• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর মন্তব্যের জবাব দেয়া আজহারীর স্ট্যাটাস ভাইরাল


নিউজ ডেস্ক জানুয়ারি ৩০, ২০২০, ০৩:৫৬ পিএম
ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর মন্তব্যের জবাব দেয়া আজহারীর স্ট্যাটাস ভাইরাল

ঢাকা: সময়ের আলোচিত ধর্মীয় বক্তা ও ইসলামী চিন্তাবিদ ড. মিজানুর রহমান আজহারী। তাকে ‘জামায়াতের প্রোডাক্ট’ বলে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আবদুল্লাহ যে মন্তব্য করেছেন তার কড়া জবাব দিয়েছেন আজহারী। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) রাত পৌনে ১২টায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেয়া স্ট্যাটাসে তিনি ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর এ মন্তব্যের জবাব দেন।

এরই মধ্যে  ধর্মমন্ত্রীর বক্তব্যের জবাবে আজহারীর দেয়া স্ট্যাটাস এরইমধ্যে ভাইরাল হয়ে গেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। 

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বিকাল ৪টায় এ প্রতিবেদন লেখার সময় আজহারীর এই স্ট্যাটাসে লাইক পড়েছে ১ লাখ ৫৬ হাজারের বেশি। আর আজহারীর লেখাটি নিজেদের ওয়ালে শেয়ার দিয়েছেন ৩১ হাজার লোক। স্ট্যাটাসের নিচে মন্তব্য করেছেন ৩১ লাখ লোক। এটি শুধু তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে শেয়ার, লাইক ও কমেন্ট করা হয়েছে। এছাড়া আরো বিভিন্ন পেজ থেকে শেয়ার, লাইক ও কমেন্ট করা হয়েছে্

স্ট্যাটাসের ‌মন্তব্যের ঘরে আতিকুর রহমান নামে এক ব্যক্তি লিখেছেন, ‘প্রিয় ভাই, সাংবাদিক সন্মেলন করে আপনার মনের অবস্থান পরিস্কার করুন। আর ধর্মপ্রান মুসলমান ভাই ও বোনেরা আপনাকে হারাতে চায় না। আশা করব, কোন দলের পক্ষে বা বিপক্ষে গিয়ে দাওয়াতের কাজ করবেন না।’

সাব্বির হোসেন নামে একজন লিখেছেন, ‘কিছু পাবলিক আছে যারা আপনার এত সুন্দরভাবে উপস্থাপনার পরেও এগুলো নিয়েও ট্রল করবে, আফসোস স্যার, আপনি অন্ধের দেশে আয়না নিয়ে এসেছেন। বড়ই আজব জাতি আমরা, ভালো কিছুর মূল্যায়ন করতে পারি না।’

হাবিবুল্লাহ মিসবাহ নামে একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী ধর্মপ্রতিমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহর দিকে ইঙ্গিত করে লিখেছেন, ‘মাননীয় মন্ত্রী সাহেবকে বলে দিবেন মিজানুর রহমান আজহারী কোনো দলের অনুদান ও দয়ায় মিশর আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে ও মালয়েশিয়ায় ইসলামিক ইউনিভার্সিটিতে পড়ালেখার জন্য যাননি। এসএসসি ও এইচএসসিতে গোল্ডেন এ প্লাস ও সারাদেশে কওমী-আলিয়া মাদ্রাসা থেকে বাছাই পর্বে ইসলামিক ফাউণ্ডেশনের মাধ্যমে এক নম্বর ছাত্র হওয়ায় বিদেশে পড়ালেখার সুযোগ হয়েছে।’

উল্লেখ্য দুদিন আগে রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে ধর্মপ্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আবদুল্লাহ মিজানুর রহমান আজহারীর কড়া সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, আজহারী-মাজহারীরা তলে তলে জামায়াতের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন।

এর জবাবে বুধবার রাতে আজহারী ফেসবুকে লেখেন– তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের এজেন্ট বা প্রোডাক্ট নন। কোনো সংগঠনের টাকায় তিনি পড়ালেখা করেননি। নিজের চিন্তা আর মতের বিরুদ্ধে গেলেই এ দেশে একটি সস্তা ট্যাগ লাগিয়ে দেয়া হয় বলেও লেখেন আজহারী।

আজহারী লেখেন, তিনি ইসলামের একজন দায়ী। দ্বীনের খেদমতে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। ইসলামের মধ্যমপন্থার সৌন্দর্যকে প্রমোট করাই তার উদ্দেশ্য।

সোনালীনিউজের পাঠকদের উদ্দেশে আজহারীর স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো: 

‘আমি কোন দলের এজেন্ট বা প্রোডাক্ট নই। আর কোন রাজনৈতিক দলের অর্থায়নে আমার শিক্ষা জীবনও কাটেনি। মিথ্যাচার যেন এদেশে মহামারিতে রুপ নিয়েছে। আর সেটা যখন প্রকাশ্যে, গণমাধ্যমে, দেশের কোন উচ্চ পদস্থ দায়িত্বশীলের মুখ থেকে প্রকাশ পায়, তখন আফসোস আর হেদায়েতের দোয়া ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না।

নিজের চিন্তা আর মতের বিরুদ্ধে গেলেই এদেশে একটা স্বস্তা ট্যাগ লাগিয়ে দেয়া হয়। আর সেটা হল “জামাত শিবির”। এবার আপনি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হোন অথবা মনেপ্রাণে একজন প্রকৃত দেশপ্রেমিক হোন। দ্যাট ডাজেন্ট মেটার। ভিন্নমতকে দমনের এই অপকৌশল পুরো জাতির ভাগ্যে ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

একজন দা’ঈ ইলাল্লাহর কোন দল নাই। তিনি সকল দলের, সকল মানুষের। তাদেরকে দলীয়করণ না করে ব্যাপক ভাবে দ্বীনের খেদমতের সুযোগ করে দেওয়া উচিত। দেশের সব দলের মানুষ যেন তাদের দ্বারা আলোকিত হতে পারে সেটার পরিবেশ থাকা উচিত।

আমি সরকার বিরোধী নই। আমি অন্যায় বিরোধী। তাই, কোন অন্যায় দেখলে সে ব্যাপারে কথা বলা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। এবার সে অন্যায় যেই করুক না কেন, যে দলই হোক না কেন।

ব্যক্তিগতভাবে, এদেশের রাজনীতিতে আমার কোন ইন্টারেস্ট নেই। স্যোশাল এক্টিভিটি ও দা’ওয়াহ এক্টিভিটি এদুটি কাজই হল আমার আগ্রহের মূল কেন্দ্রবিন্দু।

আমার মিশন হল এদেশে ইসলামের মধ্যমপন্থার সৌন্দর্য্যকে প্রমোট করা। যেটাকে আরবীতে বলে আল-ওয়াসাতিয়্যাহ। জীবন যাপনে ভারসাম্য, চিন্তায় ভারসাম্য, কাজে ভারসাম্য, এবং আচরণে ভারসাম্যপূর্ণ মুসলিম তৈরী করা।

ভিন্ন মতের ব্যাপারে আমি বরাবরের মতই শ্রদ্ধাশীল। সকল মুসলমানকে আপন ভাইয়ের মত শ্রদ্ধা করি ও ভালোবাসি। তাদের নাজাতের জন্যে মন ভরে দোয়া করি। কারো পিছু লেগে থাকা, কাদাছোড়াছোড়ি করা এবং কোন মুসলিম ভাইয়ের ব্যাপারে অন্তরে হিংসা পুষে রাখা পছন্দ করিনা। কারণ ইসলাম আমাকে এটা শিখায়নি। আর প্রিয় নবীর আদর্শও এমনটি নয়।

আমি চাই বিভিন্ন ঘরনার আলেমরা সহনশীলতার ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের চর্চা করুক। তাদের উদারতার প্রভাব পরুক দেশের সকল শ্রেনীর মানুষের মাঝে। সংকীর্নতা আর হীনমন্যতা পরিহার করে, দ্বীনের সকল দ্বায়ীরা কুরআন সুন্নাহর সুধা বিলাতে থাকুক পুরো দেশ জুড়ে, পুরো পৃথিবী জুড়ে।’

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Wordbridge School
Link copied!