• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচনমুখী রাজনীতির পথে হাঁটছে বিএনপি


বিশেষ প্রতিনিধি সেপ্টেম্বর ৮, ২০২০, ০৪:১৭ পিএম
নির্বাচনমুখী রাজনীতির পথে হাঁটছে বিএনপি

ঢাকা : ভোটে অংশ নেয়া, প্রচারণায় বাধা, মামলা, গ্রেফতার, ভোটের দিন এজেন্ট নেই, ভোটার কম এবং অবশেষে ভোটে বিএনপির প্রার্থীদের ভরাডুবি-গেল কয়েকবছর প্রতিটি নির্বাচনে এই দৃশ্যের সাথে বিএনপি বেশ পরিচিত।

নির্বাচনের পরও দলটি থেকে বারবার একই অভিযোগ, ‘এই ইসি ও  সরকারের আমলে সুষ্ঠু ভোট হয় না, হবে না। জনগণ ভোটাধিকার থেকে বিরত।’

কিন্তু সব হিসাব-নিকাশ শেষে এই ভোটমুখী রাজনীতির পথেই হাঁটছে বিএনপি। সম্প্রতি দলের হাইকমান্ডের এক বৈঠকে ৫টি সংসদীয় আসনের উপ-ভোটে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন নেতারা। এর ফলে আন্দোলনের পরিবর্তে দলটি যে নির্বাচনমুখী রাজনীতিকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছে-তা প্রমাণিত হয়েছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

ইসির ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর পাবনা-৪ আসনে উপ-নির্বাচন হবে। ঢাকা-৫ ও নওগাঁ-৬ আসনে উপ-নির্বাচন হবে ১৭ অক্টোবর। এ ছাড়া সিরাজগঞ্জ-১ এবং ঢাকা-১৮ আসনেও ভোট হবে। তবে ওই দুই আসনের তফসিল এখনও ঘোষণা হয়নি।

জানা গেছে, সম্প্রতি বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উপ-নির্বাচনে অংশ করা বা না করা নিয়ে একাধিক বৈঠক হয়। বৈঠকে স্কাইপের মাধ্যমে লন্ডন থেকে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান অংশ নেন। দীর্ঘ আলোচনা ও যুক্তি-তর্কের পর নেতারা সবক’টি উপ-নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘এই সরকারের আমলে কোনো নির্বাচনই সুষ্ঠু হয়নি। তারা চর দখলের মতো ভোটের দিন ভোটকেন্দ্র দখল করে।

আমাদের প্রার্থীদের প্রচারণায় শাসক দলের নেতা-কর্মীরা হামলা চালায়। বাড়ি বাড়ি তল্লাশি ও নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করা হয়। এসব আবার হবে-এমনটা জেনে বুঝেই আমরা নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

কারন নির্বাচনে সরকারের হস্তক্ষেপের বিষয়টি জনগণের সামনে আমরা বার বার উন্মোচিত করতে চাই। এর মাধ্যমে বর্তমান ভোট সংস্কৃতির অবসান একদিন হবেই।’

অবশ্য বিএনপির আরেকটি সূত্র জানায়, করোনাকালে এই মুহূর্তে উপ-নির্বাচনে অংশ নেওয়া ছাড়া বিএনপির সামনে কোনো উপযুক্ত বিকল্প নেই।

একই সঙ্গে নির্বাচনী এলাকাগুলোতে নেতা-কর্মীদের উজ্জীবিত রাখতে নির্বাচনে অংশ নেওয়াকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মনে করছে বিএনপি।

ফলাফল যা-ই হউক, ভোটের আগে নেতা-কর্মীরা মাঠে থাকবে-মিডিয়ায় বিএনপির প্রার্থীরা আলোচনায় থাকবেন, ধানের শীষের মিছিল হবে-নির্বাচন থেকে এইরকম ফায়দা নিতে চায় বিএনপি।

একই সঙ্গে নির্বাচনে সরকারি হস্তক্ষেপের বিষয়টিও তারা দেশি-বিদেশি মিডিয়ার সামনে তুলে ধরতে চায়। এইসব লক্ষ্য-উদ্দেশ্য সামনে রেখেই বিএনপি নির্বাচনমুখী রাজনীতির পথে হাঁটছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির শুভাকাঙ্খী হিসেবে পরিচিত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক ড. আসিফ নজরুল বলেন, নির্বাচন অংশ নেওয়া ছাড়া এখন বিএনপির সামনে কোনো পথ নেই। আন্দোলনের মাঠে তারা সফল হয়নি-এই বাস্তবতা তারাও বুঝে। ফলে নির্বাচনের মাধ্যমেই বিএনপি একটি পরির্তন চায়। কিন্তু এ জন্য বিএনপি একাকী বড় কিছু করতে পারবে না। সব দল-মতি নির্বিশেষে জাতীয় ঐক্য গঠন করতে পারলেই পরিবর্তন সম্ভব।

বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা গেছে, পাবনা-৪ আসনে ইতোমধ্যে বিএনপির মনোনায়ন পেয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব। ঢাকা-৫ আসনে নবীউল্লাহ নবীকেই মনোনয়ন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি।

নওগাঁ -৬ আসনে গত জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়ন পান সাবেক এমপি আলমগীর কবির। এবারও তাকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে। সিরাজগঞ্জ-১ আসনে কণ্ঠশিল্পী রোমানা মোর্শেদ কনক চাপা আবারও মনোনয়ন পেতে পারেন।

ঢাকা-১৮ আসনে বিএনপির ঢাকা উত্তরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম কফিলউদ্দিনের মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!