• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস আজ


নিজস্ব প্রতিবেদক ডিসেম্বর ১২, ২০১৯, ০৯:৩৬ এএম
ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস আজ

ঢাকা: দেশে দ্বিতীয়বারে মতো পালিত হচ্ছে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস-২০১৯’। ডিজিটাল বাংলাদেশে গুজব প্রতিরোধ সরকারের এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ। নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থায় তা অনেকটা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে জনগণকে এখন ডিজিটাল জ্ঞানে দক্ষ করে তুলতে চায় সরকার। 

সে লক্ষ্যে ‘ডিজিটাল লিটারেসি সেন্টার’ স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে ‘সত্য মিথ্যা যাচাই আগে ইন্টারনেটে শেয়ার পরে’। সভা-সেমিনারের মধ্য দিয়ে সারাদেশে দিনটি উদযাপিত হবে। দিবস ঘিরে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক সেজেছে সচেতনতামূলক ব্যানার ও ফেস্টুনে। পাশাপাশি কর্মসূচি হাতে নিয়েছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগও। এ বিভাগটির প্রতিপাদ্য ‘সংযুক্তিতে উৎপাদন দেশের হবে উন্নয়ন।’

এর আগে, ২০১৭ সালের ১২ ডিসেম্বর দেশে প্রথমবারের মতো তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি দিবস পালিত হয়েছিল। গত বছর থেকে এই দিনটি ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

এ বিষয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশে আমাদের যত অর্জন, সবকিছুকে কিন্তু ঝুঁকির মুখে ফেলে দিচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি। অর্থাৎ গুজব প্রতিরোধ এখন আমাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ। এজন্য জনগণকে সচেতন করতে না পারাই এখন আমাদের প্রধান বাধা। ফলে আমরা অনলাইন সিকিউরিটি অ্যাওয়ারনেস বাড়ানোর চেষ্টা করছি। সোশ্যাল মিডিয়া সম্পর্কে সবাইকে সচেতন করতে হবে।’

ডিজিটাল লিটারেসি সেন্টার স্থাপনের উদ্যোগের কথা জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী জানান, জনগণকে ডিজিটাল জ্ঞানে দক্ষ করে তুলতে আইসিটি বিভাগে এই সেন্টার স্থাপন করা হবে। দেশের সর্বস্তরের মানুষকে এই সেন্টারের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সচেতন করা হবে। ধারণা দেওয়া হবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের ন্যূনতম জ্ঞান সম্পর্কে। প্রত্যেকের অবস্থান থেকে সাইবার সিকিউরিটি নিশ্চিত করতে পরামর্শ দেওয়া হবে। প্রশিক্ষিত করার চেষ্টা করা হবে সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট সম্পর্কে। সোর্স ছাড়া কোনো নিউজ যেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার না দেওয়া হয়, সে সম্পর্কেও মানুষকে সচেতন করা হবে। মূলত এই তিনটি বিষয়ের ওপরই জোর দেওয়া হবে।

পলক আরো বলেন, ‘২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর বাংলাদেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক ও স্মরণীয় দিন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেদিন প্রযুক্তিনির্ভর ও জ্ঞানভিত্তিক ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিলেন। ১১ বছর পর আমরা ধাপে ধাপে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরামর্শে এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা ইন্টারনেটের খরচ কমিয়েছি, ইউনিয়ন পর্যায়ে ৫ হাজার ৮৬৫টি ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করেছি। সেখানে ১৫০ ধরনের সেবা দেওয়া হচ্ছে। ২৮টি হাইটেক পার্ক স্থাপন করা হয়েছে। ৪৩ হাজার ওয়েবসাইট করা হয়েছে। রফতানি আয় ১ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা হয়েছে। গ্রাম পর্যায়ে আমরা অপটিক্যাল ফাইবার নিয়ে যাচ্ছি।  অর্থাৎ ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তব। সবার সচেতনতার মধ্য দিয়েই ডিজিটাল বাংলাদেশ আরও বহুদূর এগিয়ে যাবে।’

বিষয়টি নিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিষয়ক মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘বস্তুতপক্ষে ডিজিটাল বাংলাদেশ নিয়ে আমরা কাজ করছি। ১১ বছরে যতটুকু অগ্রগতি দৃশ্যমান হয়েছে, কোনো কৃষিভিত্তিক দেশ এতটা অগ্রগতি করতে পেরেছে বলে মনে হয় না। দেশের জনগণ এগিয়ে যাচ্ছে। সাড়ে ১৭ কোটি মানুষ এখন মোবাইল ফোন ব্যবহার করে, ১০ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। মোবাইলে প্রতিদিন সাড়ে ১১ কোটি টাকা লেনদেন হচ্ছে। এই সূচকগুলো দিয়েই বুঝা যায়, ডিজিটাল বাংলাদেশের উন্নয়ন কোন স্তরে পৌঁছেছে। ২০২১ সালকে আমরা বলেছি, এটা আমাদের প্রথম সিঁড়ি। আমাদের এখন টার্গেট ২০৪১ সাল পর্যন্ত। অর্থাৎ ডিজিটালের প্রথম স্তরটা আমরা অতিক্রম করেছি এবং দ্বিতীয় স্তরে কাজ শুরু করেছি।’

এ বিষয়ে আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম বলেন, সভা-সেমিনারে মধ্য দিয়ে সারাদেশে দিবসটি পালিত হবে। ব্যানার ফেস্টুনে সাজানো হয়েছে রাস্তাঘাট। সচেতনতা বাড়াতে ঢাকায় ঘুরছে পাঁচটি ভ্যান। এছাড়া রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, কুইজ প্রতিযোগিতা, অনলাইন প্ল্যাটফর্মে আমার দেখা ডিজিটাল বাংলাদেশের ওপর প্রেজেন্টেশন তৈরির প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ জানিয়েছে, কেন্দ্রীয়ভাবে সকাল ৭টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে দিবসটির কার্যক্রম শুরু হবে। পরে সকাল ৯টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা থেকে র‌্যালি বের হবে। বিকেল ৩টায় বসুন্ধরার ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে কনসার্ট অনুষ্ঠিত হবে।

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Wordbridge School
Link copied!