• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

নেশা কেটেছে ঐশীর, দিন কাটে অনুশোচনায়


নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ২৯, ২০১৯, ০৯:০১ পিএম
নেশা কেটেছে ঐশীর, দিন কাটে অনুশোচনায়

ঢাকা : মাদকের ভয়াল গ্রাসে আচ্ছন্ন হয়ে মা-বাবাকে খুন করেছিল ঐশী রহমান। যে মাদকের কারণে মা-বাবার মতো পরম আশ্রয়কে পৃথিবী থেকে বিদায় দিয়েছিল, সেই মাদকের নেশা সস্পূর্ণ কেটে গেছে তার।

কাশিমপুর মহিলা কারাগারে অধিকাংশ সময় ঘুমিয়েই কাটে ঐশীর। ভুগছে মা-বাবার প্রাণ হরণের মতো চরম ঘৃণিত অপরাধের অনুশোচনায়।

২০১৩ সালের ১৬ আগস্টে ঢাকার চামেলীবাগের বাসায় পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান স্ত্রী স্বপ্না রহমানসহ খুন হওয়ার সেই ঘটনা পুলিশের মধ্যেই তোলপাড় সৃষ্টি করেছিল। নেশাসক্ত ঐশীই নির্বিবাদে নেশা করার জন্য কফির সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে এবং পরে কুপিয়ে হত্যা করে বাবা-মাকে। মা-বাবার খুনের দায় স্বীকার করে পরদিন নিজ থেকে পুলিশে ধরা দেন ওই সময়ের স্কুলপড়ুয়া তাদের কন্যা ঐশী।

২০১৫ সালে সেই মামলার রায়ে ফাঁসির আদেশ হয় তার। ২০১৭ সালে আপিল বিভাগ ঐশীর ফাঁসির দণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন দেয়। ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ুয়া ঐশী ডিজে পার্টিসহ ইয়াবা-গাঁজার মতো নেশায় আসক্ত হয়ে পড়িছিল। এসবই হয়ে উঠেছিল তার নিত্যসঙ্গী। ক্রমাগত নেশা যাকে মানসিক ভারসাম্যহীন করে তুলেছিল। তবে জেলজীবন বদলে দিয়েছে সেই ঐশীকে। সে এখন শান্ত-সুস্থির।

কারাগারের একটি সূত্র জানিয়েছে, মামলার রায়ের পর থেকে কাশিমপুরের মহিলা কারাগারে রয়েছে ঐশী। কয়েদি ওয়ার্ডে খেয়ে, ঘুমিয়ে আর গল্পগুজব করে কিছু সময় কাটলেও অধিকাংশ সময় কাটে অনুশোচনায়। মাদকের নেশাও কেটে গেছে। সারাক্ষণ চিন্তা করে একমাত্র ছোট ভাইয়ের জন্য। প্রতি মাসে ঐশীর সঙ্গে একবার চাচা এসে দেখা করেন। তার কাছেই ভাইয়ের খোঁজখবর নেন।

তবে ঐশীর বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে তার ছোট ভাইকে এখনো কিছু জানানো হয়নি। কয়েদি ওয়ার্ডে সাধারণ বন্দিদের সঙ্গে থাকা ঐশীকে কারাগারে তেমন কোনো কাজ করতে হয় না। নিয়ম করে খাওয়া-দাওয়া আর অন্যদের সঙ্গে গল্পে সময় কাটে। নেশাসক্তি কেটে যাওয়ার পর থেকেই অনুশোচনায় নিস্তব্ধ হয়ে থাকে। তবে কয়েদি ওয়ার্ডে সর্বকনিষ্ঠ হওয়ায় সবার আদর-স্নেহও তার প্রতি বেশি।

এদিকে কারাগারে থাকা ঐশীকে দেখতে যান কেবল তার চাচা।

এ ছাড়া নিকট কিংবা দূরবর্তী স্বজন-পরিজনদের আর কেউ তার খোঁজ নেয় না। এক চাচা প্রতি মাসে নিয়ম করে কাশিমপুর মহিলা কারাগারে যান। তার জন্য জামা-কাপড়, খাবার ও পিসির (প্রিজনারস ক্যান্টিন) জন্য টাকা দিয়ে যান। দীর্ঘদিন চাচাকে না দেখলে অস্থির হয়ে পড়ে ঐশী। জেল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন চাচাকে আসতে বলার জন্য।

কাশিমপুর মহিলা কারাগারের জেলার উম্মে সালমা বলেন, ‘ঐশী এখন সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। তার নেশা কেটে গেছে শতভাগ। জেলে অন্য সাধারণ কয়েদিদের সঙ্গে স্বাভাবিক নিয়মে জীবন কাটছে তার।’

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!