• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

তারবিহীন হেডসেট কেনার আগে


বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক মার্চ ১৯, ২০১৯, ১২:২২ পিএম
তারবিহীন হেডসেট কেনার আগে

ঢাকা : অবসর সময়ে কিংবা চলার পথে, এমনকি কর্মব্যস্ত সময়েও অনেকে গান শুনতে পছন্দ করেন। আর গান শোনার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গগুলোর একটি হলো হেডফোন। এক সময় তারযুক্ত বা ওয়্যারড হেডফোনের ব্যবহার ছিল সবচেয়ে বেশি।

কিন্তু প্রযুক্তির উৎকর্ষতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে হালের এই অনুষঙ্গেও আসছে পরিবর্তন। হেডসেট কেনার ক্ষেত্রে এখন অনেকেরই পছন্দ তারবিহীন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে এমন হেডসেটগুলো। আকর্ষণীয় ডিজাইন, সহজে ব্যবহারযোগ্য ও তারের ঝামেলা না থাকায় এখন অনেকেই বেছে নিচ্ছেন এমন হেডসেট।

তবে তারবিহীন বা ব্লুটুথ হেডসেট কেনার ক্ষেত্রে বেশ কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে।

হেডসেটের তারবিহীন প্রযুক্তি : তারবিহীন হেডসেটের কথা চিন্তা করলেই সবার আগে মাথায় চলে আসে ব্লুটুথ হেডসেটের কথা। বর্তমানে আইফোনের কয়েকটি সংস্করণের পাশাপাশি আরো একাধিক স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের কিছু ডিভাইসে হেডসেট জ্যাক নেই। ফলে এসব ডিভাইসে হেডসেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে ব্লুটুথ হেডসেটের কোনো বিকল্প নেই।

ব্লুটুথ প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো বর্তমানে সব ডিভাইস বিশেষ করে স্মার্টফোন ও ট্যাবে এ তারবিহীন এ প্রযুক্তিটি ব্যবহার করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি স্মার্ট টিভি এবং অন্যান্য স্মার্ট ডিভাইসেও এর ব্যবহার রয়েছে। প্রায় ৩২ ফিট পর্যন্ত ব্লুটুথের মাধ্যমে নির্দিষ্ট ডিভাইসের সঙ্গে যুক্ত থাকা যায়।

তবে ব্লুটুথের বাইরেও আগেকার কিছু ওয়্যারলেস হেডসেট রয়েছে যেগুলোয় আলদা ট্রান্সমিটার ব্যবহার করা হতো।

ব্লুটুথ হেডসেটে শব্দের মান : একটি ব্লুটুথ হেডসেটে শব্দের মান কতটা ভালো হবে তা নির্ভর করে কোন অডিও কোডেক ব্যবহার করা হয়েছে তার ওপর। কোডেক হলো একটি প্রোগ্রাম যা এক প্রান্তে শব্দকে এনকোড করে এবং অপর প্রান্তে ডিকোড করে।

ব্লুটুথের প্রথম দিককার সংস্করণে সাধারণত শব্দকে অতিমাত্রায় কমপ্রেস করা হতো যা শব্দের মান কমিয়ে দিত। তবে পরবর্তীতে এলো এটুডিপি বা অ্যাডভান্সড অডিও ডিস্ট্রিবিউশন প্রোফাইল। এর মাধ্যমে এসবিসি কোডেক ব্যবহার করে উচ্চমান বজায় রেখেই ব্লুটুথের মাধ্যমে শব্দ নির্দিষ্ট রিসিভার ডিভাইসে পাঠানো সম্ভব হয়েছে।

শব্দের মানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ আরো একটি কোডেক হলো অ্যাপ্ট এক্স। গত কয়েক বছর ধরে বাজারে আসা প্রায় সব অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসেই এ কোডেকটি ব্যবহার করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে অনেকটা সিডি কোয়ালিটির শব্দ হেডফোনে পাওয়া সম্ভব যার বিটরেট ৩৫২ কেবিপিএস পর্যন্ত হতে পারে।

এ ছাড়া বর্তমানে অ্যাপ্ট এক্স এইচডি উন্মুক্ত হয়েছে যা ৫৭৬ কেবিপিএস পর্যন্ত বিটরেট প্রদান করতে সক্ষম। কিছু হাই এন্ড অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসে এ কোডেকটি ব্যবহার করা হচ্ছে।

অ্যাপল ডিভাইসে অ্যাপ্ট এক্স সমর্থন করে না। এর পরিবর্তে আইফোন কিংবা আইপ্যাডে ব্যবহার করা হয় এএসি যা এসবিসির একটি উন্নত সংস্করণ।

ব্লুটুথ হেডসেটের ক্ষেত্রে আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ল্যাটেন্সি। ডিভাইস থেকে কোনো শব্দ রিলে করার পর সেটি কত সময়ে হেডসেটে গিয়ে পৌঁছাচ্ছে এবং ব্যবহারকারী শুনতে পাচ্ছে সেটিই হলো ল্যাটেন্সি। গান শোনার সময় ল্যাটেন্সি সেভাবে বোঝা না গেলেও ভিডিও দেখার সময় এটি বেশ ভালোই টের পাওয়া যায় যদি ল্যাটেন্সি বেশি থাকে। আগেকার কোডেকের তুলনায় বর্তমানে অ্যাপ্ট এক্স এইচডিতে ল্যাটেন্সি খুবই কম।

ব্লুটুথ হেডসেট কেনার আগে এ ফিচারগুলোর কথা বিবেচনায় রাখতে হবে।

ব্যাটারি লাইফ : ব্লুটুথ হেডসেটে প্রয়োজনীয় শক্তির জোগান আসে এতে থাকা রিচার্জেবল ব্যাটারি থেকে। ফলে খুব স্বাভাবিকভাবেই অন্যান্য ডিভাইসের মতো এ ডিভাইসটিও কতক্ষণ ব্যবহার করা যাবে তা নির্ভর করছে এর ব্যাটারি লাইফের ওপর। মোটামুটি ২০ থেকে ৩০ ঘণ্টা পর্যন্ত ব্যাটারি ব্যাকআপ দেবে এক্ষেত্রে এমন ডিভাইসই বেছে নেওয়া ভালো। এর বাইরে ভলিউম লেভেলও ব্যাটারির চার্জ কত দ্রুত শেষ হবে তা অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করে।

ডিজাইন ও আকার : বর্তমানে মোটামুটি তিনটি ভিন্ন ধরনের ডিজাইনের তারবিহীন বা ব্লুটথ হেডসেট বাজারে পাওয়া যায়। এর একটি হলো ওভার ইয়ার বা বড় আকৃতির হেডসেট। দ্বিতীয়ত, ইন ইয়ার এবং এর পরই রয়েছে এয়ারবাড ডিজাইনের যা অ্যাপল প্রথম উন্মুক্ত করেছিল।

ডিজাইন যেমনই হোক না কেন, কাজের ধরন কিন্তু সবগুলোর ক্ষেত্রে একই। তবে এয়ারবাডের ক্ষেত্রে কিছু সমস্যাও রয়েছে। এগুলোয় ল্যাটেন্সি সমস্যায় পড়তে হতে পারে, ভিডিও দেখার ক্ষেত্রে উপযুক্ত নয়। এ ছাড়া ব্যাটারি লাইফও খুবই কম হয়।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!