• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

দুশ্চিন্তামুক্ত থাকার ৭ আমল


ধর্মচিন্তা ডেস্ক আগস্ট ১২, ২০২০, ০৬:৩৭ পিএম
দুশ্চিন্তামুক্ত থাকার ৭ আমল

ঢাকা: দুশ্চিন্তা ও বিপদাপদ মানুষের নিত্যদিনের সঙ্গী। এটি সব শ্রেণির মানুষকে বেষ্টিত করে রাখে। প্রতিটি মানুষ এর শিকলে বন্দি। এর সঙ্গে সন্ধি করেই জীবন নামের নৌকাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হয়। মহান আল্লাহর সাহায্য ছাড়া তার দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পাওয়ার কোনো রাস্তা নেই। আমাদের মনে হতে পারে, দুনিয়ার ভোগ-বিলাসের উপকরণ মানুষের দুশ্চিন্তা দূর করতে পারে। এটি ভুল ধারণা। বরং যাদের কাছে ধন-সম্পদ যত বেশি তার দুশ্চিন্তা ও বিপদাপদের ধরনও তত কঠিন।

মানসিক প্রশান্তি দুনিয়ার কোনো উপকরণ দিয়ে অর্জন করা যায় না। মানসিক প্রশান্তি দেওয়ার মালিক একমাত্র আল্লাহ। আজ আমরা আলোচনা করব এমন কিছু আমল নিয়ে, যার মাধ্যমে মানুষ দুশ্চিন্তামুক্ত হওয়ার জন্য মহান আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করতে পারে।

তাকওয়া অবলম্বন : মহান আল্লাহ অসীম ক্ষমতার অধিকারী। কেউ তাঁর ওপর ঈমান না আনলেও তাঁর কিছু যায় আসে না। তিনি আসমান, জমিন, গ্রহ, নক্ষত্র তথা পৃথিবীর সব কিছুর মালিক। তিনি যদি এগুলোকে আমাদের অনুকূলে রাখেন তাহলে এগুলো আমাদের উপকারে আসবে। আমাদের সব অভাব দূর হয়ে যাবে। অন্যথায় জীবনকে উপভোগ করার এ বস্তুগুলোই আমাদের কষ্টের কারণ হবে। এ জন্য আমাদের সব সময় মহান আল্লাহকে ভয় করতে হবে এবং তাঁর দেওয়া নিয়ামত তাঁর দেওয়া নির্দেশনা মোতাবেক ভোগ করতে হবে। তাহলেই এগুলো আমাদের অনুকূলে থাকবে। আমাদের জীবনটা সুখময় হয়ে উঠবে। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘আর যে কেউ আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করে আল্লাহ তার জন্য (উত্তরণের) পথ করে দেবেন, এবং তিনি তাকে তার ধারণাতীত উৎস হতে দান করবেন রিজিক। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করে তার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট। আল্লাহ তার ইচ্ছা পূরণ করবেনই; অবশ্যই আল্লাহ সব কিছুর জন্য স্থির করেছেন সুনির্দিষ্ট মাত্রা।’ (সুরা : তালাক, আয়াত : ২-৩)

নামাজের প্রতি যত্নবান হওয়া : দুশ্চিন্তা ও বিপদাপদ থেকে মুক্ত থাকার জন্য সর্বদা আল্লাহর সাহায্য প্রয়োজন। আর আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতে হয় নামাজের মাধ্যমে। এ কারণে যারা দুশ্চিন্তামুক্ত থাকতে চায়, তাদের উচিত নামাজের প্রতি যত্নবান হওয়া। রাসুল (সা.) নিজেও কোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে নামাজে দাঁড়িয়ে যেতেন। হুজাইফা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) কোনো কঠিন সমস্যার সম্মুখীন হলে নামাজ আদায় করতেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৩১৯)

তাওবা-ইস্তিগফার : পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘অতঃপর বলেছি, তোমাদের রবের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করো, নিশ্চয় তিনি মহা ক্ষমাশীল, তিনি তোমাদের জন্য প্রচুর বৃষ্টিপাত করবেন, এবং তিনি তোমাদের সমৃদ্ধ করবেন ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে। এবং তোমাদের জন্য স্থাপন করবেন উদ্যান ও প্রবাহিত করবেন নদী-নালা। (সুরা : নুহ, আয়াত : ১০-১২)। অর্থাৎ তাওবা-ইস্তিগফারের মাধ্যমে মহান আল্লাহ বান্দাকে ক্ষমা করে দেন, তার রিজিক ও সন্তান-সন্ততিতে বরকত দান করেন, যেগুলো দুনিয়ায় দুশ্চিন্তার প্রধান কারণ হয়।

দোয়া : মানুষ যখন কোনো বিপদে পড়ে, তার উচিত মহান আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দোয়ায় লিপ্ত হওয়া। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর আমার বান্দারা যখন আমার সম্বন্ধে তোমাকে জিজ্ঞাসা করে, তখন তুমি বলো, আমি তো কাছেই আছি। যখন কোনো প্রার্থনাকারী আমাকে ডাকে, তখন আমি তার ডাকে সাড়া দিই। অতএব তারাও আমার ডাকে সাড়া দিক এবং আমাতে বিশ্বাস স্থাপন করুক, যাতে তারা ঠিক পথে চলতে পারে।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৮৬)

আল্লাহর ওপর আস্থা : পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা রাখে, তিনিই তার জন্য যথেষ্ট। (সুরা : তালাক, আয়াত : ৩)

সুদিনে আল্লাহর ইবাদত : যারা সুদিনে আল্লাহর ইবাদত করে, আল্লাহ ভোলা হয় না, তাদের দুর্দিনেও মহান আল্লাহ তাদের রক্ষা করেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে লোক বিপদাপদ ও সংকটের সময় আল্লাহ তাআলার অনুগ্রহ লাভ করতে চায় সে যেন সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের সময় বেশি পরিমাণে দোয়া করে।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৩৩৮২)। আর সাধারণত মানুষ আল্লাহর ইবাদতের পরই তাঁর কাছে দোয়া করে।

অধিক দরুদ পাঠ : অধিক দরুদ পাঠের মাধ্যমে মহান আল্লাহ মানুষের দুশ্চিন্তা দূর করে দেন। আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার ওপর একবার দরুদ পাঠ করবে আল্লাহ তাআলা তার ওপর ১০ বার রহমত নাজিল করবেন, তার ১০টি গুনাহ মিটিয়ে দেওয়া হবে এবং তার জন্য ১০টি মর্যাদা উন্নীত করা হবে। (নাসায়ি, হাদিস : ১২৯৭)

সোনালীনিউজ/এইচএন

Wordbridge School
Link copied!