• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০
এস আলম ও মেঘনা গ্রুপের বড় চালান আসা শুরু

পেঁয়াজে একটুখানি স্বস্তি


নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ২২, ২০১৯, ০৬:২২ পিএম
পেঁয়াজে একটুখানি স্বস্তি

ঢাকা : বড় শিল্প গ্রুপগুলোর আমদানি করা পেঁয়াজ দেশে আসতে শুরু করেছে বুধবার থেকে। সংকট থাকা পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিনই এখন কার্গো উড়োজাহাজে কমবেশি পেঁয়াজ আসবে। এতে পাইকারি বাজারে ইতোমধ্যে কমতে শুরু করেছে দাম। গতকাল পাইকারি বাজারে দেড়শ টাকার নিচে বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি পেঁয়াজ।

বুধবার (২০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় আকাশপথে পাকিস্তানের করাচি থেকে ৮২ টন পেঁয়াজের প্রথম চালান এসেছে ঢাকার শাদ এন্টারপ্রাইজের। ওইদিন রাতে এস আলম গ্রুপের চালান আসতে শুরু করেছে।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিসমিল্লাহ এয়ারলাইনসের কার্গো বিমানে আরো ১০৫ টন পেঁয়াজ হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছেছে। সব মিলিয়ে পর্যায়ক্রমে ৫৮ হাজার ৫০০ টন পেঁয়াজ আমদানি করবে এস আলম গ্রুপ। এসব পেঁয়াজ মিসর ও তুরস্কের।

জানা গেছে, পেঁয়াজ আমদানির জন্য ইতোমধ্যে ১০টি কার্গো বিমান ভাড়া করেছে এস আলম। যার প্রতিটিতে ১০৫ থেকে ১১০ টন পেঁয়াজ আসবে।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) কায়রো এয়ারের একটি কার্গো বিমানে আরো ৫৫ টন পেঁয়াজ ঢাকায় পৌঁছাবে।

অন্যদিকে দ্রুত পৌঁছানের জন্য গ্রুপটির মোট ১ হাজার ৭৫০ টন পেঁয়াজ এভাবে কার্গোতে আনা হবে। বাকিটা আসছে সমুদ্রপথে।

অন্যদিকে শুক্রবার (২২ নভেম্বর) মেঘনা গ্রুপের পেঁয়াজও তুর্কি এয়ারলাইনসে ঢাকায় এসে পৌঁছাবে বলে প্রতিষ্ঠানটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আরো আসবে মেঘনার আমদানি করা পেঁয়াজ। এছাড়া এ প্রতিষ্ঠানটি ১২ থেকে ১৫ হাজার টন পেঁয়াজ সমুদ্রপথে আসবে আগামী ১ ডিসেম্বর।

এদিকে আমদানি করা পেঁয়াজ সরাসরি বাজারে বিক্রির পরিবর্তে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি করা হবে। সেজন্য ইতোমধ্যে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বিভাগ ও জেলা পর্যায়ে পেঁয়াজ বিক্রি কার্যক্রম জোরদার করেছে সরকার। গতকাল মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ঢাকা শহরে আরো ১৫টি স্থান বাড়িয়ে মোট ৫০টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ট্রাকে করে এ পেঁয়াজ বিক্রি করা হচ্ছে।

ঢাকায় আগে ৩৫টি স্থানে ট্রাক সেলের মাধ্যমে ৪৫ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছিল, এখন তা বাড়িয়ে ৫০টি স্থান করা হয়েছে। অন্যদিকে বিভাগ ও জেলা পর্যায়ে টিসিবির ডিলাররা পেঁয়াজ বিক্রি করবেন। তবে কতটি স্থানে টিসিবির মাধ্যমে পেঁয়াজ বিক্রি করা হচ্ছে সে তথ্য জানা যায়নি।

এ বিষয়ে টিসিবির মুখপাত্র হুমায়ূন কবির বলেন, ইতোমধ্যে প্রতিটি বিভাগে ৫ থেকে ১০টি করে ট্রাক সেল চালু হয়ে গেছে। জেলাগুলোতেও হচ্ছে। তবে সুনির্দিষ্ট সংখ্যা এখনো ঠিক হয়নি। ঢাকার মতো ৪৫ টাকা দরেই এখন সেসব স্থানে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ‘সরকার বিশেষ উদ্যোগে আকাশ ও সমুদ্রপথে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ আমদানি শুরু করেছে। ইতোমধ্যে চালানগুলো দেশে পৌঁছাতে শুরু করেছে। বিভিন্ন এয়ারলাইনসের মাধ্যমে মিসর, তুরস্ক, পাকিস্তান থেকে এসব পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। পেঁয়াজের মূল্যও দ্রুতগতিতে কমছে। এখন পেঁয়াজের সরবরাহ ও মূল্য স্বাভাবিক হচ্ছে।’

গত সেপ্টেম্বরে ভারতে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়া এবং পরে রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ায় বাংলাদেশে পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকে। পুরো অক্টোবরজুড়েই দেশে পেঁয়াজের দাম ওঠানামার মধ্যে ছিল। ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের পর প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম আড়াইশ টাকা ছাড়িয়ে যায়। সে সময় পেঁয়াজ আতঙ্ক পরিণত হয় মহা আতঙ্কে। যদিও এখনো পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিক রয়েছে। সাধারণত দেশের মানুষ ২৫ থেকে ৩০ টাকায় পেঁয়াজ খেতে অভ্যস্ত।

এদিকে গতকাল রাজধানীর শ্যামবাজারে মিয়ানমার থেকে আমদানি করা প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকা দরে। এ ছাড়া পুরনো দেশি পেঁয়াজের দর ১৪০ থেকে ১৫০ টাকার মধ্যে।

অন্যদিকে নতুন দেশি পেঁয়াজ মিলছে ১০০ টাকার মধ্যেই। যদিও খুচরা বাজারে এখনো ততটা কমেনি পেঁয়াজের দর। এখনো পেঁয়াজ কিনতে ভোক্তাকে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা গুনতে হয়।

শ্যামবাজার বণিক সমিতির সহসভাপতি হাজি মো. মাজেদ বলেন, এখন আর তেমন সমস্যা দেখছি না। আমদানি বাড়তে থাকা এবং নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসতে থাকায় গত কয়েকদিন ধরে পেঁয়াজের দাম কমছে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!