• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে যা বললেন ক্রীড়াচক্রের শফিকুল আলম


নিজস্ব প্রতিবেদক সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৯, ০৫:৫৮ পিএম
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে যা বললেন ক্রীড়াচক্রের শফিকুল আলম

ঢাকা: অবৈধ অস্ত্র ও গন্ধহীন হলুদ রঙের ইয়াবাসহ গ্রেফতার রাজধানীর কলাবাগান ক্রীড়াচক্র ক্লাবের সভাপতি শফিকুল আলম ফিরোজকে অস্ত্র ও মাদক পৃথক ২টি মামলায় ৫ দিন করে ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। 

শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বেলা ৩টার দিকে ঢাকা মহানগর হাকিম বেগম মাহমুদা আক্তারের আদালত এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে রাজধানীর কলাবাগান ক্রীড়াচক্র ক্লাবের সভাপতি শফিকুল আলম ফিরোজের বিরুদ্ধে ২০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছেন পুলিশ। হলুদ রঙের ইয়াবাসহ আটক ধানমন্ডি থানায় দায়ের করা অস্ত্র ও মাদক আইনের পৃথক দুই মামলায় দশ দিন করে বিশ দিনের রিমান্ড আবেদন করে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে পাঠানোর হয়েছে।  

এদিকে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শফিকুল আলম স্বীকার করেন যে, দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের ভয় দেখিয়ে কলাবাগান অফিস কক্ষে নিরাপদ আশ্রয় গড়ে তুলেছিলেন। এলাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজর এড়িয়ে অবৈধ মাদকদ্রব্য ক্রয়-বিক্রয়সহ বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপও করে আসছিলেন।

জানায় যায়, এমন অবস্থায় সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে, অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ও মাদকদ্রব্যের উৎস এবং এর সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের খুঁজে বের করার জন্য দুই মামলায় ১০ দিনে করে ২০ দিনের রিমান্ড আবেদন জানিয়ে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন ধানমন্ডি থানার এসআই আশিকুর রহমান ও এসআই নূরুদ্দিন।

 এর আগে, ধানমন্ডি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) পারভেজ বলেন, ধানমন্ডি থানায় অস্ত্র ও মাদক আইনে করা পৃথক দুই মামলায় শফিকুল আলমের বিরুদ্ধে দশ দিন করে বিশ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

ধানমন্ডি থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক আশ্রাফ আলী বলেন, আজ বেলা ৩টার দিকে ঢাকা মহানগর হাকিম বেগম মাহমুদা আক্তারের আদালতে এই রিমান্ড শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

এর আগে সকালে র‌্যাব বাদী হয়ে অস্ত্র ও মাদক আইনে মামলা দুটি করে। ধানমন্ডি থানার ডিউটি অফিসার কামরুন নাহার তথ্যটি নিশ্চিত করেন।

 তিনি বলেন, অস্ত্র আইনে দায়ের হওয়া মামলাটির নম্বর ২০ ও মাদক আইনে দায়ের হওয়া মামলার নম্বর ২১।

শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে শফিকুল আলমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র‌্যাব হেফাজতে নেয়া হয়। সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে কলাবাগান ক্রীড়াচক্র ক্লাবে অভিযান চালায় র‌্যাব।

অভিযান শেষে শুক্রবার রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-২ এর অধিনায়ক আশিক বিল্লাল জানান, অভিযানের সময় শফিকুলের কাছে সাত প্যাকেট হলুদ রঙের ইয়াবা পাওয়া গেছে। বাংলাদেশে এ যাবৎকালে এ ধরনের ইয়াবা পাওয়া যায়নি। এ ইয়াবায় কোনো প্রকার গন্ধ নেই। এ নতুন আবিষ্কার।

তিনি আরও বলেন, অভিযানে একটা বিদেশি পিস্তলসহ তিন রাউন্ড গুলি পাওয়া গেছে। যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি ক্যাসিনোতে খেলার কয়েন, স্কোরবোর্ড ও ৫৭২ প্যাকেট তাস উদ্ধার করা হয়েছে। কলাবাগান ক্রীড়াচক্র ক্লাবে যেসব জিনিসপত্র পাওয়া গেছে ধারণা করা হচ্ছে আগে এ ক্লাবে ক্যাসিনো খেলা হতো।

উল্লেখ্য, গত ১৮ সেপ্টেম্বর অবৈধ জুয়া ও ক্যাসিনো চালানোর অভিযোগে র‌্যাবের হাতে আটক হন ঢাকা দক্ষিণ মহানগর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া। অস্ত্র ও মাদকের পৃথক দুই মামলায় তাকে সাতদিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

সম্প্রতি ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কয়েকজন নেতার বিষয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারপরই ছাত্রলীগের পদ হারান শোভন-রাব্বানী। এরপর আটক হন খালেদ। শুক্রবার যুবলীগের অপর আলোচিত নেতা জি কে শামীমকে নিকেতনের নিজ কার্যালয় থেকে আটক করা হয়। রাজধানীর সবুজবাগ, বাসাবো, মতিঝিলসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রভাবশালী ঠিকাদার হিসেবে পরিচিত যুবলীগ নেতা এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীমকে আটক করে র‌্যাব।

শুক্রবার বেলা ১১টা থেকে জি কে শামীমের নিকেতনের ডি ব্লকের ৫ নম্বর রোডের ১৪৪ নম্বর বাসা ঘিরে ফেলে র‌্যাব। এর আগে নিকেতন এলাকায় জি কে শামীমের আরেকটি বাসা থেকে তাকে ডেকে আনা হয়। পরে তাকে আটক করেই অভিযান চালায় র‌্যাব। অভিযান শেষে সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটের দিকে শামীমকে র‌্যাব কার্যালয়ে নেয়া হয়। শামীমের সঙ্গে তার সাত দেহরক্ষীকেও আটক করা হয়। এ সময় বেশ কয়েকটি আগ্নেয়াস্ত্র ও মাদক উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার করা হয় এক কোটি ৮০ লাখ নগদ টাকা, ১৬৫ কোটি টাকার ওপরে এফডিআর (স্থায়ী আমানত)। এর মধ্যে তার মায়ের নামে ১৪০ কোটি টাকা ও ২৫ কোটি টাকা তার নামে।

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Wordbridge School
Link copied!