ঢাকা: রাজধানী ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়ন ও ট্রাফিক শৃঙ্খলা ফেরাতে আবারও শুরু হয়েছে ‘ট্রাফিক শৃঙ্খলা কার্যক্রম’। মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) থেকে ফের এই কার্যক্রম চলবে।
এ উপলক্ষে মডেল করিডোর হিসেবে ঘোষিত ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ আটটি পয়েন্টে অটোম্যাটিক ও রিমোট কন্ট্রোল সিগন্যাল বাতি চালু করা হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন স্কুল-কলেজের সামনে ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীরাও ক্লাস শুরু ও শেষে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করবে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে।
এ ছাড়া ট্রাফিক শৃঙ্খলা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে আরও ১১ ধরনের বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত মাঠে থাকবে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
গত বছরের জুলাইয়ে বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হলে ফুঁসে ওঠে রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরাই সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে কার্যক্রম শুরু করে। পুলিশ কর্মকর্তারা এমন কার্যক্রমকে সাধুবাদ জানান। পরে অবশ্য ট্রাফিক বিভাগ ট্রাফিক সচেতনতা কার্যক্রম হাতে নেয়। বিভিন্ন সময়ে ট্রাফিক সচেতনতা কার্যক্রমে স্কাউটস, বিএনসিসি শিক্ষার্থীরা অংশ নিলেও এবারই এ কার্যক্রমে সরাসরি শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে যুক্ত করা হচ্ছে।
ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তারা বলেছেন, এর আগে গত বছরের আগস্টে ট্রাফিক শৃঙ্খলা ফেরাতে ট্রাফিক সপ্তাহ পালন, সেপ্টেম্বরে মাসব্যাপী ট্রাফিক সচেতনতা মাস পালন এবং অক্টোবরে ট্রাফিক শৃঙ্খলা সপ্তাহ পালন করা হয়। এসব কর্মসূচিতে ট্রাফিক আইনের কঠোর বাস্তবায়ন ও সচেতনতা বৃদ্ধির ফলে রাজধানীতে ট্রাফিক শৃঙ্খলার উন্নতি হচ্ছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, ট্রাফিক আইন না মানার সংস্কৃতি এবং ট্রাফিক আইন বাস্তবায়নে অপর্যাপ্ত ট্রাফিক ইঞ্জিনিয়ারিং সুবিধা ও বিভিন্ন সমস্যার কারণে দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত সমস্যার রাতারাতি সমাধান সম্ভব হবে না। তবে ট্রাফিক আইনের কঠোর প্রয়োগ এবং জনসচেতনতার ফলে ঢাকা শহরে ট্রাফিক শৃঙ্খলার উন্নতি এখন অনেকটাই দৃশ্যমান। এরই ধারাবাহিকতায় আজ থেকে ১৫ দিনের জন্য ট্রাফিক শৃঙ্খলা কার্যক্রম শুরু হচ্ছে।
ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ জানিয়েছে, চলতি এই কার্যক্রমে রাজধানীবাসীকে ট্রাফিক আইন মেনে চলতে উদ্বুদ্ধকরণে এবং ট্রাফিক শৃঙ্খলার উন্নতির লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ট্রাফিক শৃঙ্খলা কার্যক্রমের সময় সচেতনতামূলক লিফলেট, পল্গ্যাকার্ড, ফেস্টুন, ট্রাফিক সচেতনতা-সংক্রান্ত গাইড বই বিতরণ করা হবে।
বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার সম্মানিত নাগরিকদের নিয়ে ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ ইন্টারসেকশনগুলোতে ট্রাফিক সচেতনতামূলক কার্যক্রম অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। এসব কার্যক্রমে ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে রোভার স্কাউট, রেড ক্রিসেন্ট, গার্ল গাইডস ও বিএনসিসি সদস্যরাও অংশ নেবে। ট্রাফিক শৃঙ্খলা কার্যক্রমে ঢাকা সিটি করপোরেশন উত্তর ও দক্ষিণের সঙ্গে সমন্বয় করে অবশিষ্ট জেব্রা ক্রসিং ও রোড মার্কিংগুলো দৃশ্যমান করারও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ জানিয়েছে, মূল সড়কের পাশে অবস্থিত স্কুল ও কলেজের ক্লাস শুরু এবং ছুটির সময়ে ওই এলাকায় ট্রাফিক পুলিশ ও স্কুল-কলেজের স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন থাকবে। ওইসব অঞ্চলে যথাযথ ট্রাফিক সাইন স্থাপন করা হবে। এর বাইরে ট্রাফিক পুলিশের নিয়মিত কাজের মধ্যেই হাইড্রোলিক হর্ন, দ্রুতগতির যানবাহন, বেপরোয়া গতি, হুটার, বিকন লাইট, উল্টো পথে চলাচল এবং মোটরসাইকেল আরোহীদের হেলমেট পরাসহ সব ধরনের ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে বিশেষ ট্রাফিক অভিযান এবং ভ্রাম্যমাণ আদালত জোরদার থাকবে। ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ ২৯টি পয়েন্টে চেকপোস্ট কার্যক্রমের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ ৩০টি ফুট ওভারব্রিজ ব্যবহারে পথচারীদের উদ্বুদ্ধকরণে পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে।
সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন
আপনার মতামত লিখুন :