• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

তামিমের ব্যাটে চড়ে চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স


ক্রীড়া প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ৮, ২০১৯, ১০:৪৪ পিএম
তামিমের ব্যাটে চড়ে চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: সঠিক সময়ে জ্বলে উঠলেন তামিম ইকবাল। তুলে নিলেন অপরাজিত সেঞ্চুরি। অবিশ্বাস্য সেই সেঞ্চুরিতে ভর করে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ষষ্ঠ আসরের শিরোপা জিতে নিলো কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। টুর্নামেন্টের ষষ্ঠ আসরের ফাইনালে তামিম-ইমরুলদের দেয়া ২০০ রানের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৮২ রান তুলতে সমর্থ হয় ঢাকা। ১৭ রানেই এই জয়ে ২০১৫ সালের পর আবারও বিপিএল চ্যাম্পিয়ন হলো ভিক্টোরিয়ান্স।

আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ওভারে মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে ১৯৯ রানের পাহাড় গড়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। জবাবে ব্যাট করতে নেমে মোটেও ভাল করেনি ঢাকা ডায়নামাইটস। স্কোর বোর্ডে কোনও রান জমা না করেই মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের দুর্দান্ত থ্রোতে রানআউট হয়ে শূন্য হাতে সাজঘরে ফেরেন ঢাকার ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার সুনিল নারিন।

শুরুর ধাক্কা সামলে দ্বিতীয় উইকেটে রনি তালুকদারকে নিয়ে শুরুর ধাক্কা সামলে ওঠেন উপুল থারাঙ্গা। ক্রিজে সেট হওয়া মাত্রই ঘোরাতে শুরু করেন ছড়ি। একের পর এক বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারিতে সাইফ-পেরেরা-মেহেদীদের ঘাম ঝরান তারা। এতে দুরন্ত গতিতে ছোটে ডায়নামাইটসরা। তবে আচমকা থেমে যান দুর্দান্ত খেলতে থাকা থারাঙ্গা। ফেরার আগে ২৭ বলে ৪ চার ও ৩ ছক্কায় ৪৮ রানের নান্দনিক ইনিংস। থিসারা পেরেরার বলে দ্বাদশ খেলোয়াড় আবু হায়দার রনির হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। এর আগে তালুকদারের সঙ্গে গড়েন শতরানের উড়ন্ত জুটি।

পরে আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি সাকিব আল হাসান। ওয়াহাব রিয়াজের বলে তামিমকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন তিনি। সেই জের না কাটতেই এনামুল হকের অসাধারণ থ্রোতে রানআউট হয়ে ফেরেন রনি তালুকদার। এর আগে বইয়ে দেন রানের নহর। মাত্র ৩৮ বলে ৬ চার ও ৪ ছক্কায় ৬৬ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলেন তিনি।

রনি ফিরতেই পথ হারায় ঢাকা। এর রেশ না কাটতেই পেরেরার দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফেরেন আন্দ্রে রাসেল। এতে চাপে পড়ে ডায়নামাইটসরা। এর মধ্যে রিয়াজের দ্বিতীয় শিকার হয়ে কাইরন পোলার্ড ফিরলে চাপটা দ্বিগুণ হয়। এ পরিস্থিতিতে প্রতিভার বিচ্ছুরণ ঘটাতে পারেননি শুভাগত হোম।

দলীয় ১৪৩ রানে ৭ উইকেট হারানো ঢাকা ডায়নামাইটসকে আর কক্ষ পথে ফেরাতে পারেননি নুরুল হাসান নোহান, রুবেল হোসেন কিম্বা কাজী অনিক। ১৮২ রান তুলতেই নির্ধারিত ওভার শেষ হয়ে যায় ঢাকার। কুমিল্লার হয়ে পাকিস্তানি ওয়াহাব রিয়াজ ৩টি এবং মোহাম্মাদ সাইফউদ্দিন ও থিসারা পেরেরা ২টি করে উইকেট শিকার করেন। 

শুক্রবার (৮ ফেব্রুয়ারি) মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিপিএলের ষষ্ঠ আসরের ফাইনালে টস নামের ভাগ্য পরীক্ষায় উৎরে যান ঢাকা ডায়নামাইটস অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। টস জিতে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স অধিনায়ক ইমরুল কায়েসের হাতে ব্যাট তুলে দেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।

ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই মারকুটে ওপেনার এভিন লুইসকে হারিয়ে হোঁচট খায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস। রুবেল হোসেনের করা ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের পঞ্চম বলে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন এই ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যান।

তৃতীয় উইকেট জুটিতে এনামুল হক বিজয়কে সঙ্গী করে শুরুর ধাক্কা সামলে উঠেন তামিম ইকবাল। তামিম সতর্কতার সঙ্গে খেললেও বিজয় মেরে খেলতে থাকেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যের শিকার হয়েই ফিরতে হয়েছে এনামুলকে। সাকিবের বল প্যাডে লেগেছিল। কিন্তু আম্পায়ার এলবিডব্লিউ দিয়ে দিলেন! এনামুল রিভিউ নিতে চাইলে সাকিব মনে করিয়ে দিলেন রিভিউ নেওয়ার উপায় নেই! ফেরার আগে ৩০ বলে ২ চারে ২৪ রান করেন এনামুল। এর রেশ না কাটতেই ভুল বোঝাবুঝিতে রানআউটে কাটা পড়েন ফর্মে থাকা শামসুর রহমান।

এরপর ৯৯ রানে তিন উইকেট হারানো কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স একাই টেনে উপেরে উঠান তামিম ইকবাল। মাত্র ৩১ বলে তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। আর ৫০ বলেই সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন দেশ সেরা এই ওপেনার। এদিন প্রথম ফাইনালে খেলতে নেমে বিপিএলে নিজের সেরা ইনিংসটাই খেললেন। তামিমের অবিশ্বাস্য ইনিংসে ভর করেই ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে ১৯৯ রানের পাহাড় গড়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। এ জন্য মাত্র ৩টি উইকেট হারাতে হয়েছে তাদের। তামিম ১০টি চার আর ১১টি ছক্কায় মাত্র ৬১ বলে ১৪১ রান করে অপরাজিত থাকেন। অপরপ্রান্তে অপরাজিত ইমরুল কায়েস ২১ বলে ১৭ রান করেন। ঢাকার পক্ষে ১টি করে উইকেট নেন রুবেল ও সাকিব।

এই টুর্নামেন্টের আগের পাঁচ আসরের মধ্যে তিনটিতেই শিরোপা জিতেছে ঢাকা। ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্স নামে তারা জিতেছে বিপিএলের প্রথম দুই আসর-২০১২ আর ২০১৩ সালে। আর ২০১৬ সালে জিতে ঢাকা ডায়নামাইটস নামে। বাকি দুইবারের মধ্যে গতবার চ্যাম্পিয়ন হয় রংপুর রাইডার্স। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স বিপিএলের শিরোপা জিতেছে ২০১৫ সালে।

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স একাদশ: ইমরুল কায়েস (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, এভিন লুইস, এনামুল হক বিজয়, শামসুর রহমান, শহিদ আফ্রিদি, থিসারা পেরেরা, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, ওয়াহাব রিয়াজ, মেহেদি হাসান ও সঞ্জিত সাহা।  

ঢাকা ডায়নামাইটস একাদশ: সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), উপল থারাঙ্গা, রনি তালুকদার, সুনিল নারিন, কাইরন পোলার্ড, নুরুল হাসান সোহান,  রুবেল হোসেন, শুভাগত হোম, আন্দ্রে রাসেল, মাহমুদুল হাসান ও  কাজী অনিক।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআই

Wordbridge School
Link copied!