• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নীলফামারীতে আগাম জাতের আলু উত্তোলনে ব্যস্ত কৃষকরা


নীলফামারী প্রতিনিধি ডিসেম্বর ১৪, ২০১৯, ০৭:০২ পিএম
নীলফামারীতে আগাম জাতের আলু উত্তোলনে ব্যস্ত কৃষকরা

নীলফামারী : নীলফামারীতে আগাম আলু  উত্তোলনে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন  কৃষকরা। এবছর আগাম আলুর বাম্পার ফলন হলেও প্রতিদিনেই দাম কমতে থাকায় দুচিন্তায় পড়েছেন আগাম আলু চাষীরা।এদিকে এখানকার আগাম আলু জেলার চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে  দেশের বিভিন্ন স্থানে।
 
আগাম আলু চাষের জন্য বিখ্যাত নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ ও জলঢাকা উপজেলা। দেশের আগাম আলুর সিংহভাগ উৎপাদন হয় এখানে। আগাম লাগানো আমন ধান কর্তনের পর এখানকার কৃষকরা এক খন্ড জমিও পতিত রাখে না। 

এ ছাড়া বছরের পর বছর যে জমি গুলো পড়ে থাকতো গত কয়েক বছর ধরে সে জমি গুলোতে আগাম জাতের আলু চাষ করে ইতিমতো বিপ্লব ঘটিয়েছে  কৃষকরা। ৫৫ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে উৎপাদিত গেনোলা জাতের আগাম আলু চাষ করে থাকেন এখানকার কৃষকরা। মাঠে এখন আগাম আলু তোলার ধুম পড়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ফলনও হয়েছে ভালো। কিন্তু শুরুতে দাম ভালো পেলেও এখন প্রতিদিনেই আগাম আলুর দাম মনে ৫০ থেকে ১০০ টাকা করে কমছে।

নীলফামারী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র মতে ,এ বছর জেলায় ২০ হাজার ৮৫৫ হেক্টর জমিতে আগাম আলু রোপনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে প্রায় তিন হাজার হেক্টর বেশি।  ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলায় প্রায় ১২শ’ হেক্টর জমির আগাম আলু উত্তোলন হয়েছে বলে জানান কৃষি বিভাগ।

জেলার জলঢাকা ও কিশোরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, একদিকে চলছে আলু উত্তোলনের কাজ, অন্যদিকে কেউ কেউ মৌসুমী আলু লাগানোর কাজে ব্যস্ত আবার কেউবা ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।

আলু ক্ষেতের মালিক জলঢাকা উপজেলার খুটামারা ইউনিয়নের খালিশা খুটামারা গ্রামের নুরুজ্জামান (৩৫) বলেন, আমি ৪ বিঘা জমিতে এবছর আলূ চাষ করেছি। আলুর বয়স এখন ৫৫ দিন হয়েছে। আরও ১০দিন পড়ে আলু তুলতে হতো। কিন্তু দাম পড়ে যাচ্ছে তাই আগে ভাগে তুলছি। 
তিনি বলেন, দুইদিন আগে দেড় বিঘা জমির আলু তুলে বিক্রি করেছি ২৮ টাকা কেজি দরে। ওই আলু একদিনের ব্যবধানে ২৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। প্রতিদিন দাম পড়ে যাচ্ছে। প্রতি বিঘা জমিতে আলু চাষে খরচ হয়েছে ১৮ হাজার টাকা এবং প্রতি বিঘায় তার ফলন হয়েছে এক হাজার ৩০০ কেজি করে। এতে তার লাভ হবে প্রায় ১৫ হাজার টাকা।

কিশোরগঞ্জ উপজেলার পোড়াকোট গ্রামের আলু চাষী লুৎফর রহমান (৪০) বলেন, আমি তিন বিঘা জমিতে এবার আলু চাষ করেছি। আগাম আলুর দাম ভালো থাকলেও আমরা ওই বাজার ধরতে পারিনি। আমার আলু আরও ১০দিন পরে তোলার কথা থাকলেও দাম পরে যাওয়ার কারনে আগে তুলছি। তিনি বলেন, তিনদিন আগে এক বিঘা জমির আলু বিক্রি করেছি সারে ২৮ টাকা কেজি দরে। এখন ওই আলু ২৬ টাকা দরে বিক্রি করলাম। তিনি বলেন, এখন দাম কিছুটা থাকায় ব্যবসায়ীরা ক্ষেতে এসে নগদ টাকায় ওই দামে আলু নিয়ে যাচ্ছেন। দাম পড়ে যাওয়ার সাথে সাথে আলু নিয়ে আমাদের ব্যবসায়ীদের পেছনে ঘুরতে হবে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন নীলফামারীতে প্রায় ২৫দিন আগে থেকে আলু উঠতে শুরু করেছে। প্রথমদিকে ৪৮ টাকা পর্যন্ত কেজি দরে আলু বিক্রি হলেও দাম কমতে কমতে এখন ওই আলু ২৬ টাকায় নেমেছে। 
 
কিশোরগঞ্জ ট্রাক ট্যাংঙ্কলড়ি শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য নজরুল ইসলাম ও ইলিয়াছ আলী জানান,কিশোরগঞ্জ থেকে প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০  ট্রাক আগাম আলু যাচ্ছে ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শষ্য) সিরাজুল ইসলাম বলেন, দেশের অন্যান্য জেলার আগেই নীলফামারীর আগাম আলু উঠে এবং আগাম বাজার ধরতে পারায় লাভবান হন খানকার কৃষকরা।

সোনালীনিউজ/এজি/এএস 

Wordbridge School
Link copied!