• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ধর্ষণ প্রতিরোধে বিশিষ্ট নাগরিকদের সাত প্রস্তাব


নিজস্ব প্রতিবেদক অক্টোবর ২০, ২০২০, ০৩:০৪ পিএম
ধর্ষণ প্রতিরোধে বিশিষ্ট নাগরিকদের সাত প্রস্তাব

ঢাকা : ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান রেখে রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ জারি করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন দেশের ২১ জন বিশিষ্ট নাগরিক। তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ত্বরিত সিদ্ধান্ত ও কার্যকর পদক্ষেপে এ কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন সম্ভব হয়েছে। এ ছাড়া ধর্ষণ প্রতিরোধে সাতটি প্রস্তাব দিয়েছেন তারা।

বিবৃতিতে বিশিষ্টজনেরা বলেন, ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তির বিধানসংবলিত রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারি করার জন্য সরকারকে অভিনন্দন জানাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ত্বরিত সিদ্ধান্ত ও কার্যকর পদক্ষেপে এই কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন সম্ভব হয়েছে। এ জন্য আমরা তাকে অভিনন্দন ও সাধুবাদ জানাই।

পাশাপাশি আমরা এ কথা উল্লেখ করতে চাই যে, আইনের সঠিক ও সময়োপযোগী প্রয়োগের ওপর নির্ভর করছে এর কার্যকারিতা। বাংলাদেশে অনেক আইন রয়েছে কিন্তু এর সঠিক প্রয়োগ ঘটছে না। তাতে করে আইন তার বিশ্বাসযোগ্যতা ও প্রয়োগকারীর ওপর জনগণ আস্থা হারিয়ে ফেলছে।

এ অবস্থায় আমরা দ্রুততম তদন্ত ও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিচারকার্য সম্পন্ন করার তাগিদ জানাই। বিদ্যমান আইনের অনুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করে আইনটিকে নির্যাতিত ও ধর্ষিত নারীর অনুকূলে সংশোধনী আনার জোর দাবি জানাই।

গত রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব প্রস্তাব দেন তারা।

প্রস্তাবনাগুলো হলো-

১. ধর্ষক ও সন্ত্রাসী যেন কোনো রাজনৈতিক দলের ছত্রচ্ছায়ায় এই ঘৃণ্য অমানবিক কাজ করতে না পারে তা নিশ্চিত করা।

২. আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শতভাগ সততা ও বস্তুনিষ্ঠতা নিশ্চিত করা।

৩. আইনি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ প্রশাসন ও রাজনৈতিক প্রভাব মুক্ত রাখা।

৪. ধর্মান্ধ মৌলবাদীদের অপতৎপরতা বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া। বিভিন্ন ধর্মীয় সভায় মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থের ভুল ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ব্যাখ্যা দিয়ে নিরন্তর নারী অবমাননাকর বক্তব্য থেকে মৌলবাদীদের নিবৃত করতে দৃঢ় ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া।

৫. ধর্ষণের বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তুলতে ও নির্যাতিত নারীর সামাজিক লাঞ্ছনা থেকে রক্ষাকল্পে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে সব সামাজিক-সাংস্কৃতিক শক্তিসমূহের কর্মসূচিকে সর্বাত্নক সহায়তা প্রদানে তৎপর হওয়া।

৬. প্রাথমিক-উচ্চ মাধ্যমিক ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের পাঠ্যসূচির আধুনিকায়ন। মাদরাসা শিক্ষা কার্যক্রমকে সরকার নিয়ন্ত্রিত করা এবং নারীর প্রতি সম্মানের মানসিকতা গড়ে তুলতে সব পর্যায়ের শিক্ষা কার্যক্রমে নারী-পুরুষের সম-অধিকারের বিষয়টি জোরালোভাবে উপস্থাপন করা। একমুখী শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা।

৭. পেশিশক্তির বিপরীতে জ্ঞান ও যুক্তিনির্ভর সমাজ গড়ে তুলতে ব্যাপক সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তোলা। এক্ষেত্রে সংস্কৃতিকর্মী ও সংগঠনের দায় ও দায়িত্ব সর্বাধিক। সরকারের এই সাংস্কৃতিক আন্দোলনকে সর্বাত্নক সহযোগিতা করাও জরুরি।

বিশিষ্টজনরা বলছেন, শুধুমাত্র আইন সংস্কার ও শাস্তি প্রদান করে এই জঘন্য অপরাধ থামানো যাবে না। এ জন্য প্রয়োজন দেশে সামাজিক রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক পরিশুদ্ধতা। এ জন্য উল্লিখিত প্রস্তাবনাগুলো অনুসরণ করা জরুরি বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

বিবৃতিদাতারা হলেন কলামিস্ট আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী, ফোকলোরবিদ শামসুজ্জামান খান, কথাশিল্পী হাসান আজিজুল হক, সমাজবিজ্ঞানী অনুপম সেন, নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, ডা. সারোয়ার আলী, নাট্যজন ফেরদৌসী মজুমদার, অধ্যাপক আবদুস সেলিম, নাট্যজন মামুনুর রশীদ, কবি নির্মলেন্দু গুণ, প্রাবন্ধিক মফিদুল হক, কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী, কবি মোহাম্মদ নূরুল হুদা, অধ্যাপক শফি আহমেদ, নাট্যজন নাসির উদ্দীন ইউসুফ, লাকী ইনাম, সারা যাকের, শিমুল ইউসুফ, গোলাম কুদ্দুছ, মান্নান হীরা ও হাসান আরিফ।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!