• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকার বিউটি পার্লার গুলোতে কী হচ্ছে?


সোনালীনিউজ ডেস্ক জুন ৩, ২০১৯, ০৭:৪৬ পিএম
ঢাকার বিউটি পার্লার গুলোতে কী হচ্ছে?

ঢাকা: সম্প্রতি ঢাকার বেশ কয়েকটি নামীদামী পার্লারের বিরুদ্ধে নকল, ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য ব্যবহারের অভিযোগ ওঠায় এসব প্রতিষ্ঠানের মান ও আস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সেখানকার নিয়মিত গ্রাহকরা।

বনানীর একটি পার্লারে সেবা নিতে আসা তামান্না জামান জানিয়েছেন, এতো খরচ করা সত্ত্বেও প্রতিষ্ঠানগুলোর এমন আচরণে তিনি বিস্মিত এবং উদ্বিগ্ন।

"আমরা তো এসব পার্লারে যাই বেটার লুক বা স্কিন ইমপ্রুভ করতে একটা ভালো সার্ভিস পাওয়ার জন্য। হাজার হাজার মহিলা তাদের সার্ভিস নিতে যাচ্ছে, এতো টাকা খরচ করছে। তারপরও যদি তারা উল্টাপাল্টা মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য রাখে, আর কি বলবো! র‍্যাবের উচিত এগুলো নিয়মিত ফলো-আপ করা," বলেন তিনি।

অভিযোগের তালিকায় দেশের শীর্ষ বিউটি পার্লারগুলোর নাম উঠে আসায়, সেইসব প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিদের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বনানীর বাসিন্দা কাজী তাসকিন হুদা।

এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আরও কঠোর হওয়া প্রয়োজন বলেও তিনি মনে করেন।

"ব্র্যান্ডের পার্লারগুলোতে মানুষ তার আস্থা নিয়ে যায় যে, এখানে হয়তো সে তার বেস্ট সার্ভিসটা পাবে। কিন্তু সেখানে খারাপ প্রোডাক্ট ব্যবহার করছে। তার মানে এখানকার ব্যবসায়ীরা সৎ নন। আসলে প্রতিটি ক্ষেত্রেই স্বচ্ছতার প্রয়োজন আছে।"

যা বলল পারসোনা
গত কয়েকদিন ঢাকাসহ দেশের কয়েকটি জেলা শহরের বিউটি পার্লারে অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত।

সেখানে গিয়ে তারা দেখতে পান যে ৮০ শতাংশ থেকে শতভাগ পণ্য হয় নকল, ভেজাল না হলে মেয়াদোত্তীর্ণ। এছাড়া বিদেশি পণ্যের মোড়কে চক বাজারের নকল প্রসাধনী পাওয়ার কথাও জানিয়েছেন অভিযান পরিচালনাকারীরা।

যেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে তাদের মধ্যে একটি হল পারসোনা। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুজহাত খান দিশা এসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করছেন।

তিনি বলেন, "পণ্যে আমদানিকারকের স্টিকার না দেখলেই ম্যাজিস্ট্রেট সেটাকে ভেজাল বলছেন। আমরা লাগেজের মাধ্যমেও বাইরে থেকে অনেক পণ্য আনাই, যেটাতে এই স্টিকার নেই। কিন্তু পণ্য ঠিকই আছে। এতদিন ধরে এভাবেই চলে আসছে। এটা তো হুট করে বদলাবে না। "

"আমাদেরকে যদি কিছু গাইডলাইন দিয়ে দেয়া হয়, তাহলে আমাদেরও সেই মোতাবেক চলা সহজ হবে। তাছাড়া মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্যের যে অভিযোগ উঠেছে, সেটা কোনভাবেই সম্ভব না। আমরা বছরে ১০ লাখ ক্লায়েন্টদের সেবা দিচ্ছি, আমাদের প্রোডাক্ট তো থাকেই না, মেয়াদোত্তীর্ণ কিভাবে হবে! " বলেছেন নুজহাত খান দিশা।

ভেজাল প্রসাধনীর স্বাস্থ্যঝুঁকি

মানুষ যদি ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ প্রসাধনী ব্যবহার করে তাহলে ত্বকে স্বল্পমেয়াদী থেকে শুরু করে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব পড়তে পারে বলে জানিয়েছেন চর্ম বিশেষজ্ঞ ফেরদৌস রহমান মিলি।

তিনি বলেন, "এরকমও পেয়েছি যে বিয়ের স্টেজ থেকে বিয়ের পোশাকেই আমাদের কাছে চলে এসেছে, পার্লার থেকে সেজেছিল তারপর তার অ্যালার্জিক রিয়্যাকশন হচ্ছে, ভয়াবহ চুলকাচ্ছে, মুখ লাল হয়ে ফুল গেছে। এর থেকে আরো ঝুঁকিপূর্ণ কিছুও হতে পারে, এমনকি ক্যান্সারও হতে পারে।"

"আজকাল উঠতি বয়সী মেয়েরা গাঢ় পিগমেন্টেশন নিয়ে আসে। অনেকের চেহারায় বয়সের আগেই বলিরেখা পড়ে যায়। আমরা চেষ্টা করি তাদের ট্রিটমেন্ট করার। তবে অনেক ক্ষেত্রেই চেহারা আগের মতো আর হয় না। আর এসবের পেছনে খরচ করতে হয় অনেক বেশি। তাই ভেজাল প্রসাধনী কোন অবস্থাতেই ব্যবহার করা যাবে না।"

ঈদ বা যেকোনো উৎসবের আগেই নারীদের মধ্যে পার্লারে যাওয়ার হিড়িক পড়ে যায়। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়।

যেসব পার্লারের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে সেখানেও দীর্ঘ লাইন ধরে সেবা নিতে দেখা যায় গ্রাহকদের। এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়মিত তৎপরতার পাশাপাশি নাগরিক সচেতনতার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

সোনালীনিউজ/এইচএন

Wordbridge School
Link copied!