• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

পদ্মার চরে পেঁয়াজের বাম্পার ফলন


নিজস্ব প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২০, ০৯:২৮ এএম
পদ্মার চরে পেঁয়াজের বাম্পার ফলন

রাজশাহী : রাজশাহীর বাঘা উপজেলার পদ্মার চরাঞ্চলে পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে। পেঁয়াজ তুলতে ব্যস্ত চাষিরা।  পেঁয়াজ উত্তোলন করতে শত-শত শ্রমিক কাজ করছেন। বর্তমানে দাম পেয়ে খুশি চাষিরা। রোববার উপজেলার আড়ানী হাটে খুরচা হিসেবে প্রতি কেজি ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

পলাশি ফতেপুর চরের এনাত হোসেন জানান, বিভিন্ন এনজিও ও মহাজনদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে পেঁয়াজ আবাদ করেছি। পেঁয়াজ তুলে তাদের টাকা পরিশোধ করব। বাজারে প্রতি মণ পেঁয়াজ পাইকারী হিসেবে বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার ৫০০ টাকায়। কিন্তু প্রতি মণ পেঁয়াজের গড় উৎপাদন খরচ হয়েছে ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা। তারপরও খরচ বাদ দিয়ে উৎপাদিত পেঁয়াজ বিক্রি করে মণপ্রতি এক হাজার ৩০০ থেকে এক হাজার ৫০০ টাকা ঘরে আসছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে পেঁয়াজ আবাদ হয়েছে। চলতি মৌসুমে ৮৮০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ৮০০ হেক্টর।

চকরাজাপুর চরের আমিন সিকদার জানান, চলতি মৌসুমে যারা পেঁয়াজ আবাদ করেছে, ইতোমধ্যে তারা বিক্রি করতে শুরু করেছে। এবছর ১০ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ উৎপাদন খরচ হয়েছে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ইতোমধ্যে এক বিঘা জমির আগাম জাতের পেঁয়াজ উঠান হয়েছে। দাম ভাল পেয়েছি।

টিকটিকিপাড়া চরের আঞ্জু মোল্লা জানান, বর্তমানে যে দাম আছে সেটা না থাকলে পেঁয়াজ চাষ করে লাভবান হওয়া মুশকিল হয়ে পড়বে। কারণ বীজ ও অন্যান্য দ্রব্যে সার কিটনাশক ওষুধের দাম আগের চেয়ে বেশি।

পলাশি ফতেপুর চরের মহিলা শ্রমিক জয়গন বেগম, পারভীন আক্তার, নাসিমা বেগম জানান, চলতি মৌসুমে আগাম জাতের পেঁয়াজ উৎপাদন করে চরের অধিকাংশ চাষিরা লাভবান হয়েছেন। পাশাপাশি আমরা কাজ করে টাকা রোজগার করে সংসার চালাতে সুবিধা হচ্ছে। আগাম জাতের পেঁয়াজে চাষে শ্রমিকরা কাজ করে সঙ্গে সঙ্গে মজুরি পেয়ে খুশি।

চকরাজাপুর চরের পেঁয়াজ চাষি বাবলু দেওয়ান জানান, দাম ভালো ও আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবছর ১৬ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছি। এবার আগের চেয়ে ভালো ফলন হয়েছে।

গড়গড়ি ইউনিয়নের চরের স্থানীয় সাবেক মেম্বার রেজাউল করিম জানান, গত বছর পেঁয়াজের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে এবছর অনেকে পেঁয়াজ চাষ কমে দিয়েছিলাম। গত বারের কথা না ভেবে এবার যারা বেশি পেঁয়াজ চাষ করে তারা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।

বাঘা হাটের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী নজমুল হোসেন জানান, মোকামে পেঁয়াজের যথেষ্ঠ চাহিদা আছে। পেঁয়াজ নিয়ে কৃষকদের কোন চিন্তা নেই। সরকার যদি এলছি ও ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি না করে তাহলে চাহিদা ও দাম থাকবে।

আড়ানী হাটের ব্যবসায়ী ইমরান হোসেন জানান, ঢ্যামনা ও চারা পেঁয়াজ নামে দুই ধরনের পেঁয়াজ এলাকায় চাষ হয়ে থাকে। চারা পেঁয়াজের দীর্ঘ সময় মৌজুদ রাখা যায়। এই পেঁয়াজ বেশি আবাদ হয় উপজেলার পদ্মার চরাঞ্চলে। এই ধরনের পেঁয়াজের বাজার থাকলে আগামীতে উৎপাদনে মনোযোগী হবেন চরাঞ্চলের কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান জানান, উপজেলা সর্বত্র কমবেশি পেঁয়াজের চাষ হয়েছে। উপজেলার দুটি পৌরসভা ও সাতটি ইউনিয়নে যে পরিমান পেঁয়াজ চাষ হয়েছে তার চেয়ে বেশি চাষ হয়েছে শুধু পদ্মার চরাঞ্চলে। গত বছরের চেয়ে এবছর ভাল দাম পাচ্ছে কৃষকরা।

এএস

Wordbridge School
Link copied!