ঢাকা : গাজীপুর সিটি করপোরেশনের (অঞ্চল-৭) নির্বাহী প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন (৫০) তারই সহকর্মী সহকারী প্রকৌশলী সেলিম হোসেনের হাতে নির্মমভাবে খুন হয়েছেন। ওই ঘটনায় নিহতের স্ত্রী খাদেজা আক্তার (৪২) বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের নামে তুরাগ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় সহকারী প্রকৌশলী সেলিম হোসেনসহ তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পূর্ব শত্রুতার জেরে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী খুন করা হয় প্রকৌশলী দেলোয়ারকে।
গ্রেফতাররা হলেন- গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সহকারী প্রকৌশলী সেলিম হোসেন, গাড়িচালক হাবিব ও ভাড়াটে খুনি শাহিন হাওলাদার। বৃহস্পতিবার (২১ মে) ডিএমপির উত্তরা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) কামরুজ্জামান সরদার এসব তথ্য জানান ।
সূত্রে জানা যায়, গত ১১ মে সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মিরপুরের বাসা থেকে অফিসের উদ্দেশ্যে বের হন প্রকৌশলী দেলোয়ার। তখন ওই ভাড়া করা হাইস গাড়িতে দেলায়োরকে উঠিয়ে পাশে বসেন হত্যার পরিকল্পনাকারী সহকারী প্রকৌশলী সেলিম। এরপর ভাড়াটে খুনি শাহিন দেলায়োর হোসেনের ঠিক পেছনের সিটে বসে তার গলায় রশি পেঁচিয়ে টান দেন। সেলিম নিজে দেলায়োরকে চেপে ধরেন। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টরে খালি প্লটের রাস্তার পাশে মরদেহ ফেলে দিয়ে চলে যান। ঘটনার পর থেকে তার কোনো খোঁজ পাচ্ছিল না পরিবার।
গত ১১ মে বিকেল ৪টায় উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টরে ফাঁকা জায়গায় অজ্ঞাতনামা একটি মরদেহ পাওয়া যায়। পরে ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে জানা যায় মৃত ব্যক্তি দেলায়োর হোসেন (৫০) গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী (অঞ্চল-৭)।
এঘটনায় সহকর্মী সহকারী প্রকৌশলী সেলিমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেন যে, দেলায়োর হাসেনকে খুন করা হয়েছে। সে এবং ভাড়াটে খুনি শাহীন ও মাইক্রোবাসের ড্রাইভার হাবিবসহ তিনজন হত্যায় অংশ নেয়। পরবর্তীতে তার দেয়া তথ্যে এবং প্রযুক্তির সহায়তায় শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান পরিচালনা করে খুনি শাহীনকে পল্লবী লালমাটিয়ার বটতলা এলাকা থেকে এবং ব্যবহৃত মাইক্রোবাসের চালক হাবিবকে ভাটারা হতে গ্রেফতার করা হয়। হত্যায় ব্যবহৃত হাইস গাড়িটি পরবর্তীতে গায়োলন্দ থানা এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়।
তুরাগ থানাধীন দিয়াবাড়ীসহ তিন নম্বর ব্রিজ সংলগ্ন লেক থেকে ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল ডিফেন্সের ডুবুরি দলের সহযািেগতায় নিহত প্রকৌশলী দেলায়োর হোসেনের ব্যবহৃত মোবাইলফোনটি উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানায়, পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেনকে হত্যা করা হয়েছে। দেলোয়ারকে গাড়িতে করে তুলে নেয়ার পর প্রকৌশলী সেলিম তার পাশে বসেন। ভাড়াটে খুনি শাহিন দেলায়োর হোসেনের ঠিক পেছনের সিটে বসেন এবং একপর্যায়ে আকস্মিকভাবে গলায় রশি পেঁচিয়ে টান দেন। এ সময় সেলিম নিজে লোয়ারকেকে চেপে ধরেন। হত্যার পর তারা সবাই মিলে দেলোয়ার হোসেনের মরদেহ উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টরে খালি একটি প্লটে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যান। সেলিমের সঙ্গে নিহত দেলোয়ার হোসেনের দাফতরিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মতবিরোধ ছিল। পথের কাঁটা দুর করতেই দেলোয়ারকে খুন করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের আদালতে পাঠানো হলে ভাড়াটে খুনি শাহীন ও চালক হাবিব ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। আদালত আসামি প্রকৌশলী সেলিমকে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
সোনালীনিউজ/এএস
আপনার মতামত লিখুন :