• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দুটি দপ্তরের টানাপেড়েন, ঝুলে আছে ‘গোমা সেতু’র কাজ


নিউজ ডেস্ক সেপ্টেম্বর ৭, ২০২০, ১০:৫৫ এএম
দুটি দপ্তরের টানাপেড়েন, ঝুলে আছে ‘গোমা সেতু’র কাজ

ঢাকা : দুটি সরকারি দপ্তরের টানাপেড়েনে বরিশাল থেকে লক্ষ্মীপাশা হয়ে পটুয়াখালীর দুমকী পর্যন্ত জেলা মহাসড়কের ‘গোমা সেতু’র নির্মাণ কাজ গত প্রায় দেড় বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর এবং বিআইডব্লিউটিএ’ মধ্যে জট খুলছে না। এমনকি এবিষয়ে সড়ক ও সেতু সচিব এবং নৌ পরিবহন সচিবের মধ্যে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হলেও সরকারের নিজস্ব তহবিলের প্রায় ৭৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন ওই সেতুটির নির্মাণ কাজ কবে পুনরায় শুরু ও শেষ হবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটেনি।
 
বরিশাল-লক্ষ্মীপাশা-দুমকী মহাসড়কের ১৪তম কিলোমিটারে রাঙ্গামাটি নদীর ওপর ‘গোমা সেতু’র ডিপিপি প্রণয়নের সময় বরিশাল সড়ক বিভাগ থেকে বিআইডব্লিউটিএ’র দক্ষিণ বদ্বীপ শাখা’র কাছে নদীটি কোন শ্রেণীর তা জানতে চাওয়া হয়। সেখান থেকে সেতুর স্থানের নদীটি দ্বিতীয় শ্রেণীর অন্তভুক্ত বলে জানিয়ে নির্মাণ কাজের আগে বিআইডব্লিউটএ’র কাছ থেকে ভার্টিক্যাল ও হরাইজেন্টাল ক্লিরয়ারেন্স গ্রহণের তাগিদ দেওয়া হয়। 

এ প্রেক্ষিতে বরিশাল সড়ক বিভাগ থেকে বিআইডব্লিউটিএ’র কাছে অনাপত্তি চাওয়া হলে সেখান থেকে ২০১৫ সালের ৩ ডিসেম্বর ৭.২ মিটার ভার্টিক্যাল ক্লিয়ারেন্স ও ৩০.৪৮ মিটার হরাইজেন্টোল ক্লিয়ারেন্স রেখে প্রস্তাবিত সেতুটি নির্মাণে অনাপত্তিপত্র প্রদান করা হয়। বিআইডিব্লিটিএ’র সুপারিশ অনুযায়ী সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের সেতু নকশা সার্কেল থেকে প্রস্তাবিত গোমা সেতুর জন্য ডিটেইল ডিজাইন সম্পন্ন করার পরে দরপত্র প্রক্রিয়া সহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে কৃতকার্য প্রতিষ্ঠানের বরাবরে মূল সেত নির্মাণে ২০১৮ সালের ১৫ মে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়। 

নির্মাণ প্রতিষ্ঠান সেতুটির সমুদয় পাইল সম্পন্ন করে এবাটমেন্ট ও পিয়ারের ক্যাপ পর্যন্ত কাজ শেষ করার মধ্যে বিআইডব্লিউটিএ’র একটি প্রতিনিধি দল নির্মাণাধীন সেতু এলাকা পরিদর্শন করে। গত বছর ৯ মে আইডব্লিউটিএ’র তরফ থেকে দেয়া এক চিঠিতে গোমা সেতুর রাঙ্গামাটি নদীটি দ্বিতীয় শ্রেণীতে উন্নীত করার কথা জানিয়ে সেতুটির ভার্টিক্যাল ক্লিায়ারেন্স ১২.২০ মিটার ও হরাইজেন্টাল ক্লিয়ারেন্স ৪০ মিটার রেখে নির্মাণ কাজ করার নতুন দিক নির্শেনা প্রদান করে। এরপর থেকেই সেতুটির নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। 

বিষয়টি নিয়ে সড়ক অধিদপ্তর সহ  সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয় একাধীকবার কথা বলেছে আইডব্লিউটএ’র সাথে। সর্বশেষ গত ২২ ডিসেম্বর মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায়ও বিষয়য়টি উপস্থাপিত হয়। সেখানে বিস্তারিত আলোচনার পরে ‘যেসব সেতুর নেভিগেশন ক্লিায়ারেন্স পূর্বে নেয়া হয়েছিল এবং অধিকাংশ কাজ শেষ হয়ে গেছে, বিআইডিব্লিউটিএ’র সাথে আলোচনাক্রমে ভার্টিক্যাল ক্লিয়ারেন্স যতটুকু সম্ভব সংশোধন পূর্বক সে সকল সেতুর কাজ অবিলম্বে শুরু করতে হবে’ মর্মে সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়েছে।

এদিকে সড়ক অধিদপ্তরের ব্রীজ ম্যানেজমেন্ট উইং গত ৩০ জুন এক চিঠিতে জানায়, ‘নির্মাণাধীন গোমা সেতুটি ভিত্তিসহ পিয়ার ও এবাটমেন্ট-এর নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে বিয়ারিং সীট লেভেল পর্যন্ত সম্পন্ন হয়েছে বিধায় ভার্টিক্যাল ক্লিরয়ারেন্স (উচ্চতা) বৃদ্ধি করতে হলে নির্মিত অবকাঠামো সমূহ ভেঙে পুনঃনির্মাণ করতে হবে, যা স্ট্রাকচারের জন্য ক্ষতিকর। তাছাড়া ভার্টিক্যাল ক্লিয়ারেন্স বৃদ্ধি করলে সেতুর লোড বৃদ্ধি পাবে। যা সেতুর ইতোমধ্যে সম্পন্ন হওয়ায় ফাউন্ডেশনের জন্য অতিরিক্ত লোড হবে। ফলে গোমা সেতুর ভার্টিক্যাল ক্লিয়ারেন্স বৃদ্ধি করা কারিগরি ও বাস্তব দিক বিবেচনায় যৌক্তিক নয়’ বলেও জানিয়ে দিয়েছে ব্রীজ ম্যানেজমেন্ট উইং।

এ অবস্থায় আরো সময় বয়ে যাচ্ছে। গত মাসে সড়ক ও সেতুমন্ত্রীর বরিশাল সড়ক জোনের সাথে এক ভার্চুয়াল বৈঠকেও বিষয়টি উত্থাপিত হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের সচিব বিষয়টি নিয়ে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। ইতোমধ্যে বিআইডব্লিউটিএ’র চোরম্যানের নেতৃত্বে উচ্চ পযর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল সরেজমিনে গোমা সেতুর স্থান পরিদর্শন করে গেছেন। 

এব্যাপারে সড়ক অধিদপ্তরের বরিশাল জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সুশীল কুমার সাহা জানান, বিষয়টি নিয়ে সড়ক অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয় সব ধরনেরর প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। খুব শিঘ্রই বিষয়টি সুরাহা হবার ব্যাপারেও তিনি আশাবাদ ব্যাক্ত করেন। 
উল্লেখ্য, নির্মাণাধীন গোমা সেতুর কয়েক কিলোমিটার ভাটিতে একই নদীর ওপর অপর একটি সেতু ৭.৬২ মিটার ভার্টিক্যাল ক্লিয়ারেন্সে ইতোমধ্যে নির্মিত হয়েছে।

সোনালীনিউজ/এএস
 

Wordbridge School
Link copied!