ে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন তদন্ত কর্মকর্তারা। 

আরো পড়ুন : প্রতারণার দায় এড়াতে সাবরিনার দৌড়ঝাঁপ

ডা. সাবরিনা চৌধুরীর মোবাইল ফোন চেক করে এ ধরনের অনেক মেসেজ পেয়েছে পুলিশ। প্রতিটি মেসেজের শুরুতেই সাবরিনা নিজেকে জেকেজির চেয়ারম্যান পরিচয় দেন বলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদকারী ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) হারুন অর রশিদ জানিয়েছেন।

তিনি জানান, ‘... আমি জেকেজির চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা বলছি। আমার প্রতিনিধি পাঠাচ্ছি। করোনা নমুনা সংগ্রহ করতে সব ধরনের সহযোগিতা চাই।’ ডা. সাবরিনা চৌধুরীর মোবাইল ফোন চেক করে এ ধরনের অনেক মেসেজ পেয়েছে পুলিশ।

তিনি আরও জানান, সম্প্রতি জেকেজির ব্যাপারে বিশদ তদন্ত করতে গিয়েই উঠে আসে ডা. সাবরিনা ও তাঁর প্রতারক স্বামী আরিফ চৌধুরীর নাম। এরপর গত রবিবার ডা. সাবরিনাকে হৃদেরাগ হাসপাতাল থেকে তাঁর কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পর তেজগাঁও থানার প্রতারণা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলাটির তদন্তভার ডিবিকে হস্তান্তর করা হয়েছে। তিন দিনের রিমান্ডে ডা. সাবরিনাকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে ডা. সাবরিনা এরই মধ্যেই মুখ খুলতে শুরু করেছেন। জেকেজির নমুনা সংগ্রহের অনুমতি পেতে কারা কারা তাকে সহযোগিতা করেছে তাদের নাম বলেছেন। সরকার সমর্থক একটি চিকিৎসক সংগঠনের নেতার নামও তিনি বলেছেন। কিভাবে প্রতারণার ফাঁদ পেতে করোনা নমুনা পরীক্ষা ছাড়াই ভুয়া সনদ দিতেন সে বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন।

সূত্র জানায়, জেকেজির কোনো ট্রেড লাইসেন্স নেই। এরপরও কিভাবে প্রতিষ্ঠানটি করোনা নমুনা সংগ্রহের অনুমতি পেল তার তদন্ত চলছে। সাবরিনার মোবাইল ফোন চেক করে সাতটি মেসেজ পাওয়া গেছে। প্রতিটি মেসেজে সাবরিনা বিভিন্ন মানুষকে ফোন করে কখনো জেকেজির চেয়ারম্যান পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করেছেন। তাঁকে সহযোগিতাকারী অনেক প্রভাবশালীর নাম জানা গেছে।

এর আগে, সরকারি চাকরির বিধিমালা লঙ্ঘন করে জেকেজির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন প্রসঙ্গে হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের রেজিস্টার চিকিৎসক ডা. সাবরিনা দাবি করেছিলেন, অফিশিয়ালি তিনি জেকেজির চেয়ারম্যান নন। জেকেজির কর্মীরা তাকে মুখে মুখেই চেয়ারম্যান বলতেন। একই দাবি করেন তিনি পুলিশের কাছে। তদন্ত কর্মকর্তারা এরই মধ্যে প্রমাণ পেয়েছেন, জেকেজির চেয়ারম্যান হিসেবে সব যোগাযোগ রক্ষা করতেন সাবরিনাই। সরকারের কাছ থেতে বিনা মূল্যে নমুনা সংগ্রহের অনুমতি নিয়ে বুকিং বিডি ও হেলথকেয়ার নামে দুটি সাইটের মাধ্যমে টাকা নেওয়া এবং নমুনা পরীক্ষা ছাড়াই ভুয়া সনদ প্রদান করেছে জেকেজি হেলথকেয়ার নামের প্রতিষ্ঠানটি। 

ওই প্রতিষ্ঠানের সিইও স্বামী আরিফ চৌধুরীর সহায়তায় প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে করোনা রোগীর নমুনা সংগ্রহ করে ১৫ হাজার ৪৬০টি ভুয়া মেডিক্যাল রিপোর্ট প্রস্তত ও সরবরাহ করে আট কোটি টাকা হাতিয়ে নেন ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধরী। জেকেজির বিরুদ্ধে মোট চারটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি প্রতারণার এবং আরেকটি থানায় হামলা, ভাঙচুর ও পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে করা হয়েছে। করোনাভাইরাস পরীক্ষা নিয়ে জালিয়াতিতে সাবরিনার স্বামী আরিফুলও বর্তমানে কারাগারে।

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Wordbridge School
Link copied!