• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

দিল্লি পুলিশ সদর দফতর ঘেরাও, রাতভর বিক্ষোভ


আন্তর্জাতিক ডেস্ক ডিসেম্বর ১৬, ২০১৯, ১২:১২ পিএম
দিল্লি পুলিশ সদর দফতর ঘেরাও, রাতভর বিক্ষোভ

ঢাকা : জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া ক্যাম্পাসে ঢুকে ছাত্র-ছাত্রীদের মারধর ও আটককৃতদের মুক্তির দাবিতে গভীর রাতে দিল্লি পুলিশের সদর দফতর ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

জানা গেছে, রোববার (১৫ ডিসেম্বর) বিকালে দক্ষিণ দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া সংলগ্ন নিউ ফ্রেন্ডস কলোনিতে নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে বিক্ষোভ হয়। এ ঘটনার পর দিল্লি পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঢুকে ছাত্রছাত্রীদের উপর চড়াও হয়।

জামিয়ার ক্যাম্পাসের মধ্যে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়। এতে বহু ছাত্রছাত্রী সেখানে পড়াশোনা করছিলেন। তাদের অনেকেই পুলিশের লাঠি ও কাঁদানে গ্যাসে আহত হন।

শুধু তাই নয়, শৌচাগারে ঢুকেও শিক্ষার্থীদের পিটিয়েছে পুলিশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীদেরও বেধড়ক লাঠিপেটা করা হয়। লাইব্রেরির বাইরের ছাত্রছাত্রীদের মাথার ওপরে হাত তুলে লাইন দিয়ে হাঁটিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বার করে দেয়া হয়।

জামিয়ার বেশ কয়েক জন ছাত্রছাত্রীকে পুলিশ আটক করে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে আটক সহপাঠীদের অবিলম্বে মুক্তির দাবিতে রাতেই কয়েকশ শিক্ষার্থী দিল্লি পুলিশের সদর দফতর ঘেরাও করেন।

মাঝরাতের কড়া ঠান্ডা উপেক্ষা করে চলতে থাকে তাদের বিক্ষোভ। পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে যেতে পারে, সেই আশঙ্কায় জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস নিয়ে তৈরি ছিল পুলিশও।

জামিয়ায় মিলিয়া ইসলামিয়া ক্যাম্পাসে হামলার ঘটনায় রোববার রাত থেকেই বিক্ষোভ শুরু হয়েছে কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, হায়দরাবাদের মৌলানা আজাদ উর্দু বিশ্ববিদ্যালয়, বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়, আইআইটি বম্বেসহ বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। আজ সোমবার দিল্লি জুড়ে ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে ছাত্র সংগঠনগুলোর একাংশ।

শুক্রবারও জামিয়া মিলিয়ার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-মিছিল করেছিলেন। তখনও পুলিশ লাঠি এবং কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে। বহু ছাত্র-ছাত্রী আহত হন।

কিন্তু রোববার বিকালে নিউ ফ্রেন্ডস কলোনি এলাকায় বিক্ষোভে তারা অংশ নেননি বলে জানিয়েছেন জামিয়ার শিক্ষক-পড়ুয়ারা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিবৃতি, ‘নিউ ফ্রেন্ডস কলোনির বিক্ষোভে জামিয়ার শিক্ষার্থীরা ছিলেন না। আশপাশের মানুষ বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।’

জামিয়ার চিফ প্রোক্টর ওয়াসিম আহমেদ খান বলেন, ‘পুলিশ গায়ের জোরে, বিনা অনুমতিতে ক্যাম্পাসে ঢুকেছে। আমাদের কর্মী, শিক্ষার্থীদের পেটানো হয়েছে। জোর করে ক্যাম্পাস ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে।’ জামিয়ার উপাচার্য নাজমা আখতার পুলিশের কাজকে নিন্দনীয় বলেছেন।

রোববার দুপুর থেকেই দক্ষিণ দিল্লির জামিয়া সংলগ্ন এলাকায় বিক্ষোভ শুরু হয়। নিউ ফ্রেন্ডস কলোনি, মাতা মন্দির রোড, মথুরা রোডে পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বাধে বিক্ষোভকারীদের। বেপরোয়া লাঠি চালায় পুলিশ। বেশ কিছু বাইক ও দিল্লি পরিবহণ নিগমের তিনটি বাস জ্বালিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা।

তবে অনেকের অভিযোগ, পুলিশ নিজেই বাসে আগুন ধরিয়েছে। আগুন নেভাতে গিয়ে আক্রান্ত হন দমকলকর্মীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ওই চত্বরে মেট্রো রেলের একাধিক স্টেশন বন্ধ করে দেয়া হয়।

এর পরই পুলিশ জামিয়া ক্যাম্পাসে চড়াও হয়। ক্যাম্পাসের গেটে বেধড়ক লাঠিপেটা করার পাশাপাশি বেশ কয়েক জনকে আটকও করা হয়। পুলিশ অবশ্য কারও পরিচয় জানায়নি।

জামিয়ায় পুলিশি তাণ্ডবের প্রতিবাদে রাতেই জেএনইউসহ একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দিল্লি পুলিশের সদর দফতর ঘেরাও করেন।

জামিয়ার অশান্তির জন্য দিল্লির বিজেপি প্রদেশ সভাপতি মনোজ তিওয়ারি আপকে দুষেছেন। যদিও আপ সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

দিল্লির এ দিনের ঘটনার পরে কংগ্রেস নেতা রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘বিরোধ করলেই এখন দেশদ্রোহী! জামিয়া এর টাটকা উদাহরণ।’

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!