• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

নতুন বছরের শুরুতেই তিন সিটি নির্বাচন


নিজস্ব প্রতিবেদক ডিসেম্বর ৪, ২০১৯, ১০:২০ এএম
নতুন  বছরের শুরুতেই তিন সিটি নির্বাচন

ঢাকা : দলীয় প্রতীকে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।  স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী অর্থাৎ আগামী ১৭ মার্চের আগেই করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।  ইসি এরই মধ্যে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের তালিকা প্রণয়নের প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে। আগামী সপ্তাহের কমিশন সভায় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে বলে জানায় ইসি সূত্র। এদিকে ক্ষমতাসীন দলও চাইছে, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী শুরুর আগেই নির্বাচনী কার্যক্রম শেষ হোক।

আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য কর্নেল (অব) ফারুক খান  বলেন, একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগে সব সময় দুই ধরনের প্রস্তুতি রাখে। একটি হলো-আমাদের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জনসংযোগ, আরেকটি সাংগঠনিক কার্যক্রম। আগামী দুই-তিন মাসের মধ্যে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন। নির্বাচনকে সামনে রেখে কার্যক্রম চলছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায়িত্বে নিয়োজিত আওয়ামী লীগের নেতারা তাদের সাংগঠনিক এলাকার প্রতিবেদন দফায় দফায় জমা দিচ্ছেন। বিভিন্ন জন প্রার্থী হওয়ার জন্য আকাক্সক্ষাও পোষণ করছেন। তবে ইতিবাচক দিক হচ্ছে, সম্ভাব্য প্রার্থীরা আকাক্সক্ষার কথা প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে নেত্রীর সিদ্ধান্তের প্রতিও আস্থা প্রকাশ করছেন।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য আবদুর রহমান বলেন, তিন সিটি নির্বাচন ইস্যুতে আমাদের প্রস্তুতি চলছে। ইতোমধ্যে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগে নতুন নেতৃত্ব আসার মধ্য দিয়ে সেই প্রস্তুতি আরও এক ধাপ এগিয়ে গেছে। চট্টগ্রামের প্রস্তুতিও আগামী কিছু দিনের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। জনগণের মন জয় করে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জয়ী হওয়ার লক্ষ্যেই আমাদের দল কাজ করে যাচ্ছে।

ইসি সূত্র জানায়, ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনের লক্ষ্যে প্রস্তুত করা এক চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ‘আসন্ন ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের লক্ষ্যে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার এবং পোলিং অফিসারদের প্যানেল প্রস্তুত এবং অন্য কর্মকর্তাদের প্রাথমিক তালিকা প্রণয়নে মাননীয় নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত প্রদান করেছে।’

ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন নিয়ে ৩ নভেম্বর কমিশন সভা হয়। সভা শেষে ইসির সিনিয়র সচিব আলমগীর হোসেন বলেন, নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, জানুয়ারি মাসের একই দিনে দুই সিটির ভোটগ্রহণ হবে। তিনি আরও বলেন, ‘ডিসেম্বরে জেএসসি, পিইসি ও বিদ্যালয়গুলোর বার্ষিক পরীক্ষা এবং ফেব্রুয়ারিতে এসএসসি ও পরে এইচএসসি পরীক্ষা রয়েছে। এ বিষয় বিবেচনা করে জানুয়ারিতে ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়।’

চট্টগ্রাম সিটি সম্পর্কে জানতে চাইলে আলমগীর হোসেন জানান, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপযোগী হবে ফেব্রুয়ারি মাসে।  এ কারণে ওই সিটির নির্বাচনের বিষয়ে কমিশন এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।

ইসির নির্বাচন শাখার কর্মকর্তারা জানান, ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে।  এ লক্ষ্যে কাজ শুরু হয়েছে। জানুয়ারি দ্বিতীয়ার্থে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি নির্বাচন হতে পারে। মার্চের শুরুতে চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা রয়েছে।

২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল ঢাকার দুই সিটি ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হয়। ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর মেয়র আনিসুল হক ইন্তেকাল করায় উত্তর সিটির মেয়র পদ শূন্য হয়। আইনি জটিলতা কাটিয়ে চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি উত্তর সিটির উপনির্বাচন এবং নবযুক্ত ৩৬ ওয়ার্ডে সাধারণ নির্বাচন হয়। এক বছরের মাথায় এসব ওয়ার্ডে ভোটগ্রহণ করতে গেলে আইনি জটিলতা দেখা দিতে পারে। কারণ স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিদের মেয়াদ ৫ বছর। স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আইন অনুসারে উপনির্বাচন ব্যতীত আংশিক নির্বাচনের সুযোগ নেই। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে ইসি বরাবর আবেদন করেছেন এসব ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা।

ইসি সূত্র জানায়, দুই সিটিতে নবযুক্ত ৩৬ ওয়ার্ডের নির্বাচন নিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মতামত জানতে চাইবে ইসি। এ লক্ষ্যে একটি ফাইল প্রস্তুত করা হচ্ছে। আগামী সপ্তাহের কমিশন সভায় সিটি নির্বাচনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা উত্তর সিটিতে ২০১৫ সালের ১৪ মে, দক্ষিণ সিটিতে ওই বছরের ১৭ মে এবং চট্টগ্রাম সিটিতে ৬ আগস্ট প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ হিসাবে ঢাকার উত্তর সিটিতে ১৩ মে, দক্ষিণ সিটিতে ১৬ মে এবং চট্টগ্রাম সিটিতে ৫ আগস্ট মেয়াদ শেষ হবে। স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন ২০০৯ অনুযায়ী, মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ১৮০ দিনের মধ্যে ভোটগ্রহণ করার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

Wordbridge School
Link copied!