• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

তারেকের পরামর্শ নিতে লন্ডন যাচ্ছেন ফখরুল


বিশেষ প্রতিনিধি ফেব্রুয়ারি ৩, ২০১৯, ০৭:৩৪ পিএম
তারেকের পরামর্শ নিতে লন্ডন যাচ্ছেন ফখরুল

ঢাকা : আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি সিঙ্গাপুরের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের মির্জা ফখরুল জানিয়েছেন, তিনি চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যাচ্ছেন। কিন্তু মির্জা ফখরুলের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, তিনি সিঙ্গাপুর হয়ে লন্ডনে যাবেন। বিএনপির বর্তমান রাজনৈতিক সংকট, দলের নেতৃত্ব নিয়ে কোন্দল, নেতৃত্বশূন্যতা এবং দিক নির্দেশনামূলক পরামর্শের জন্য লন্ডনে তারেক রহমানের সঙ্গে মির্জা ফখরুল বৈঠক করবেন বলে সংশ্লিষ্ট একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্রমতে, গত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে তারেক রহমানের নির্দেশনা অনুযায়ী বিএনপির নেতৃত্ব দিয়েছেন মির্জা ফখরুল। নির্বাচনের বিএনপির ভরাডুবি হয়। নির্বাচনের পর দলটি এখন পর্যন্ত কোন সংঘবদ্ধ আন্দোলন করতে পারেনি। বরং দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল প্রকট আকারে ফুটে উঠেছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে, বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের ফখরুলের নেতৃত্ব না মানার মানসিকতা। দলের অধিকাংশ সিনিয়র নেতা এখন আর মির্জা ফখরুলের নেতৃত্ব মানছেন না। সে কারণে মির্জা ফখরুলের নির্দেশনা ও কর্মসূচির ব্যাপারে দলের নেতাদের সংশয় ও সন্দেহ প্রকাশ করছেন সিনিয়র নেতারা।

এর প্রেক্ষিতে মির্জা ফখরুল দলের স্থায়ী কমিটির দুই তিনজন সদস্যের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই অভিযোগ তুলেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ। কিন্তু দলের হাইকমান্ড এ ব্যাপারে এখনও কোন ব্যবস্থা নিতে পারেনি।

বিএনপি কীভাবে চলবে, কীভাবে কর্মসূচি দেয়া হবে বা বিএনপির কর্মসূচির অগ্রাধিকার কী হবে? এসব বিষয় নিয়ে বিএনপি এখনও সিদ্ধান্তহীনতায় রয়েছে। পাশাপাশি ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক, ২০ দলের ভবিষ্যৎ-এগুলো নিয়ে দলটির মধ্যে তীব্র মতবিরোধ এবং দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে। এসব প্রেক্ষাপটেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর লন্ডনে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।

মির্জা ফখরুলে ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র বলছে যে, লন্ডনে গিয়ে এসব বিষয়ে তারেক রহমানের সঙ্গে আলোচনা করে মির্জা ফখরুল দলের পূর্ণ কর্তৃত্ব চাইবেন। সেখানে যদি তাকে এ ধরনের কর্তৃত্ব না দেয়া হয়, এ পরিস্থিতিতেই যদি দল চালাতে বলা হয় সেক্ষেত্রে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এই বিদেশ সফর দীর্ঘায়িত হতে পারে। তিনি তার মেয়ের কাছে অস্ট্রেলিয়ায় চলে যেতে পারেন।

তিনি মনে করছেন যে, যেভাবে বিএনপি চলছে এভাবে দল চালিয়ে কোন লাভ নেই। এজন্য তিনটি বিকল্প প্রস্তাব নিয়ে লন্ডনে তারেক রহমানের কাছে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।

প্রস্তাবগুলো হচ্ছে- এক. বর্তমান নেতৃত্বের পরিবর্তন করে নতুন নেতৃত্বের অধীনে বিএনপিকে পরিচালিত করা। তরুণদের স্থায়ী কমিটিতে নিয়ে এসে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তৈরি করা।

দুই. যেহেতু কতগুলো স্পর্শকাতর বিষয়ে বিএনপির আন্তর্জাতিক সমর্থন মিলছে না, যেমন-জামাতের সঙ্গে সম্পর্ক, যুদ্ধাপরাধী ইস্যুতে বিএনপির অবস্থান; সেজন্য মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর চাইছেন আপাতত ২০ দলীয় জোটকে বাদ দিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতৃত্বে জোট করা এবং জামাতের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পর্ক ত্যাগ করা।

তিন. আইনী লড়াইয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তি এখন সম্ভব নয়। তাই রাজনৈতিক দরকষাকষির মাধ্যমে খালেদাকে মুক্ত করার পদক্ষেপ নিতে চান মির্জা ফখরুল।

এই তিনটি বিষয়ে তারেক রহমানের কোন সুনির্দিষ্ট পরামর্শ বা দিক নির্দেশনা এখন পর্যন্ত নেই। এ তিনটি বিষয়ে যদি তারেক এবং মির্জা ফখরুলের সমঝোতা হয়, কেবল তখনই মির্জা ফখরুল বিএনপির দায়িত্ব অব্যাহত রাখবেন। কিন্তু এ ব্যাপারে তারেকের সঙ্গে তার ঐক্যমত না হলে এখানেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের রাজনৈতিক জীবনের অবসান ঘটতে পারে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!