• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

‘প্রতিবার যৌনমিলনের জন্য মাত্র ৫০ সেন্ট পেতাম’


আন্তর্জাতিক ডেস্ক মে ২২, ২০১৯, ০২:৫৫ পিএম
‘প্রতিবার যৌনমিলনের জন্য মাত্র ৫০ সেন্ট পেতাম’

ঢাকা: পশ্চিম আফ্রিকার দেশ সিয়েরা লিওনে নারীর প্রতি সহিংসতা মহামারি আকারে ধারণ করেছে। সেখানে গত এক বছরে ধর্ষণের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়ে দ্বিগুণ হয়ে গেছে। 

দেশটিতে সম্প্রতি ধর্ষণের ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ায় জনমনে প্রবল উদ্বেগ দেখা দেয়। খোদ প্রেসিডেন্টের ভাষ্য থেকে জানা গেছে, সিয়েরা লিওনে ধর্ষণের শিকার ভুক্তভোগীদের এক তৃতীয়াংশই শিশু। যারা এসব ঘটনায় দায়ী তাদেরকে শাস্তি হবে মৃত্যুদণ্ড। সমালোচকরা জানিয়েছেন, সেখানে ধর্ষণের অনেক ঘটনাতেই সাজা প্রদানের ঘটনা ঘটে না।

গত বছর ধর্ষণের সাড়ে আট হাজার মামলা নথিভুক্ত হয়েছিল। তার আগের বছর এ সংখ্যা ছিল প্রায় চার হাজার। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন মাত্র ৭৫ লাখ জনসংখ্যার দেশটিতে ধর্ষণের এমন আরও অনেক ঘটনা ঘটে যা আনুষ্ঠানিকভাবে নথিভুক্ত হয় না।

ইবোলা সংক্রমণের কারণে সিয়েরা লিওনে অনেক মেয়ে অনাথ হয়ে পড়েছেন, যারা টিকে থাকার জন্য বেছে নিয়েছেন যৌনকর্মীর জীবন।

বিবিসির নিউজে উঠে এসেছে এক নারীর ভয়ংকর বর্ণনা। ভিডিওটি দেখুন- https://www.bbc.com/bengali/news-48363155

অবৈধ সম্পর্ক বন্ধ এবং কুমারীত্ব অক্ষুণ্ণ রাখতে সিয়েরা লিওনে এখনও চলছে খতনা প্রথা!

মেয়েদের খতনা। এমটি শুনে নিশ্চয়ই অনেকে বেশ অবাক হচ্ছেন! কিন্তু অবাক হলেও এটি এখনো চালু আছে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে। যাকে বলা হয় ফিমেল জেনিটাল মিউটিলেশন (মেয়েদের খৎনা)। আর সংক্ষেপে বলা হয় ‘এফজিএম’।

মূলত অবৈধ সম্পর্ক বন্ধ এবং কুমারীত্ব অক্ষুণ্ণ রাখতে মেয়েদের খতনা করার ছল। যন্ত্রণাদায়ক এ প্রথা অনেক আফ্রিকান দেশেই নিষিদ্ধ করা হয়েছে কিন্তু এখনো চালু আছে সিয়েরা লিওনে। শুধু তাই নয়, খতনা করা হয়েছে এমন জীবিত নারীর সংখ্যা ২০ কোটির বেশি।

সিয়েরা লিওনের মেয়েদের খতনা করিয়ে থাকেন এমন এক নারী হাজাম মেমিনাতু তুর। বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বললেন, ‘সিয়েরা লিওনের অধিকাংশ মেয়েরই এফজিএম হয়েছে। কারণ যে মেয়ের খৎনা করানো হয়নি, সে এক পুরুষে সন্তুষ্ট থাকতে পারে না! আর যাদের এটা করানো হয়েছে তারা যৌনজীবনে সন্তুষ্ট থাকে, একটি মাত্র পুরুষের সঙ্গেই সারাজীবন কাটায়।’

যদিও খতনা একটা নিন্দিত বা যন্ত্রণাদায়ক প্রথা। এতে মেয়েদের মৃত্যুও হয়ে থাকে। তবে এসব মানতে নারাজ ৫৬ বছর বয়সী মেমিনাতু। তার বক্তব্য, এগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। এটা মেয়েদের জন্য ভালো।মেমিনাতু মেয়েদের খতনার পক্ষে বললেও এটা করানো হয়েছে এমন মেয়েরা এর বিপক্ষে। অনেকেই পরবর্তী জীবনে তাদের যন্ত্রণা ও কষ্টের কথা বলেছেন।

এসব অবিযোগ অস্বীকার করে ফ্রিটাউনের বস্তিতে তার ঘরে ঝোলানো নিজের মেয়ের ছবি দেখিয়ে মেমিনাতু বললেন, ‘আমার মেয়ের এ অপারেশন করানো হয়েছে। কিন্তু সে তো ভালো আছে, কলেজে পড়ছে। আমরা মেয়েদের ব্যথা দিই না, এটি একটি মহান এবং প্রাচীন ঐতিহ্য।’ প্রতি খতনা থেকে মেমিনাতুরা পান প্রায় ১৫ হাজার টাকার মতো (১৮০ ডলার)

সিয়েরা লিওনের নারী হাজাম মেমিনাতু, আফ্রিকান অন্য দেশগুলোর মতো সিয়েরা লিওন সরকারও যদি এ প্রথা নিষিদ্ধ করে তাহলে কী করবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বললেন, ‘যদি এদেশের সরকার এ প্রথা নিষিদ্ধ করে, তাহলে আমরা প্রেসিডেন্টের অফিসে জোর করে ঢুকে পড়ে এর প্রতিবাদ করবো।’ পরক্ষণেই একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে আবার বললেন, ‘তারপর যদি বন্ধ করে দেয়, তাহলে সরকারকে আমাদের করার মতো একটা কাজ দিতে হবে।’

মেয়েদের খতনার মাধ্যমে মূলত ক্লাইটোরিসের একটি অংশ কেটে ফেলে দেয়া হয়। ওই ক্লাইটোরিস কাটার ফলে কমে যায় তার যৌন চাহিদা। ধর্মীয় দোহাই দিয়ে এটি করা হলেও ইসলাম এ কাজকে উৎসাহিত করেনি।

খতনা করার কারণে মদিনার এক নারীকে হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেন, ‘নিজেকে কষ্ট দিও না। কারণ খতনা পুরুষের জন্য সন্তুষ্টিদায়ক, কিন্তু নারীর জন্য বেদনাদায়ক।’-বিবিসি বাংলা

সোনালীনিউজ/এইচএন

Wordbridge School
Link copied!