• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দুই সপ্তাহ ধরে কর্মবিরতিতে, সাড়া মিলছে না কর্তৃপক্ষের


বেরোবি প্রতিনিধি মার্চ ২৪, ২০১৯, ০৫:১৬ পিএম
দুই সপ্তাহ ধরে কর্মবিরতিতে, সাড়া মিলছে না কর্তৃপক্ষের

ছবি : সোনালীনিউজ

বেরোবি : বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে টানা প্রায় সপ্তাহ ধরে কর্মবিরতি পালন করছে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।  কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটানা কর্মবিরতির ফলে কার্যত অচল হয়ে পড়লেও সাড়া মিলছে না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। বিশ্ববিদ্যালয়ের এরকম সংকটের সমাধান তো দূরের কথা অনির্দিষ্টকালের এই কর্মবিরতিতে নিজ দপ্তরেই আসেন না বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার। একই সঙ্গে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কর্মবিরতি এবং উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের অনুপস্থিতে  কার্যত অচল হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম।

কর্মকর্তাদের দাবিগুলো মেনে না নেওয়ায় এবং দাবিগুলোর ব্যাপারে কোনো আশ্বাস না পাওয়ায় ১৪তম দিনের মতো সর্বাত্মক কর্মবিরতি অব্যাহত রেখেছে কর্মকর্তারা। উপাচার্যের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) আমিনুর রহমানকে অব্যাহতি, ডেপুটি রেজিস্ট্রার গোলাম মোস্তফাকে সংস্থাপন শাখা থেকে অন্য দপ্তরে বদলিসহ ১১ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি করছেন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন। রোববার কর্মবিরতির ১৪তম দিনে সকাল ১০টা থেকে রেজিস্ট্রার দপ্তরের সামনে অবস্থান নিতে দেখা যায় কর্মকর্তাদের।

কর্মর্কতাদের দাবিগুলো হলো-পদোন্নতি কর্মকর্তাদের স্থায়ীকরণ অবিলম্বে সম্পন্ন করা, যেসব কর্মকর্তার পদোন্নতি বোর্ড হয়নি তাদের বোর্ড দ্রুত সম্পন্ন করা, যেসব কর্মকর্তার পদবি বদল করা হয়েছে তাদের স্বপদে ফিরিয়ে আনা, সরকারি নিয়মে পুলিশ ভেরিফিকেশন ফরম প্রস্তুত করা, প্রতিটি দপ্তরকে নিজস্ব কাজ বুঝিয়ে দিয়ে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ নিশ্চিত করা, প্রশাসনিক ভবনে কক্ষ বরাদ্দের নিমিত্তে যে কমিটি গঠিত হয়েছে তাতে জ্যেষ্ঠতার নীতি অবলম্বন করা, ৫৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বকেয়া বেতন পরিশোধ করা, হয়রানিমূলক বদলিকৃত কর্মকর্তাদের নিজ নিজ দফতরে পুনর্বহাল করা, রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে স্বতন্ত্রতা ও গোপনীয়তা রক্ষা করা এবং রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের অধীনস্থ কর্মকর্তার নজরদারি বন্ধ করা।

এ বিষয়ে অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমাদের সর্বাত্মক কর্মবিরতির আজ ১৪ দিন ধরে চলছে। এই চার দিনে রেজিস্ট্রার এবং উপাচার্য  মহোদয় আমাদের  যৌক্তিক দাবিগুলোর বিষয়য়ে এখন পর্যন্ত কোন  আশ^াস দেননি এমনকি কি রেজিস্ট্রার এবং উপাচার্য মহোদয় কর্মবিরতির শুরুর দিন থেকে নিজস্ব দপ্তরে পর্যন্ত আসেন না। এমতাস্থায়  আমাদের যৌক্তিক ১১ দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি অনির্দিষ্টকালের জন্য চলবে।’

এদিকে কর্মচারীদের দাবিগুলোর ব্যাপারে কোন আশ্বাস না পেয়ে ১২তম দিনের মতো কর্মবিরতি অব্যাহত রেখেছে কর্মচারী ইউনিয়ন (৪র্থ শ্রেণি)। তারা ১০ দফা দাবি আদায়ে কর্মবিরতির ১২তম দিনে রোববার সকাল ১১টা থেকে প্রশাসনিক ভবনের দক্ষিণ পাশে কর্মবিরতি পালন করছে। এর আগে রোববার সকাল ১০টায় পুরো ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে কর্মচারী ইউনিয়ন।

কর্মচারীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, আগামী সিন্ডিকেটের আগে কর্মচারীদের নীতিমালা পাশ, চলতি মাসেই ৫৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বকেয়া পরিশোধ, দ্রুত পেনশন নীতিমালা বাস্তবায়ন, সাময়িক বরখাস্তকৃত কর্মচারীদের চাকরিতে পুনর্বহাল, দূরের কর্মচারীদের জন্য গাড়ি ও আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করা, কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতিত্বে লাঞ্ছিত করার ঘটনার বিচার করা, কর্মচারী নিয়োগ কমিটিতে কর্মচারী ইউনিয়নের প্রতিনিধি রাখা ও মাস্টারোল কর্মচারীদের চাকরি স্থায়ী করা।

কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি নুর আলম বলেন, ‘আমাদের দাবিগুলো নিয়ে এখনো উপাচার্য মহোদয় কোন আশ্বাস দেননি। তাই যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে না নেয়া পযর্ন্ত আমাদের সর্বাত্মক কর্মবিরতি চলতেই থাকবে।’

সার্বিক বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কমিলমউল্লাহ ও রেজিস্ট্রার আবু হেনা মোস্তফা কামালের মুঠোফোনে একাধিকবার একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তারা ফোন রিসিভ করেননি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান বিশেষ প্রকল্পের কাজে রেজিস্ট্রার বাইরে আছেন।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!