• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ চায় আ.লীগ


বিশেষ প্রতিনিধি অক্টোবর ২৬, ২০১৮, ০৯:৫৮ পিএম
নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ চায় আ.লীগ

ঢাকা : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সবদলের অংশগ্রহণ চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তাই নবগঠিত রাজনৈতিক জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে কোনপ্রকার বাধা সৃষ্টি করবে না তারা।

বরং ঐক্যফ্রন্টের রাজনৈতিক কর্মসূচিকে সতর্কভাবে পর্যবেক্ষণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্ষমতাসীন দলটি। তবে এসব কর্মসূচিকে ঘিরে কোনও নাশকতা-উসকানিমূলক ঘটনা ঘটলে তা ছাড় দেয়া হবে না। আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্রমতে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সভা-সমাবেশকে নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির অংশ হিসেবে দেখছে আওয়ামী লীগ। দলটির নীতি-নির্ধারণীয় পর্যায়ের নেতারা নবগঠিত নির্বাচনি জোটটির এসব রাজনৈতিক কর্মসূচিকে সতর্কভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন।

তারা বলছেন, সভা-সমাবেশ প্রতিটি নাগরিকের রাজনৈতিক অধিকার। সবাইকে নির্বাচন করতে হবে। আওয়ামী লীগ উদার-গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে বিশ্বাস করে। দলটি চায়, এদেশে সবাই যার যার গণতান্ত্রিক অধিকার ভোগ করুক। ঐক্যফ্রন্টের নেতারা একটু মিছিল-মিটিং করুক।

গত ১৩ অক্টোবর বিএনপি, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া (গণফোরাম ও জেএসডি), জেএসডি ও নাগরিক ঐক্যের সমন্বয়ে আত্মপ্রকাশ করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন এর শীর্ষ নেতৃত্বে আছেন।

সরকার ও আওয়ামী লীগের শীর্ষ মহলে কথা বলে জানা গেছে, ঐক্যফ্রন্টের কর্মসূচিতে দৃশ্যমান কোনও বাধা সৃষ্টি করতে চায় না তারা। সরকার মনে করছে, প্রথম সমাবেশই সফল করতে পারেনি জোটটি, এই জোট জনমনে সাড়া ফেলতে পারেনি। এটাই তার প্রমাণ। এছাড়া নির্বাচনের বাকি মাত্র কয়েকদিন। এই স্বল্প সময়ের মধ্যে আন্দোলন করা সম্ভব নয়, বড় জোর নির্বাচনের প্রস্তুতি ও প্রচারের কাজ করা সম্ভব।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘সভা-সমাবেশ যে কেউ করতেই পারে। ঐক্যফ্রন্ট শান্তিপূর্ণভাবে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করবে, এটা খুব ভালো কথা। আওয়ামী লীগ চায়, তারা একটু মিছিল মিটিং করুক। কারণ তাদেরও নির্বাচন করতে হবে। কেউ সভা-সমাবেশ করতে না পারলে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হবে না। কিন্তু ঐক্যফ্রন্টে কর্মসূচির পেছনে রয়েছে বিএনপি-জামায়াত। যারা ষড়যন্ত্রে সিদ্ধহস্ত। তাই ঐক্যফ্রন্টের কর্মসূচিতে সতর্ক দৃষ্টি রাখা হবে। যদি নাশকতা-উসকানিমূলক কিছু ঘটে, সরকার কোনও ছাড় দেবে না।’

আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় একটি সূত্র জানায়, ঐক্যফ্রন্টের কর্মসূচি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে। রাজনৈতিক কর্মসূচিতে দাগি, পলাতক ও সাজাপ্রাপ্ত কোনও আসামি যেন অংশ নিতে না পারে বা কোনও দুর্ঘটনা না ঘটাতে পারে, সেদিকে দৃষ্টি রাখা হবে। যাদের বিরুদ্ধে মামলা আছে, তাদের গ্রেফতার করা হতে পারে। পুরনো মামলা সচল করা হতে পারে।

শাসক দলের নেতারা বলছেন, ঐক্যফ্রন্টের কর্মসূচিতে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরাই আসছেন। ব্যবস্থাপনাও তাদের হাতে। ড. কামাল ও অন্যরা এতে অতিথি মাত্র। গত ১০ বছরে বারবার আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েও বিএনপি-জামায়াত আন্দোলন করতে পারেনি, এমনকি মাঠেও ভালোভাবে নামতে পারেনি। এখন ঐক্যফ্রন্টের কর্মসূচিতে তারা যোগ দিতে চাইবেন, এটাই স্বাভাবিক।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ ঐক্যফ্রন্টের সভা-সমাবেশকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই দেখছেন। তিনি বলেন, ‘ঐক্যফ্রন্টের রাজনৈতিক তৎপরতাকে স্বাগত জানাই। সভা-সমাবেশ করা গণতান্ত্রিক অধিকার। যদি জনগণের জানমালের ক্ষতির আশঙ্কা না থাকে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি না হয়, তারা কর্মসূচি পালন করতেই পারে। তবে, তাদের কর্মসূচিকে ঘিরে কোনও আশঙ্কা থাকলে, সেটা দেখাও সরকারের দায়িত্ব। কারণ, জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়া ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা সরকারের কর্তব্য, জনসেবার অংশ।’

প্রসঙ্গত, গত ২৪ অক্টোবর সিলেটে হজরত শাহজালালের (রা.) মাজার জিয়ারত করে একটি সমাবেশের মাধ্যমে রাজনৈতিক কর্মসূচি শুরু করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। পর্যায়ক্রমে তা চট্টগ্রাম, রাজশাহীসহ অন্যান্য বিভাগীয় শহরেও চলবে। যদিও প্রথমে অনুমতি না পাওয়ায় ২৩ অক্টোবরের পরিবর্তে একদিন পিছিয়ে সমাবেশ করে জোটটি। অনুমতির জন্য আদালতে রিটও করতে হয় তাদের।

তবে আজ ২৭ অক্টোবর চট্টগ্রামে সমাবেশ করার অনুমতি পেয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। যদিও তারা লালদীঘি ময়দানে সমাবেশ করতে চেয়েছিল, কিন্তু অনুমতি দেওয়া হয়েছে বিএনপি কার্যালয় নাসিমন ভবনের সামনে।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ লালদীঘি মাঠে সমাবেশের অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু আজ (শুক্রবার) সকালে সিএমপির পক্ষ থেকে নাসিমন ভবনে আমাদের পার্টি অফিসের সামনে সমাবেশ করতে পারবো বলে জানিয়েছে তারা।’

২৭ অক্টোবর ২৫ শর্তে ঐক্যফ্রন্টকে এ সমাবেশের অনুমতি দেয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহসিন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!