• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
চোর সন্দেহে

দুই রিকশা চালককে নির্মম নির্যাতন করলেন ইউপি সদস্য!


স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ময়মনসিংহ এপ্রিল ২৫, ২০১৯, ১০:০৬ এএম
দুই রিকশা চালককে নির্মম নির্যাতন করলেন ইউপি সদস্য!

ময়মনসিংহ: জেলার গফরগাঁও উপজেলায় গরু চোর সন্দেহ দুই রিকশা চালককে বেধড়ক পিটিয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক সদস্য। কিন্তু গরু চুরির মামলায় ওই দুই যুবক বর্তমানে ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগারে হাজত বাস করছেন। ঘটনাটি গত ১৩ এপ্রিল উপজেলার উস্তি ইউনিয়নের বড় গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।

 

বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে ওই মারপিটের একটি ভিডিও ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। ওই ভিডিও দেখে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ও বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।

 

মারধরের শিকার ওই দুই যুবক হলেন, উপজেলার বড় গ্রামের অটো রিকশাচালক বাদল মিয়া ও কুমিল্লার হিমেল মিয়া। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে উপজেলার উস্তি ইউপির ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবুল কাশেম তাঁদের ‘গরু চোর’ বলে মারধর করতে দেখা যায়। এদিকে বাদলের পরিবার ও স্থানীয় অনেকের দাবি, বাদল ও হিমেল গরুচোর নন। বিগত ইউপি নির্বাচনের সময় কাশেমের পক্ষ না নেওয়ায় বাদল ও হিমেলকে মারধর করেন তিনি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য কাশেম বলেন, গত ১৩ এপ্রিল ভোরে ওই দুই যুবককে গরুসহ আটক করে লোকজন। বিক্ষুব্ধ জনতা তাঁদের গণধোলাই দিয়ে আমার কাছে নিয়ে আসে। আমি যেহেতু জনপ্রতিনিধি, তাই জনগণকে শান্ত করতে সে সময় ওদের কয়েকটা চড়থাপ্পড় দিয়েছি। ভিডিওতে যা দেখা যাচ্ছে ততটা আমি করি নাই। ইউপি নির্বাচনের সময় পক্ষ না নেওয়ায় ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে বাদল ও হিমেলকে মারধর করা হয়েছে বলে যে অভিযোগ আছে সে ব্যাপারে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য বলেন, সব ভুয়া কথা।

উস্তি ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য নজরুল ইসলাম তোতা মিয়া কাশেমের মারধরের ঘটনা নিশ্চিত করে বলেন, কাশেম মেম্বার সরকারি দলের সক্রিয় কর্মী ও প্রতিবাদী।  হয়তো জনগণকে শান্ত করার জন্য ওই দুজনকে মারধর করেছেন কাশেম। তবে এতটা মারধর করা ঠিক হয়নি। আমি ভিডিওটা দেখেছি।

অন্যদিকে পিটুনির ঘটনায় বাদলের স্ত্রী রাবেয়া আক্তার আজ গফরগাঁওয়ের পাগলা থানায় মামলা করেছেন। এতে কাশেমের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা তিনজনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, তাঁর স্বামী বাদল মিয়াকে রাতে ঘুম থেকে ডেকে নিয়ে পাল্টিপাড়া রমজান শেখের বাড়ির সামনে নিয়ে যান আসামিরা। সেখানে তাঁকে দেখামাত্র গরু চোর আসছে বলে স্বামীকে ধরে রশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে গাছের ডাল দিয়ে অমানবিকভাবে মারধর করে। তাঁর  স্বামী একজন অটো রিকশাচালক, তিনি চোর নন।

এ ব্যাপারে পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়জুর রহমান বলেন, ওই দুই যুবককে মারধর করে গরু চোর হিসেবে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন আবুল কাশেম। গরু চুরির মামলায় আদালতের মাধ্যমে তাঁদের চালান করা হয়। তাঁরা বর্তমানে কারাগারে রয়েছে।

তাঁদের নামে এর আগে থানায় গরু চুরির আর কোনো মামলা পাওয়া যায়নি। মারধরের ব্যাপারে একটি অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও ওসি জানিয়েছেন।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!