• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নিঃশাস নিলেই বিষের জ্বালা, দিল্লির সব স্কুল বন্ধ


নিউজ ডেস্ক নভেম্বর ৯, ২০১৭, ১০:৩২ পিএম
নিঃশাস নিলেই বিষের জ্বালা, দিল্লির সব স্কুল বন্ধ

ঢাকা: ঘন ধোঁয়ার আস্তরণে ঢেকে রয়েছে ভারতের রাজধানী দিল্লি শহরটি। বিষের এই বাতাস অসহ্য হয়ে উঠছে সবার। ভারতের রাজধানী দিল্লিতে কর্তৃপক্ষ বায়ু দূষণের ভয়াবহ মাত্রা বৃদ্ধির কারণে সব স্কুল গোটা সপ্তাহের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে।

শহরের উপ মুখ্যমন্ত্রী মণীষ সিসোদিয়া বলেছেন বাতাসে দূষণের মাত্রা বুধবার(৮ নভেম্বর) দ্বিতীয় দিনের মত মারাত্মক মাত্রায় রয়েছে এবং পরিস্থিতির ক্রমশ অবনতি ঘটায় শিশুদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির মুখে পড়েছে। ঘন ধোঁয়াশায় ঢেকে রয়েছে দিল্লির রাস্তাঘাট। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বায়ু দূষণের যে মাত্রাকে গ্রহণযোগ্য নিরাপদ সীমা বলে মনে করে, দিল্লির অনেক এলাকায় বায়ু দূষণ এখন তার তিরিশ গুণ বেশি।

এমন পরিস্থিতে দিল্লিতে ‘জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা’ জারি করা হয়েছে। দিল্লির বাসিন্দা পিকা রায় বিবিসি বাংলাকে বলেছেন ধোঁয়াশা এতটাই ঘন যে তিনি, তার আটতলা ফ্ল্যাটের বারান্দা থেকে নিচে রাস্তায় গাড়ি বা যানবাহন কিছুই দেখতে পাচ্ছেন না এবং গাড়িগুলো দিনের বেলাতেও হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে।

দিল্লি প্রশাসন বলছে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে শিশুরা। যখনই নিশ্বাস নিচ্ছি, নাকের ভেতরে একটা বার্নিং সেনসেশন- জ্বালা অনুভব করছি। আর ধোঁয়া ও ধুলো মেশানো একটা গন্ধ নাকে আসছে, বলছেন পিকা রায়।

বছর দুয়েক ধরে দিল্লিতে এরকম মারাত্মক দূষণ সমস্যা তৈরি হয়েছে বলে বলছিলেন পনের বছর দিল্লির বাসিন্দা পিকা রায়। ‘আগে আমরা কোনদিন এরকম অবস্থা দেখিনি। গত বছরেও খারাপ অবস্থা ছিল কিন্তু এরকম নয়।'’

তিনি বলছেন দিন দিন গাড়ির সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে আর একসাথে এত বেশি নির্মাণকাজ চলছে যে বাতাসে দূষণ অস্বাভাবিক রকম বেড়ে গেছে। সুস্বাস্থ্য নিয়ে বেঁচে থাকা দিল্লিতে দিনকে দিন কঠিন হয়ে পড়েছে বলে জানালেন পিকা রায়। বললেন কাজের কারণে দিল্লিতে থাকতে হয়- কোথাও যাবারও উপায় নেই।

শীতের শুরুতে দিল্লিতে বায়ুদূষণ হয় প্রতিবছর। গাড়ির নিগর্মন তো রয়েছেই, নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও দেওয়ালিতে বাজি পোড়ানো বন্ধ থাকেনি, পাশাপাশি এখন তার সঙ্গে যোগ হয়েছে দিল্লির আশেপাশের রাজ্য, যেমন পাঞ্জাব বা হরিয়ানায় চাষের ক্ষেতে ফসলের গোড়া পুড়িয়ে দেয়ার ফলে সৃষ্ট বায়ু দূষণ।

সরকার ব্যবস্থা নেবে বলে রোজই পেপারে পড়ছি। বলা হচ্ছে ধুলো কমানোর জন্য জল ছিটানো হবে, গাড়ি বন্ধ করে দেয়া হবে। মেট্রো রেলের ভাড়া কমানো হবে, যাতে গাড়ির নিগর্মন কমানো যায়। কিন্তু সেসব যে কবে করা হবে, এবং কতদিন পর তার সুফল আমরা পাব সে নিয়ে আমাদের অনেক সন্দেহ আছে।

পরিবেশ সংস্থাগুলো ও দিল্লির বাসিন্দারা সবাই প্রায় একবাক্যে বলছেন, শহরের বাতাস আর মোটেই স্বাভাবিক জীবনযাপনের উপযুক্ত নেই এবং জনস্বাস্থ্য যেরকম মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে তাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া এখন অত্যন্ত জরুরি।

সব মিলিয়ে পরিস্থিতি যে অত্যন্ত মারাত্মক, সরকারকে চিঠি লিখে গতকাল সে ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছিল ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন। সংস্থার সভাপতি ড: কে কে আগরওয়াল বলেছিলেন, ‘জনস্বাস্থ্যের দৃষ্টিতে দিল্লিতে এখন আপদকালীন অবস্থা চলছে।’

সোনালীনিউজ/আতা

Wordbridge School
Link copied!