• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

পুরুষ ফুটবলে মহিলা কোচ, অনন্য নজির মিরোনার


ক্রীড়া প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৯, ০৪:৪৮ পিএম
পুরুষ ফুটবলে মহিলা কোচ, অনন্য নজির মিরোনার

ছবি মিরোনার ফেসবুক থেকে নেওয়া

ঢাকা: একটা সময় ছিল যখন বাংলাদেশের মেয়েরা নিজেদের চার দেয়ালের মাঝে বন্দি রাখতেন। ঘর সংসার আর সন্তান পালন করাই ছিল তাদের মূখ্য কাজ। কিন্তু দিন বদলেছে। মেয়েরা খোলস থেকে বেরিয়ে এসেছে। ফুটবল কিংবা ক্রিকেট স্বমহিমায় উদ্ভাসিত এই মেয়েরা। অনেক ক্ষেত্রেই তারা পুরুষদের ছাপিয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশের জাতীয় ফুটবল দল যখন ফিফা র্যাং কিংয়ের তলানিতে নেমেছে তখন সুড়ঙ্গে আলোর পথ দেখিয়ে যাচ্ছেন এই মেয়েরাই। নিজেদের সাফল্যগাঁথা দিয়ে ঢেকে দিচ্ছেন পুরুষ দলের ব্যর্থতা। গত ক’বছর হলো আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে রোশনাই ছড়াচ্ছে বাংলাদেশের মেয়েরা।

বাংলাদেশের ফুটবল কর্তারাও এখন এই মেয়েদের নিয়ে গর্বের ঢেকুর তোলেন। সন্দেহাতিতভাবেই মেয়েদের ফুটবল সামনের দিকে এগোচ্ছে। ঠিক এই সময়েই বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসেই নয়া নজির গড়লেন এক সময় জাতীয় দলে লাল-সবুজের প্রতিনিধিত্ব করা মিরোনা। বাংলাদেশের পেশাদার লিগে ঢাকা সিটি এফসির কোচ হয়ে তিনি বুঝিয়ে দিলেন চাইলে মেয়েরা সবই করতে পারেন।

পুরুষ দলে মহিলা কোচ-ইউরোপের দেশগুলোতে এমনটা দেখা গেলেও উপমহাদেশে এই চল নেই। এখানেই ব্যতিক্রম মিরোনা। ঢাকা সিটির প্রধান কোচ হয়েছেন তিনি। বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে মিরোনাই প্রথম যিনি কিনা পেশাদার ক্লাবের কোচের দায়িত্বে একজন মহিলা।

কোচিংয়ের যাবতীয় শর্ত মেনেই মিরোনাকে দেওয়া হয়েছে ঢাকা সিটির দায়িত্ব। বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশীপ লিগে কোচ হওয়ার ন্যূনতম যোগ্যতা ‘বি’ লাইসেন্সধারী হওয়া। সেই যোগ্যতা পূরণ করেছেন মিরোনা। এখানেই তিনি থামতে চান না। জাতীয় দলের সাবেক মিডফিল্ডারের স্বপ্নের পরিধি আরও বড়। তাঁর ইচ্ছা চলতি বছরেই সম্পন্ন করতে চান ‘এ’ লাইসেন্সও।

একজন মহিলা হয়ে গোটা একটা পুরুষ দলকে সামলাচ্ছেন মিরোনা। তাঁকে দেখে মেয়েরা প্রেরণা খুঁজে নিতে পারেন। সেই সব মেয়েদের উদ্দেশ্যে একটা বার্তাও দিয়েছেন ঢাকা সিটির প্রধান কোচ। তিনি সোনালীনউজকে বলছিলেন, ‘অন্য মেয়েদের প্রতি আমার এই বার্তাটাই থাকবে যে, তারা কাজ করে যাবে। আপনি যতি কোয়ালিটি সম্পন্ন হন তাহলে পারফরম্যান্স দেখানোর সুযোগ পাবেন। আমাদের সুযোগ দেওয়া হলে আমি মনে করি মেয়েরা আরও এগিয়ে যাবে।’

একজন মহিলা হয়ে মিরোনা মেয়েদের দলকে কোচিং করাতে পারতেন, তা না করে কেন তিনি পুরুষ দলকে বেছে নিলেন? মিরোনা বলছেন,‘ আমাদের ‘বি’ লাইসেন্স সার্টিফিকেট পাওয়ার জন্য যখন পরীক্ষা দিতে হয় তখন অনূর্ধ্ব-১৭ বয়সী খেলোয়াড়দের নিয়ে কাজ করতে হয়, তারা হতে পারে ছেলে অথবা মেয়ে। সেখানে আমি ছেলেদের সঙ্গে কাজ করেছি। কোচ হিসেবে যা যা দরকার সবই আমার মধ্যে আছে। তা না হলে তো আপনি লাইসেন্স পাবেন না। ওখানে ভালোভাবে কাজ করেছি। এখন কোনো সমস্যা মনে হচ্ছে না।’

মিরোনার বাংলাদেশ জাতীয় দলে অভিষেক ২০০৯-এ। এরপর ২০১৬-তে এসে ফুটবল ছেড়ে দেন তিনি। অ্যাথলেট হিসেবে খেলেন বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও বিজেএমসির হয়ে। সবমিলিয়ে মিরোনার ঝুলিতে রয়েছে ১৩টি সোনার পদক। এখন কোচিং ক্যারিয়ারে তিনি কেমন করেন সেটা দেখার অপেক্ষা। যদিও কোচ হিবেবে অভিষেকটা সুখকর হয়নি মিরোনার। সোমবার ফরাশগঞ্জের কাছে তাঁর ক্লাব ঢাকা সিটি যে ০-১ গোলে হেরে গেছে।

সোনালীনিউজ/আরআইবি/জেডআই

Wordbridge School
Link copied!