• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দেশে আসছে ইলেকট্রিক ট্রেন


নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি নভেম্বর ২৪, ২০১৮, ০৮:৫২ পিএম
দেশে আসছে ইলেকট্রিক ট্রেন

নারায়ণগঞ্জ : বাংলাদেশ রেলওয়ের ট্রেন ডিজেলচালিত। অত্যধিক জ্বালানি ব্যয়ের কারণে ফি বছর গুনতে হচ্ছে লোকসান। এর থেকে উত্তরণের পদ্ধতি খুঁজছে কর্তৃপক্ষ। বিবেচনা করা হচ্ছিল বৈদ্যুতিক ব্যবস্থায় ট্রেন চলাচলের। তারই রূপ পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জবাসী।

রেল সূত্র জানিয়েছে, জ্বালানির দামের কারণে বিশ্বজুড়েই সাশ্রয়ী ব্যবস্থাপনার দিকে যাচ্ছে রেলওয়ে। এমনকি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের ট্রেনের ৬০ ভাগ চলাচল করে বৈদ্যুতিক ব্যবস্থাপনায়। ভারতে রেলে জ্বালানি খরচ মোট আয়ের মাত্র ১৭ ভাগ অথচ বাংলাদেশ রেলওয়েতে জ্বালানি খরচ মোট আয়ের ৬০ ভাগেরও বেশি। এ ছাড়া বৈদ্যুতিক মোটরচালিত ইঞ্জিনের মেরামত খরচ কম। বারবার মেরামতেরও প্রয়োজন হয় না।

নারায়ণগঞ্জের নিতাইগঞ্জ থেকে সাইনবোর্ড মোড় এবং চিটাগাং রোড হয়ে পঞ্চবটির পর্যন্ত ইলেকট্রিক ট্রেন চলাচল করবে। আরামদায়ক ও নিরাপদ ভ্রমণের লক্ষ্যে সরকার এ ধরনের প্রস্তাবে সায় দিয়েছে। গত মঙ্গলবার অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে ‘নারায়ণঞ্জ সিটি করপোরেশনে লাইট রেল ট্রানজিট (এলআরটি) স্থাপনের নীতিগত প্রস্তাব’ অনুমোদন করা হয়। কমিটির বৈঠকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সভাপতিত্ব করেন।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম বলেন, লাইট র‌্যাপিড ট্রানজিট (এলআরটি) একটি গণপরিবহন ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে অর্থাৎ ইলেকট্রিক ট্রেনের মাধ্যমে যাত্রীরা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে পারবেন। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকায় প্রবেশ করা আরও সহজ হবে। তিনি বলেন, বিশ্বের ৩৮৮টি নগরীতে এখন এই ব্যবস্থা চালু আছে। নারায়ণগঞ্জের এ প্রকল্পটি ‘জিটুজি’ ভিত্তিতে এবং পিপিপি পদ্ধতিতে বাস্তবায়নের প্রস্তাব করা হয়েছে।

এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জের নিতাইগঞ্জ থেকে চাষাঢ়া হয়ে সাইনবোর্ড মোড় পর্যন্ত একটি রুটের দৈর্ঘ্য হবে ১১ কিলোমিটার। আর চিটাগাং রোড হয়ে পঞ্চবটি পর্যন্ত আরেকটি রুট ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ।

নাসিমা বেগম আরও বলেন, ইলেকট্রিক ট্রেন চালু হলে এসব রুটে প্রতিদিন গড়ে এক লাখ ২০ হাজার যাত্রী যাতায়াত করতে পারবেন। দুই লাইনের ইন্টারচেইঞ্জ স্টেশন হবে চাষাঢ়ায়। জিটুজি (সরকার টু সরকার)  ভিত্তিতে কাজ করতে বাংলাদেশ সরকার ও সিঙ্গাপুরের মধ্যে একটি ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট আছে। তারা (সিঙ্গাপুর) ট্রান্সপোর্ট, ট্যুরিজমসহ বিভিন্ন খাতে কাজ করবে। জানা গেছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ দেশের অন্যতম ঘনবসতির নগর। রাজধানীর লাগোয়া এ মহানগরকে ঢাকা মহানগরীর বর্ধিষ্ণু অংশ হিসেবেই ভাবা হয়। রাজধানী থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যেমন নারায়ণগঞ্জে যাতায়াত করে তেমন নারায়ণগঞ্জের হাজার হাজার মানুষ রাজধানীতে আসে যায়।

এদিক থেকে বিবেচনা করলে ইলেকট্রিক ট্রেন রাজধানী পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা যায় কিনা তা গুরুত্বের সঙ্গে ভেবে দেখা উচিত। নারায়ণগঞ্জে ইলেকট্রিক ট্রেন বাস্তবায়ন হলে এবং তা লাভজনক বলে বিবেচিত হলে রাজধানী ঢাকা, গাজীপুর ও চট্টগ্রাম মহানগরেও এ ধরনের প্রকল্প হাতে নেওয়ার দ্বার খুলে যাবে। মুখ থুবড়ে পড়া রেল যোগাযোগ ব্যবস্থাও তাতে কোমর সোজা করে দাঁড়ানোর সুযোগ পাবে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!