• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

তাহাজ্জুদ নামাজ কত রাকাআত?


সোনালীনিউজ ডেস্ক মে ১১, ২০১৯, ১১:১৪ পিএম
তাহাজ্জুদ নামাজ কত রাকাআত?

তাহাজ্জুদ শব্দটি আরবি। এর ব্যবহার পবিত্র কোরআনে আছে। তাহাজ্জুদ শব্দটি নিদ্রা যাওয়া ও জাগ্রত হওয়া এই পরস্পরবিরোধী দুই অর্থে ব্যবহৃত হয়। পবিত্র কোরআনের সূরা বনি ইসরাইলে ৭৯ নং আয়াতের অর্থ এই যে, রাতের কিছু অংশ কোরআন পাঠসহ জাগ্রত থাকুন। বিনা হিসেবে জান্নাতে যেতে যাদের বাধা থাকবে না, তাদের হলেন রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়কারী বান্দা। 

আর এটা মুমিন বান্দার জন্য মহা সফলতা। এ কারণেই ধর্মপ্রাণ মুমিন মুসলমান গভীর রাতে তাহাজ্জুদের নফল নামাজ আদায়ে নিয়োজিত হন। কিন্তু তাহাজ্জুদের জন্য কি রাকাআত নির্ধারিত আছে?

তাহাজ্জুদ নামাজ নিয়ে আমাদের মাঝে প্রায়ই মতবিরোধ দেখা যায়। বিভিন্ন মাযহাবের কারণে সবসময়ই আলোচনায় থাকে বিষয়টি। কিন্তু আমাদের প্রকৃতটি জানতে হবে, আসলে তাহাজ্জুদ নামাজ কত রাকাআত। মুমিন বান্দা তাহাজ্জুদের এ নামাজ কত রাকাআত পড়বেন? হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহার উত্তর থেকেই এ সমাধান পাওয়া যায়-

হজরত আবু সালামা ইবনে আব্দুর রহমান রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, তিনি হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে জিজ্ঞাসা করেন যে, রমজানে প্রিয় নবির নামাজ কেমন হতো? তিনি উত্তরে বলেন-

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজানে এবং রমজানের বাইরে ১১ রাকাআতের বেশি পড়তেন না।
> প্রথমে ৪ রাকাআত পড়তেন; যার সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করো না।
> তারপর আরও ৪ রাকাআত পড়তেন; যার সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা তো বলাই বাহুল্য।
> তারপর ৩ রাকাআত (বিতর) পড়তেন।’ (বুখারি, মুসলিম, নাসাঈ, আবু দাউদ, মুসনাদে আহমদ)

অন্য হাদিসে এসেছে-
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আবি কাইস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘আমি হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহুকে জিজ্ঞাসা করলাম যে, প্রিয় নবি বিতরে কত রাকাআত নামাজ পড়তেন? তিনি উত্তরে বলেন-
> চার এবং তিন।
> ছয় এবং তিন।
> আট এবং তিন।
> দশ এবং তিন। তিনি বিতরে ৭ রাকাআতের কম এবং ১৩ রাকাআতের অধিক পড়তেন না।’ (মুসনাদে আহমদ, আবু দাউদ)

হাদিসের বর্ণনা থেকে জানা যায় যে, প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিয়মিত তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করতেন, তা কখনো ৪ রাকাআত, কখনো ৬ রাকাআত, কখনো ৮ রাকাআত এবং সর্বোচ্চ ১০ রাকাআত পড়তেন। অতঃপর ৩ রাকাআত বিতর নামাজ পড়তেন।

নিয়মিত তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়কারীর জন্য আল্লাহ তাআলার কাছে কল্পনাতীত দামি পুরস্কার রয়েছে। হাদিসে এসেছে-

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, যখন প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদিনায় আগমন করেন, তখন আমি সর্বপ্রথম তাকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, হে লোকেরা! তোমরা নামাজের প্রসার করো, খাদ্য দান করো, আত্মীয়তার সম্পর্ক অটুট রাখো এবং রাতে নামাজ (তাহাজ্জুদ) আদায় করো যখন মানুষেরা ঘুমিয়ে থাকে, তাহলে নিরাপদে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ (তিরমিজি, ইবনে মাজাহ)

রাতের এ তাহাজ্জুদ নামাজ নফল ইবাদত। নফল নামাজে রাকাআত নির্ধারিত নেই। প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিয়মিত নির্ধারিত রাকাআতও আদায় করেননি। তাই যারা সক্ষম তারা যেমন আরো বেশি নফল (তাহাজ্জুদ) আদায় করতে পারবেন। তেমনি যারা দুর্বল বা অক্ষম তারা চাইলে ন্যূনতম ২ রাকাআতও আদায় করতে পারবেন।

নফল ইবাদত যে যত বেশি করবে, সে তত বেশি সাওয়াব পাবে। আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে এগিয়ে যাবে। নফল নামাজ ৪-৪ রাকাআত করে যেমন পড়া যায়, আবার ২-২ রাকাআত করেও পড়া যায়। ৪-৪ কিংবা ২-২ রাকাআত করে নফল নামাজ পড়লে কোনো সমস্যা নেই।

সোনালীনিউজ/এইচএন

Wordbridge School
Link copied!