• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

তদন্তে গিয়ে শিক্ষা কর্মকর্তাদের কাণ্ড!


কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি ডিসেম্বর ৮, ২০১৯, ০২:২৬ পিএম
তদন্তে গিয়ে শিক্ষা কর্মকর্তাদের কাণ্ড!

কুড়িগ্রাম: দুর্নীতির তদন্ত করতে গিয়ে অভিযুক্ত এক প্রধান শিক্ষকের বাসায় ভূরিভোজ করার অভিযোগ উঠেছে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। এঘটনায় উপজেলা জুড়ে শুরু হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।

তবে উপজেলার দক্ষিণ রাধাবল্লভ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এমদাদুল হক বলেন, স্যাররা স্কুলে এসেছিলেন তদন্ত করার জন্য। পরে আমার বাসায় চা-কফির দাওয়াত দিয়েছিলাম।

এ বিষয়ে জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধের সভাপতি একেএম সামিউল হক নান্টু বলেন, তদন্ত করতে গিয়ে কোনো কর্মকর্তা দাওয়াত খেতে পারে না। এটা অনুচিত। কেননা এতে করে দুর্নীতি করতে উৎসাহ দেয়া হয়। যে কর্মকর্তা এই কাজ করেছেন তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত বলে তিনি মন্তব্য করেন।

এ অভিযোগের ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবু সালেহ বলেন, ইউএনও স্যারের নির্দেশে আমরা ওই স্কুলে গিয়েছিলাম দেখার জন্য। তবে ভূরিভোজের কথাটি তিনি এড়িয়ে যান।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এ ডব্লিউ এম রায়হান শাহ বলেন, ওই বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের পর তা দেখার জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তবে ভূরিভোজের বিষয়টি আমার জানা নেই। বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখবো।

জানা গেছে, উপজেলার দক্ষিণ রাধাবল্লভ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ অর্থবছরে মোট বরাদ্দ দেয়া হয় এক লাখ টাকা। এর মধ্যে স্লিপ গ্রান্ডে ৫০ হাজার, রুটিন মেইনটেইন্যান্সে ৪০ হাজার ও প্রাক প্রাথমিকে ১০ হাজার টাকা। চলতি বছরের জুন মাসে বরাদ্দের টাকা তোলা হলেও ভুয়া বিল ভাউচার তৈরি ও কৌশল অবলম্বন করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এমদাদুল হকের বিরুদ্ধে বাকি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ ওঠে।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, একটি সাধারণ দেয়াল ঘড়ির ভুয়া বিল দেখিয়ে মূল্য দেখানো হয়েছে সাড়ে ৮ হাজার টাকা। এছাড়াও পুরাতন বুক শেলফ ও ডিজিটাল হাজিরা মেশিন ক্রয় দেখান বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। এই সংক্রান্ত দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে উপজেলা প্রশাসন।

এরই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও সহকারী শিক্ষা অফিসার ওই বিদ্যালয় পরিদর্শনে যান। তদন্তের নামে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের বাসায় ভূরিভোজ করেন বলে অভিযোগ উঠেছে তদন্তকারীদের বিরুদ্ধে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সহকারী শিক্ষক জানান, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশের পর ১ ডিসেম্বর ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আরও ৪টি নতুন দেয়াল ঘড়ি এনে স্কুলে লাগিয়েছেন।

তারা বলেন, বৃহস্পতিবার থানা শিক্ষা অফিসার, সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার স্যারসহ আরও অনেকেই স্কুলে এসেছিলেন। পরে তারা সবাই প্রধান শিক্ষকের বাসায় দুপুরের খাবার খেয়েছেন। কর্তারা যদি অনিয়মকারীদের প্রশ্রয় দেয় তাহলে দুর্নীতি দূর হবে না বরং বাড়বে। ফলে শিক্ষার উন্নয়নে তাদের তেমন কার্যকর কোনো ভূমিকাও থাকে না।

সোনালীনিউজ/এইচএন

Wordbridge School
Link copied!