• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
বিপদের মধ্যেও জ্বলেছে ক্ষীণ আশার আলো

দেশ থেকে বিদায় নিচ্ছে করোনা!


নিজস্ব প্রতিবেদক আগস্ট ১২, ২০২০, ১২:২৪ এএম
দেশ থেকে বিদায় নিচ্ছে করোনা!

ঢাকা : সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এবং আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) করা এক জরিপে দেখা গেছে, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকার ৯ শতাংশ মানুষই করোনায় আক্রান্ত। এদের মধ্যে আবার ৭৮ শতাংশই উপসর্গহীন।

এই অবস্থাটাকে একদিকে যেমন বিপজ্জনক ভাবা হচ্ছে, অন্যদিকে ক্ষীণ একটা আশার আলোও দেখা যাচ্ছে। কারণ উপসর্গহীন করোনা রোগী এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা বাড়িয়ে দেয়। এটা অবশ্যই ভয়ের কারণ। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি এলাকায় চালানো গবেষণায় দেখা গেছে, উপসর্গহীন করোনা রোগীর আধিক্য মানে করোনা দুর্বল হয়ে পড়ার লক্ষণ। একদল বিজ্ঞানী বলছেন, এভাবে উপসর্গহীন রোগী বৃদ্ধির মাধ্যমে করোনা আস্তে আস্তে দুর্বল হয়ে বিদায় নেবে।

প্রসঙ্গত যে, গত ১৮ এপ্রিল থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত রাজধানীর দুই সিটি কর্পোরেশনে জরিপ চালায় সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এবং আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি)। এতে সহযোগিতা করে ইউএসএআইডি এবং বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন।

দুই সিটির ৩ হাজার ২৭৭ পরিবারের ওপর এ জরিপ চলে। এর মধ্যে ২১১ জন ল²ণযুক্ত ব্যক্তি পাওয়া যায়। এসব ল²ণযুক্ত পরিবারের মধ্যে থেকে ৪৩৫ জন উপসর্গহীন ব্যক্তি শনাক্ত হন। এর মধ্যে ২০১ জনের পরীক্ষা করা হয়। আর উপসর্গহীন পরিবারের মধ্যে থেকে ৮২৭ জন উপসর্গহীন ব্যক্তি শনাক্ত হন। তাঁদের মধ্যে থেকে ৫৩৮ জনের পরীক্ষা করা হয়। এ জরিপে ঢাকার ছয়টি বস্তিও অন্তর্ভুক্ত ছিল। এখানে পরিবারের সংখ্যা ছিল ৭২০।

জরিপে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৪০–ঊর্ধ্ব বয়সীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পজিটিভ ব্যক্তি শনাক্ত হয়। এ সংখ্যা ছিল ১৩ শতাংশ। আর ১৫ থেকে ১৯ বয়সী মধ্যে কোভিড-১৯–এর উপস্থিতি দেখা গেছে ১২ শতাংশ। ১০ বছরের কম বয়সী শিশুদের ৮ শতাংশের মধ্যে কোভিড-১৯–এর উপস্থিতি পাওয়া গেছে।

জরিপে পরিবারগুলোকে পরীক্ষার মাধ্যমে ল²ণ বা উপসর্গযুক্ত এবং উপসর্গহীন- এ দুভাবে ভাগ করা হয়েছে। জরিপের দিন বা আগের সাত দিনের মধ্যে কোনো পরিবারের কোনো সদস্যের মধ্যে যদি কোভিড-১৯–এর চারটি উপসর্গের একটি চিহ্নিত হয়েছে, তবে সেই পরিবারকে ‘লক্ষণযুক্ত’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। আর জরিপের দিন বা এর আগের সাত দিনের মধ্যে যদি কোনো পরিবারের কোনো সদস্যের মধ্যে কোভিড-১৯–এর কোনো ল²ণ না পাওয়া গেলে সেই পরিবারকে লক্ষণ বা উপসর্গহীন বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। উপসর্গযুক্ত ও উপসর্গহীন উভয় পরিবারের সদস্যদের পরীক্ষা করা হয়েছে।

উপসর্গযুক্ত ব্যক্তিদের ৫৩ শতাংশের মধ্যে জ্বর দেখা গেছে। ৩৬ শতাংশের মধ্যে সর্দি-কাশি দেখা গেছে, ১৭ শতাংশের মধ্যে গলাব্যথা দেখা গেছে। আর মাত্র ৫ শতাংশের মধ্যে পরীক্ষার দিন শ্বাসকষ্টের লক্ষণ দেখা গেছে। উপসর্গযুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ১৫ শতাংশ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এর মধ্যে মাত্র একজনের মৃত্যু হয়েছে। উপসর্গযুক্ত মৃত ব্যক্তি হাসপাতালে গিয়ে মারা যান।

করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে আসছে একের পর এক সুখবর। এর করোনা বিদায়ঘন্টা নিয়ে আরেক তথ্য দিলেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, করোনা এখন উপসর্গহীন হয়ে পড়ছে। এভাবে খুব শীঘ্রই বিদায় নেবে করোনা।

বস্টন আশ্রয়শিবিরে ১৪৭ জন করোনা আক্রান্তের মধ্যে ৮৮ শতাংশের শরীরে কোনো উপসর্গ পাওয়া যায়নি। অথচ তারা করোনা আক্রান্ত ছিলেন। নর্থ ক্যারোলিনা, আরকানসাস, ওহিও এবং ভার্জিনিয়ায় ৩ হাজার ২৭৭ জন আক্রান্ত হলেও ৯৬ শতাংশ উপসর্গহীন।

এসব তথ্যই গবেষকদের আশা দেখাচ্ছেন। বিশেষজ্ঞদের রিপোর্ট অনুযায়ী ৪০ শতাংশ করোনা আক্রান্তদের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে কোনো উপসর্গ নেই। এই রকম উপসর্গহীন করোনাই ধীরে ধীরে ছড়াবে। যার ফলে একসময় করোনার বিশেষ কোনো উপসর্গ থাকবে না। এতেই করোনার প্রকোপ কমার দিকে যাবে বলে আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিজ্ঞানী বলেছেন, উপসর্গহীন রোগী বাড়াটা ভালো ল²ণ। কারণ এই ভাবে ধীরে ধীরে করোনা নিজের কার্যক্ষমতা হারাবে। আর এভাবেই বিদায় নেবে করোনা।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!