• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

পশ্চিমারাই মাথায় তুলেছে সু চিকে


আন্তর্জাতিক ডেস্ক ডিসেম্বর ১৫, ২০১৯, ০৭:৪৭ পিএম
পশ্চিমারাই মাথায় তুলেছে সু চিকে

ঢাকা : আধুনিক মিয়ানমারের জনক অং সানের বড় মেয়ে অং সান সু চি বাবার সম্মান ভাঙিয়ে শীর্ষে উঠেছেন। দেশটিতে তারমতো খুব কম লোকই এত সম্মানের চূড়ায় উঠেছেন।

তিনি এতটা পাওয়ার যোগ্যও নন। মিয়ানমারের নেত্রী সু চিকে মাথায় তুলেছিল পশ্চিমারাই। কিন্তু তিনি সর্বদা তাদের হতাশ করে চলেছেন। শনিবার মার্কিন টিভি নেটওয়ার্ক সিএনএন এক বিশ্লেষণে এ তথ্য দিয়েছে।

১৯৯১ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন সু চি। গণতন্ত্র রক্ষায় এক যুগেরও বেশি সময় কারাগারে ছিলেন। তার এ আত্মত্যাগ পেয়েছিল কিংবদন্তির সম্মান। কিন্তু রোহিঙ্গা ইস্যুতে নিজ হাতেই সেই নৈতিক ভাবমূর্তি গুঁড়িয়ে দিয়েছেন সু চি।

মন্ত্রিসভায় থাকা সামরিক বাহিনীর জেনারেলদের গত বছর ‘সুইট’ বলে সম্বোধন করেছিলেন তিনি। এবার তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে মানবতাকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দিলেন সু চি।

মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে যে সু চি ১৫ বছর অন্তরীণ ছিলেন, তিনিই এখন সামরিক বাহিনীর সুরে তাল মেলাচ্ছেন। তবে সু চির এত সম্মান-মর্যাদা পাওয়ার পেছনে পশ্চিমাদের হাত রয়েছে। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের ধারণা অনুসারে, সু চির মতো খুব কম লোকই এত উপরের দিকে উঠেছে।

২০১৩ সালে সু চি গৃহবন্দি থেকে মুক্তি পান এবং মিয়ানমারে সামরিক সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার চাপ কমে আসে। তখন তিনি ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ‘একটি দেশের বিবেক এবং মানবতার নায়িকা’ হিসেবে প্রশংসিত হয়েছিলেন। মুক্তির ২ বছর পর ২০১৫ সালে কয়েক দশক বন্ধ থাকা মিয়ানমারের প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচনে সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) জয়ী হয়েছিল। ওই মুহূর্তটি ইতিহাসে তাকে এশিয়ার নেলসন ম্যান্ডেলা হিসেবে স্থান করে দেয়।

মার্কিন ম্যাগাজিন তাকে ‘চিলড্রেন অব গান্ধী’ উপাধি দিয়েছিল। ফরাসি-ব্রিটিশ চলচ্চিত্র পরিচালক লাক বেসন সু চিকে ‘দ্য লেডি’ খেতাব দিয়ে তার জীবনী নিয়ে প্রামাণ্য চিত্র বানিয়েছেন।

তবে এত মর্যাদা-সম্মান সব একদিনেই খুয়েছেন সু চি। মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে হাজার হাজার রোহিঙ্গা মুসলমানদের গণহত্যার অভিযোগে গত সপ্তাহে ‘মানবতার নায়িকা’ হেগের আন্তর্জাতিক আদালতে সেনাবাহিনীকে রক্ষায় হাজির হয়েছিলেন। সেখানে রোহিঙ্গা গণহত্যাকে কোনো পাত্তা

না দিয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষে মিথ্যা দিয়ে সাফাই গেয়েছেন। ২০১৫ সালের নির্বাচনে জিতে সু চির নেতৃত্বাধীন বেসামরিক সরকার ক্ষমতায় এলেও, তাতে সামরিক বাহিনীর প্রভাব কমেনি। বরং এখনও মিয়ানমারের দণ্ডমুণ্ডের কর্তা সে দেশের সামরিক বাহিনী। পার্লামেন্টেও তাদের অংশীদারত্ব আছে।

আছে প্রতিরক্ষা, স্বরাষ্ট্র ও সীমান্তসংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণ। এমন পরিস্থিতিতে দেশটির নেতা সু চির কোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া ও তা বাস্তবায়নের ক্ষমতা নেই।

সু চির সমর্থকরা এতদিন বলে আসছিলেন, এই ক্ষমতাহীনতার কারণেই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর হওয়া নির্যাতন-নিপীড়নের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছেন না শান্তিতে নোবেলজয়ী এ রাজনীতিক। তবে দ্য হেগে যে ভাষায় সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সু চি, তারপর আর এ যুক্তিকে ঢাল বানানো যাচ্ছে না।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!