• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

‘দেশের ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ঋণ ভুলে যাবেন না’


নিজস্ব প্রতিবেদক মার্চ ১৯, ২০১৯, ০৯:৫৬ পিএম
‘দেশের ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ঋণ ভুলে যাবেন না’

ছবি: পিআইডি

ঢাকা: কর্মজীবনে গিয়ে দেশের ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান ভুলে না যাওয়ার জন্য বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) গ্র্যাজুয়েটদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় ও রাষ্ট্রের উন্নয়নে তাঁরা কার্যকর অবদান রাখবেন বলেও দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)-এর ১১ সমাবর্তনে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন মো. আবদুল হামিদ।

দেশের চলমান উন্নয়ন কর্মসূচি জনবান্ধব ও টেকসই করায় সহায়তা করতে প্রকৌশলী ও প্রযুক্তিবিদদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন তিনি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে উন্নয়ন পরিকল্পনা ‘ভিশন-২০২১ এবং ভিশন-২০৪১’ গ্রহণ করেছেন। এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে উন্নয়ন কাজ জনবান্ধব ও টেকসই করতে প্রকৌশলী ও প্রযুক্তিবিদদের ভূমিকা রাখতে হবে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, যুদ্ধবিদ্ধস্থ বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা লাভ করেছে। দেশের সাহসী জনগণের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা এবং সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপের কারণেই এটি সম্ভব হয়েছে।

তিনি বুয়েটকে দেশের প্রকৌশল ও কারিগরি শিক্ষার সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ উল্লেখ করে আশা প্রকাশ করেন যে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েটরা সময়ের দাবি পূরণে প্রকৌশল শিক্ষা ও গবেষণা আরো এগিয়ে নিতে আরো অবদান রাখবে।

রাষ্ট্রপতি দেশ থেকে মেধা পাচার বন্ধের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, প্রতি বছর বিপুল সংখ্যক প্রকৌশলী, প্রযুক্তিবিদ, স্থপতি এবং পরিকল্পনাবিদ উচ্চশিক্ষার জন্য ইউরোপ, আমেরিকাসহ উন্নত দেশগুলোতে যাচ্ছে এবং তাদের মধ্যে অনেকেই আর দেশে ফিরে আসছেন না। এ কারণে, দেশ ও জনগণ তাদের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তিনি দেশ ও জনগণের কল্যাণে আরো বেশি করে অবদান রাখতে তাদের সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রপতি সদ্য গ্রাজুয়েটদের অভিনন্দন জানিয়ে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধশালী দেশ করতে তাদের মেধা ও সৃষ্টিশীলতা কাজে লাগাতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানান। তিনি তাদের নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে সবসময় আন্তরিক হতে শিক্ষার্থীদের পরামর্শ দিয়ে বলেন, তোমরা চাকরির সুবাধে বিশ্বের যে প্রান্তেই থাক না কেন নিজ মাতৃভূমিকে কখনো ভুলবে না। তিনি বলেন, সর্বদাই বড় হবার স্বপ্ন দেখবে এবং দেশ, জাতি,সমাজ, পরিবার এবং নিজের কল্যাণের জন্য কাজ করে যাবে।

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ কোনো অন্যায়ের সঙ্গে আপস না করতে সদ্য বুয়েট গ্রাজুয়েটদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, সবকিছুই করবে নিজের মেধা, সততা এবং আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ সফল উৎক্ষেপণের পর বাংলাদেশ এখন মহাকাশ স্যাটেলাইট জগতের গর্বিত অংশীদার। সরকার বহুমুখি পদ্মা সেতু, বিভিন্ন বিদ্যুৎ প্রকল্প, পায়রা সমূদ্র বন্দর, ঢাকা মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেস হাইওয়েসহ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এ ক্ষেত্রে বুয়েট প্রোকৌশলীদের অবশ্যই উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে হবে।

রাষ্ট্রপতি বন্যা, নদী ভাঙন, নদী শাসন, পানি সরবরাহ ও স্যুয়ারেজ ব্যবস্থাপনা ও জলাবদ্ধতাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা মোকাবেলায় সরকারের দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনার অংশ হিসাবে ‘বাংলাদেশ ডেল্টা-প্লান ২১০০’ বাস্তবায়নে অবদান রাখতে প্রকৌশলীদের প্রতি আহবান জানান।

রাষ্ট্রপতি বলেন, গ্রাজুয়েটদের জন্য বুয়েট সারা বিশ্বে অধিক পরিচিত। ইতোমধ্যেই এই প্রতিষ্ঠান থেকে ৩২ হাজারের অধিক প্রকৌশলী, স্থপতি এবং পরিকল্পনাবিদ বের হয়েছে।

কনভোকেশনে ২০১১সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর পযর্ন্ত শিক্ষাবর্ষের বিভিন্ন বিভাগ থেকে ৫ হাজার ২৮৪ জন শিক্ষার্থী গ্রাজুয়েট, পোস্ট গ্রাজুয়েট এবং পিএইসডি ডিগ্রি সনদ গ্রহণ করেন। ১৮ জন শিক্ষার্থী সবোর্চ্চ নম্বর প্রাপ্তির জন্য স্বর্ণপদক লাভ করেন।

অনুষ্ঠানে সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সমাবর্তন বক্তব্য দেন। এ সময় মঞ্চে আরো উপস্থি ছিলেন, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, এমপি, বুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম, ফ্যাকাল্টির ডিনগণ যথাক্রমে অধ্যাপক মো. রফিক উল্লাহ, অধ্যাপক ড. শেখ সেকেন্দার আলী, অধ্যাপক ড. মো. মাহাবুবুল আলম, অধ্যাপক ড. মো. সাইফুর রহমান এবং অধ্যাপক ড. ফরিদা নিলুফার।

সোনালীনিউজ/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!