• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রকৃতির রহস্যময় সৌন্দর্যে ঘেরা ‘পেরু’


ফিচার ডেস্ক মে ১৬, ২০১৯, ০২:১৯ পিএম
প্রকৃতির রহস্যময় সৌন্দর্যে ঘেরা ‘পেরু’

ঢাকা: দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরু। আপনি যদি একজন ভ্রমণপিপাসু হয়ে থাকেন আর পৃথিবীর অদ্ভুত সৌন্দর্যগুলো নিজের চোখে দেখার ইচ্ছা পোষণ করেন তবে পেরুতে অবশ্যই যাওয়া উচিত। পেরুভিয়ান অ্যামাজনের ফুটন্ত পানির নদী থেকে শুরু করে মিল্লাপুর প্রকৃতির উপহ্রদ কিংবা কসকোর রংধনু পাহাড়— আপনাকে মুগ্ধ করতে প্রকৃতি এখানে সেজে রয়েছে একটু ভিন্ন আঙ্গিকে।

কেনো যাবেন পেরুতে? কী আছে সেখানে দেখার মতো? চলুন জেনে নেওয়া যাক পেরুর কিছু রহস্যময় সৌন্দর্য সম্পর্কে-

কসকোর ‘পলকোয়ো লাল নদী’: নদীতে বয়ে চলেছে লাল রঙা পানি, হুট করে দেখলে মনে হবে যেন রক্তের স্রোত ভেসে যাচ্ছে। এমনই লাল পানির নদী রয়েছে পেরুর কসকো শহরের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে। মূলত এই নদীটির উৎপত্তি হয়েছে পলকোয়ো রংধনু পার্বত্য উপত্যকা থেকে।

এই উপত্যকাটি নানা রকম খনিজে পরিপূর্ণ। এ পর্বতের যে অংশ দিয়ে লাল পানির নদী বয়ে গিয়েছে সে অংশে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ আয়রন অক্সাইড। বিজ্ঞানীদের মতে, ওই অংশ দিয়ে নদী বয়ে যাওয়ার সময় পানির সঙ্গে প্রচুর পরিমাণ আয়রন অক্সাইড মিশে যায়। আর সে কারণেই পানির রং হয়ে যায় রক্ত লাল।

তবে কসকোর এই লাল নদীর সৌন্দর্য সবচেয়ে বেশি উপভোগ করা যায় বর্ষাকালে। বছরের অন্যান্য সময় এই নদী পানি খুব কম থাকে আর তার রং থাকে মাটির মতো কালচে বাদামি। যদি আপনি বর্ষাকালে পেরুতে যান তবে লাল পানির এই নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভুলবেন না যেন।

পালকোয়ো রঙধনু পাহাড়: লাল নদী পাশেই রয়েছে অদ্ভুত সুন্দর এক পাহাড়। সাধারণ পাহাড়ের চাইতে এটি পুরোপুরি ভিন্ন। কারণ এই পাহাড় সবুজ রঙা নয় বরং রংধনুর মতো নানা রঙে রাঙানো। লাল নদীকে পুরোপুরি দেখতে চাইলে রংধনু পাহাড়ে উঠতে হবে আপনাকে।

রংধনু পাহাড়ে এখনও অব্দি লোক সমাগম খুব কম। তবে আপনি যদি পেরু ভ্রমণে যান তবে কসকো শহরের কাছে থাকা এ পাহাড় ভ্রমণে অবশ্যই যাওয়া উচিত। বেশিরভাগ মানুষই একদিনের ট্যুরে এখানে আসেন তবে অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় মানুষ যারা পেরুর প্রকৃতিকে একটু বেশি কাছ থেকে দেখতে চান তাদের জন্য এই রংধনু পাহাড় ভ্রমণের জন্য অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান।

একটু দুঃসাহসিক অভিযানে বের হলে কসকো এই সুন্দর জায়গায় আপনি খুঁজে পাবেন ‘ক্লাসিক ভিনিকুনকা রংধনু পাহাড়’, অসাধারণ ‘কোসোয়াচাকা ইনকা দড়ি ব্রিজ’ এবং ‘ওয়াকোয়ারাপুকারার রাজকীয় ধ্বংসাবশেষ’। তাই কসকোর ভ্রমণপথে এই অঞ্চলের জন্য কিছুটা সময় রাখতেই পারেন।

ভ্রমণের সেরা সময়: কসকোর লাল নদী ভ্রমণের সেরা সময় পেরুর বর্ষাকাল। সাধারণত ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত এখানে বর্ষা স্থায়ী হয়। তবে পুরো পেরু ভ্রমণ করতে চাইলে উপযুক্ত সময় হলো মে থেকে নভেম্বর। কারণ এসময় আবহাওয়াজনিত সমস্যাগুলো সহজে এড়ানো সম্ভব হয়।

সবকিছু মিলিয়ে আপনি যদি পেরুতে সুন্দর ভ্রমণ করতে চান আবার লাল পানি নদীর সৌন্দর্যও দেখতে চান তবে এপ্রিল বা মে মাস আপনার জন্য সেরা। কারণ তখন বর্ষাকাল শেষ হলেও নদীর পানি থাকে বাড়তি। আর তার রংও থাকে কিছুটা লাল।

পেরুর ফুটন্ত পানির নদী: প্রকৃতির সব রহস্য যেন এসে ভিড় করেছে পেরুতে। এই যেমন পেরুর সেন্ট্রাল জঙ্গলের প্রত্যন্ত অঞ্চলে থাকা ফুটন্ত পানির নদী। বিজ্ঞানীরাও এখনও এই নদীর রহস্য পুরোপুরি বুঝে উঠতে পারেনি। একটা সময় এই নদীকে ঐশ্বরিক মনে করা হতো এবং এর অস্তিত্ব কেবল স্থানীয় অধিবাসীরা জানতেন।

এখন অবশ্য বিজ্ঞানীরা এই নদীটি নিয়ে গবেষণা শুরু করেছেন। এখানের পানির উষ্ণতার উৎপত্তিস্থল কী সেটিই খুঁজে বের করা চেষ্টা করছেন তারা। প্রকৃতির এক রহস্যময় সৌন্দর্য হলো এই ফুটন্ত পানির নদী।

খেয়াল রাখুন-
১. আপনার যদি উচ্চতাভীতি থাকে তবে রংধনু পাহাড় ভ্রমণের সময় প্রয়োজনীয় ওষুধ সাথে রাখুন।

২. শিশু নিয়ে ভ্রমণ করলে তার প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো সবসময় হাতের কাছেই রাখুন।

৩. আপনার টুরিস্ট গাইডের দেখানো পথেই চলুন।

তবে আর কী, সময় সুযোগ মতো চলে যান পেরু আর নিজ চোখেই দেখে আসুন লাল পানি নদী কিংবা রংধনু পাহাড়ের সৌন্দর্য। তথ্যসূত্র- কসকোনেটিভ.কম।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এসএস

Wordbridge School
Link copied!