• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

পুলিশ বিভাগে আলোর ঝিলিক


নিজস্ব প্রতিবেদক অক্টোবর ১৪, ২০১৯, ১২:০৭ পিএম
পুলিশ বিভাগে আলোর ঝিলিক

মুন্সীগঞ্জ : মুন্সীগঞ্জ জেলার ছয়টি থানার উন্নয়ন, থানার প্রধান ফটক নির্মাণ, রাস্তা প্রস্তুতকরণ, মুন্সীগঞ্জের প্রত্যকটি থানাকে সুসজ্জিতভাবে আধুনিক রূপে সাজানো হয়েছে। আনা হয়েছে পুলিশে শৃঙ্খলা। এ সব কাজের জন্য ইতোমধ্যে বেশ প্রশংসা পেয়েছেন মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম। ১০০ টাকায় পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগের প্রবর্তক ছিলেন মুন্সীগঞ্জের এই পুলিশ সুপার।

এতে করে মুন্সীগঞ্জ পুলিশ বিভাগে আলোর ঝিলিক পড়েছে। জেলা জুড়ে মাদক নির্মূল ও আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা এবং কোনো ধরণের ঘুষ বা অর্থনৈতিক লেনদেন ছাড়াই পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরি পেয়েছেন মুন্সীগঞ্জের নারী-পুরুষরা।

২০১৬ সালে মুন্সীগঞ্জে যোগদানের পরই তিনি ১০০ টাকায় পুলিশ নিয়োগের ঘোষণা দেন এবং তা বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রচারের ব্যাবস্থা করেন। কোন শ্রেণির দালালের কাছে ধরা না দিতে সাবধান করে ব্যাপক প্রচারণা চালান। পরে ২০১৭ সালে ৮৩ জন, ২০১৮ সালে ৮৫ জন এবং চলতি বছর ২২৬ জনকে যোগ্যতার ভিত্তিতে পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি প্রদান করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম।

এছাড়াও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলমই প্রথম ২০১৭ সালে পুলিশ সদস্যদের ডোপ টেষ্ট চালু করেন। যার মধ্যমে মাদকাসক্ত পুলিশ শনাক্ত করা হচ্ছে। তাদের তিনি প্রথমবারের মতো মাফ করে চিকিৎসার মাধ্যমে ভাল হওয়ায় সুযোগ করে দেন।

এই বছর দেশের বিভিন্ন জেলায় ১০০ টাকায় পুলিশের চাকরি হয়। এরআগে ২০১৭ সালে ১০০ টাকায় পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি দেন মুন্সীগঞ্জ পুলিশ সুপার। চাকরি পাওয়াদের বেশির ভাগই হতদরিদ্র দিনমজুর, চা বিক্রেতার সন্তান।

চাকরিপ্রাপ্তদের কয়েকজন জানান, পুলিশ সুপারের বিজ্ঞাপন দেখে চাকরির ইন্টারভিউ দেন। এরপর শুধুমাত্র নির্ধারিত ফর্মের ১০০ টাকা খরচ ব্যতিত অন্য কোন খরচ ছাড়াই চাকরি হওয়ায় তারা পুলিশ সুপার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

এদিকে, গত তিন বছরে স্বচ্ছতার সঙ্গে পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি দেয়া ছাড়াও জেলার পুলিশের বিভিন্ন স্থাপনা ও অবকাঠামো সুন্দর ও আধুনিক রূপে রূপ দেয়া হয়েছে।

থানাগুলোর অফিসার ইনচার্জদের (ওসি) রুম শীতাতপ নিয়ন্ত্রিতসহ স্থানীয় অন্যান্য ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের রুমও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত করেছে। ডাইনিং হল, নারী পুলিশ ব্যারাক, বাউন্ডারি দেয়াল নির্মাণ, টাইলস বসানো, ফুলের বাগান, পুনাক পুলিশ পার্ক, থানা ও পুলিশ কর্মকর্তাদের বসার কক্ষ সৌন্দর্য্য বর্ধণ, গাড়ি রাখার গ্যারেজ, পোশাকে শৃঙ্খলা, নিয়মিত প্যারেড, ব্যায়ামাগার নির্মাণ, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত লাইব্রেরি নির্মাণ,পুলিশের রেশনিং খাবারের উন্নতকরণ, পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থাসহ পুলিশের কল্যাণে নানা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

মুন্সীগঞ্জ পুলিশ সুপারের বিভিন্ন কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করে তার অধীনস্থ কর্মকর্তারা জানান, গত তিন বছরে তারা প্রতিযোগিতামূলকভাবে উন্নয়ন ও সৌন্দর্য্যবর্ধণে কাজ করে গেছেন।

মুন্সীগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আনিচুর রহমান বলেন,স্যার যে স্বপ্ন নিয়ে এই জেলায় যোগদান করেছেন, তার সে স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। তিনি সৎ, নিষ্ঠাবান ও আদর্শবান একজন পুলিশ অফিসার।

সিরাজদিখান থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, সিরাজদিখান থানাটি অবকাঠামোগতভাবে সবচেয়ে বেশি অবহেলিত ছিলো। স্যারের নির্দেশে আমরা প্রতিটি থানায় প্রতিযোগিতামূলকভাবে সৌন্দর্য্য বর্ধণ করেছি।

স্ত্রী কেকা সহ পুলিশ সুপার

গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ বলেন, উন্নয়ন ও সৌন্দর্য্য বর্ধণে বাংলাদেশের যে কোন জেলা থেকে এগিয়ে আছে মুন্সীগঞ্জ।শুধু থানার সৌন্দর্য্যবর্ধণই নয়, স্যারের প্রত্যেকটি কার্যক্রমই পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তিতে সুনাম এনেছে।

মুন্সীগঞ্জ সদর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. আশফাকুজ্জামান বলেন, পুলিশ সুপার স্যারই সর্বপ্রথম মুন্সীগঞ্জে ১০০ টাকায় পুলিশ বাহিনীতে নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করেন। এবং এখনো তা করে যাচ্ছেন। পুলিশের রেশনিং খাবারেও সফলতা এনেছেন। আগে খোলা আটার পরিবর্তে এখন উন্নত মানের চাল আসছে। এতে পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা বেড়েছে।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম বলেন, কর্ম-পরিবেশ ভালো থাকলে সেখানে কাজের উৎসাহ-উদ্দীপনা বেড়ে যায়। সে লক্ষ্যে প্রত্যেকটি থানাকে সুসজ্জিতভাবে আধুনিকভাবে রূপ দেয়া হয়েছে।

তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি বক্তব্যে ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, পুলিশের প্রতিটি স্থাপনা থাকবে আধুনিক। মানুষ পুলিশের দপ্তরে এলে মানুষের মনে পুলিশ সম্পর্কে পজেটিভ ধারণা আসে। সে লক্ষ্যে গত তিন বছরে আমি চেষ্টা করেছি, মুন্সীগঞ্জ জেলার প্রত্যেকটি পুলিশের স্থাপনা ও অবকাঠামোকে সুন্দর এবং আধুনিকরূপে রূপ দেয়ার।

তিনি আরো বলেন, পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ জেলার শীর্ষ সাত মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। পুলিশের বিভিন্ন কর্মতৎপরতার কারণে এই জেলায় মাদকসহ অন্যান্য ক্রাইম নিয়ন্ত্রণে এসেছে।

এদিকে, চাকরি জীবনে মুন্সীগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক দুই বার, আইজি ব্যাজ ৫ বার, জাতিসংঘ পদক ও শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক (আবুল কাশেম ফজলুল হক) পদক পেয়েছেন। পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলমের সহধর্মিনী জেসমিন কেকাও বাংলাদেশ পুলিশ হেড কোয়ার্টার্সের পুলিশ সুপার পদে দায়িত্ব পালন করছেন।

উল্লেখ্য, মুন্সীগঞ্জ জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম পিপিএম মহোদয়ের সহধর্মিনী জেসমিন কেকাও পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত আছেন।

সোনালীনিউজ/এএস

Wordbridge School
Link copied!