• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দোকান ছাড়তে হলো সেই নারীকে


জাবি প্রতিনিধি ডিসেম্বর ৪, ২০১৮, ০৭:২৭ পিএম
দোকান ছাড়তে হলো সেই নারীকে

জাবি : ছেলেদের হলের সামনে নারীর দোকান শোভন নয় বলে মন্তব্য করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক শফি মোহাম্মদ তারেক। মঙ্গলবার (৪ ডিসেম্বর) ওই হলের সামনে থেকে একটি দোকান বন্ধের বিষয়ে সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই মন্তব্য করেন।

জানা যায়, গত শনিবার দোকানের পাওনা টাকা চাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের সামনের এক নারী দোকানিকে বেদড়ক মারধর করে শাখা ছাত্রলীগ কর্মী লায়েব আলী। কিন্তু ভুক্তভোগী নারী কোনো বিচার পাননি বরং আজকে তাকে দোকান ছাড়তে হলো।

দোকান বন্ধ করে দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে শফি মোহাম্মদ তারেক বলেন, ‘দোকানটা ওই নারীর না, দোকান হাসু নামের এক ব্যক্তির। দোকান যেহেতু ওই নারীর না তাহলে সে কেন চালাবে।’

হাসু সম্পর্কে ওই নারীর ভাই। ভাইয়ের দোকান বোন চালাতে পারবে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সেটাতো পারবে, কিন্তু ছেলেদের হলের সামনে কি নারীর দোকান খুব শোভন?’ একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের ‘জেন্ডার ডিসক্রিমিনেশন’মূলক এ প্রশ্ন কি আশা করা যায়, স্যার? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কি ফেরেশতা? জেন্ডার ডিসক্রিমিনেশন তো থাকবে রে বাবা। ‘জেন্ডার ডিসক্রিমিনেশন’ তো আমাকে মানতেই হবে। না মেনে উপায় নাই।’

এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যও কিন্তু একজন নারী- এমন কথার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, নারী ঠিক আছে, তার মানে এই না যেসব কাজে সব জায়গায় নারী ‘ইনভলভ’ হবে। তুমি কি চাও সব কাজের মধ্যে নারী থাকুক?’

 নারীকে মারধরের বিষয়ে নিয়ে তিনি কোনো লিখিত অভিযোগ না পাওয়ায় বিচার করতে পারেননি বলে দাবি করেন তিনি তবে ঘটনা সম্পর্কে তিনি নিজে অবগত হয়ে আছেন বলে জানান।

ভুক্তভোগী নারী দোকানি বিবি আয়েশা খাতুন (৩৫) বলেন, ‘আমাকে মারধর করার পর থেকে প্রতিদিন আমি দোকান খুলতে আসলে আমাকে হল প্রশাসনের লোকজন দোকান খুলতে নিষেধ করে এবং মালামাল নিয়ে চলে যেতে বলে। শেষ পর্যন্ত না পেরে আমি আজ চলে যাচ্ছি। আমাকে এভাবে মারার কোন বিচার তো পাইনি বরং আমার পেটে লাথি পড়ল। আমার স্বামী মানসিক প্রতিবন্ধী এখন ছোট দুই ছেলে নিয়ে আমি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবো! আল্লাহর কাছে বিচার দিলাম।’

এদিকে হল প্রভোস্ট শফি মুহাম্মদ তারেক ক্যাম্পাসে থাকেন না। তিনি হলে নিয়মিত আসেন না বলেও অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। শিক্ষার্থীরা জানান, দুইদিন পর পর হলের ক্যান্টিন বন্ধ হয়ে যায়। হলের লন্ড্রি বন্ধ। হলের নানান সমস্যা কিন্তু হল প্রভোস্ট এসব নিয়ে বিন্দুমাত্র কর্ণপাত করেন না।

অভিযোগের ব্যাপারে অধ্যাপক শফি মুহাম্মদ তারেক বলেন, শিক্ষার্র্থীরা খাচ্ছে না বলে ক্যান্টিন চলছে না। শিক্ষার্থীরা আমার কাছে এপয়েন্টমেন্ট নিয়ে কথা বলতে আসে না। তাদের যেকোনো সমস্যা আমাকে তো জানাতে হবে। ক্যাম্পাসে না থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, হল প্রভোস্টের জন্য নির্ধারিত বাসা ঠিক করার জন্য জন্য আমি চিঠি দিয়েছি কিন্তু এখনো কাজ করেনি।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!