• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দুই ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে গণপূর্ত অফিস ভাংচুরের অভিযোগ


নড়াইল প্রতিনিধি  জুন ২, ২০২০, ১২:০৬ পিএম
দুই ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে গণপূর্ত অফিস ভাংচুরের অভিযোগ

নড়াইল: করোনাভাইরাসের সাধারণ ছুটিতে নড়াইল গণপূর্ত বিভাগের ঠিকাদারি কাজের তালিকা ও চূক্তিপত্র না দেখানোর কারণে ওই অফিসের একটি কক্ষ ভাংচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আশরাফুজ্জামান মুকুল ও সাধারণ সম্পাদক নিলয় রায় বাঁধনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করা হয়েছে। 

এ ঘটনায় সোমবার (১ জুন) রাত ১০টার দিকে গণপূর্ত অফিসের উচ্চমান সহকারি হাবিবুর রহমান বিশ্বাস নড়াইল সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। 
জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে আশরাফুজ্জামান মুকুল ও নিলয় রায় বাঁধন গণপূর্ত অফিসকক্ষ ভাংচুরসহ সরকারি কাজে বাঁধা প্রদান, সরকারি সম্পত্তি বিনষ্টকরণ ও প্রাণনাশের হুমকিসহ ত্রাস সৃষ্টি করেছেন। 

ছাত্রলীগের সাবেক দুই নেতা সোমবার দুপুরে প্রথমে গণপূর্ত অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ নাহিদ পারভেজের কক্ষে প্রবেশ করে। তারা তালিকাভূক্ত ঠিকাদার না হওয়া সত্তেও নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের সব কাজের তালিকা ও চূক্তিপত্র তাদেরকে দেখানোর জন্য উত্তেজিত ভাবে কথা বলে। 

এক পর্যায়ে ছাত্রলীগের দুই নেতা গণপূর্ত অফিসের উচ্চমান সহকারি হাবিবুর রহমান বিশ্বাসের কক্ষে এসে করোনাভাইরাসের সাধারণ ছুটিতে যেসব কাজের চুক্তি হয়েছে, তার ফটোকপি চায়। এছাড়া তাদের কেন দরপত্র (টেন্ডার) আহবানের বিষয়ে অবগত করা হয়নি, তা জানতে চায় এবং ১০ মিনিটের মধ্যে সব কাগজপত্র দেয়ার দাবি জানান তারা। 

একপর্যায়ে অফিসের উচ্চমান সহকারি হাবিবুর রহমান বিশ্বাসকে তারা গালিগালাজ শুরু করে। এ সময় প্রথমে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নিলয় রায় বাঁধন চেয়ার তুলে হাবিবুর রহমানের মাথায় আঘাত করতে যায়। 

হাবিবুর রহমান বিশ্বাস জানান, তিনি মাথা সরিয়ে নিলে চেয়ারের আঘাতে টেবিলের কাঁচ ভেঙ্গে চুরমার হয়েছে। এছাড়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আশরাফুজ্জামান মুকুল অফিসের টেলিফোন সেট, কলমদানি ও চেয়ার ভেঙ্গে ফেলেছে এবং ফাইলপত্র ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে। এ ঘটনায় টেবিলের কাঁচের আঘাতে অফিসের উচ্চমান সহকারি হাবিবুর রহমান বিশ্বাসের একটি আঙ্গুল কেটে গেছে। 

এক পর্যায়ে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক দুই নেতা দাপ্তরিক নথিপত্র ছিনতাইয়ের চেষ্টা করলে তাতে বাঁধা দেন গণপূর্ত অফিসের উচ্চমান সহকাররি হাবিবুর রহমান। এ সময় তারা হাবিবুর রহমানের কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে বাসায় যাওয়ার পথে হাবিবুর রহমান বিশ্বাসকে মেরে ফেলার হুমকি দেয় বলে জিডিতে উল্লেখ করেছেন তিনি। 

এ ব্যাপারে নড়াইল গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ নাহিদ পারভেজ বলেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। প্রয়োজনে মামলা করা হবে। 

জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি অভিযুক্ত আশরাফুজ্জামান মুকুল বলেন, আমরা কোনো ভাংচুর করিনি। যদি কোনো ভাংচুর করি, তাহলে অফিসের সিসি টিভি দেখে প্রমাণ করা হোক। 

জেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি আশরাফুজ্জমান মুকুল ও সাধারণ সম্পাদক নিলয় রায় বাঁধনের মেয়াদউত্তীর্ণ কমিটি বাতিল করে ২০১৯ সালের ১ নভেম্বর নতুন কমিটির সভাপতি চঞ্চল শাহরিয়ার মীম ও সাধারণ সম্পাদক রকিবুজ্জামান পলাশের নাম ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। 

অবশ্য ছাত্রলীগের পদে থাকালীন আশরাফুজ্জমান মুকুল আরটিভির সাংবাদিক মোস্তফা কামালকে মারধর ও ক্যামেরা ভাংচুর করে। এছাড়া জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক বর্তমান সভাপতি অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলামকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর জখম, কেন্দ্রীয় মসজিদ সড়কে এক যুবককে অপহরণসহ বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে মুকুলের বিরুদ্ধে।  

এদিকে গণপূর্ত অফিস ভাংচুরের বিষয়ে নড়াইল সদর থানার ওসি ইলিয়াস হোসেন পিপিএম বলেন, সোমবার রাত ১০ দিকে আশরাফুজ্জামান মুকুল ও নিলয় রায় বাঁধনের বিরুদ্ধে জিডি পেয়েছি। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

সোনালীনিউজ/এফকে/এসআই

Wordbridge School
Link copied!