• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

প্রাথমিকের পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে বাড়তি ২৯ হাজার টাকা আদায়!


ভোলা ও কক্সবাজার প্রতিনিধি ডিসেম্বর ৯, ২০১৯, ০৩:০১ পিএম
প্রাথমিকের পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে বাড়তি ২৯ হাজার টাকা আদায়!

ভোলার তজুমদ্দিনের ২৮ নম্বর চাঁদপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বার্ষিক পরীক্ষার ফির নামে অতিরিক্ত চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিয়মবহির্ভূতভাবে অতিরিক্ত চাঁদা আদায় করলেও শিক্ষা অফিস তা বন্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। বাড়তি টাকা না দিলে পেটানো হয় বলেও জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরীক্ষার জন্য সরকার নির্ধারিত ফি হচ্ছে প্রথম শ্রেণিতে ১০ টাকা, দ্বিতীয় শ্রেণিতে ১৫ টাকা, তৃতীয় শ্রেণিতে ২৫ টাকা ও চতুর্থ শ্রেণিতে ৩০ টাকা। অথচ এ নিয়ম না মেনে চাঁদপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করছেন অতিরিক্ত চাঁদা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই বিদ্যালয়ের একাধিক সহকারী শিক্ষক বলেন, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে পরীক্ষার ফি বাবদ শিক্ষার্থীপ্রতি ৪০ টাকা হারে ৫ হাজার ৪০ টাকা, তৃতীয় শ্রেণিতে ৫০ টাকা হরে ৩ হাজর ১০০ টাকা ও চতুর্থ শ্রেণিতে ৬০ টাকা হারে ৭ হাজার ৩২০ টাকা করে ৩১০ জন শিক্ষার্থীর কাছে পরীক্ষার ফি বাবদ ১৫ হাজার ৪৬০ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।

সরকারি নিয়ম না থাকলেও স্কুলের সহকারী শিক্ষক মহিউদ্দিন সঞ্চয় ব্যাংকের নামে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মাসিক ২০ টাকা হারে চাঁদা উত্তোলন করেন। যার পরিমাণ বছর শেষে দাঁড়ায় ২৯ হাজার ২৮০ টাকা প্রায়। কোনো শিক্ষার্থী সঞ্চয় ব্যাংকের নামে ওই চাঁদা দিতে না চাইলে মারপিট করা হয় বলেও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়।

মহিউদ্দিন জানান, তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে সাপ্তাহিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং হাতের লেখা প্রশিক্ষণের আয়োজন করেন। ওই খরচ জোগান দিতেই এ চাঁদা উত্তোলন করেছেন। ওই বিদ্যালয়ের ২০১৭ সালে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নেওয়া এক শিক্ষার্থী সার্টিফিকেট উত্তোলন করতে গেলে তার কাছ থেকে ১০০ টাকা নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তার বাবা হুমায়ুন কবির।

এ বিষয়ে চাঁদপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিতালী দত্তের কাছে জানতে চাইলে তিনি একটু পরে কথা বলবেন বলে ফোনের লাইন কেটে দেন।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বলেন, অতিরিক্ত চাঁদা আদায়ের বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অপরদিকে কক্সবাজারে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণের সময় অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগ করছেন অভিভাবকরা। শহরের পৌর প্রিপারেটরি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলছেন তারা। ২০২০ সালে অনুষ্ঠিতব্য এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায় করলেও সাহস করে কেউ প্রতিবাদ করছে না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অভিভাবকরা বলছেন, পৌর প্রিপারেটরি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম একাধিক বিষয়ে অনুত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মূল পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন টাকার বিনিময়ে। এ জন্য প্রতি শিক্ষার্থীকে গুনতে হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা। এভাবে সম্প্রতি ২৮ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি।

এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমার ছেলে এসএসসির টেস্ট পরীক্ষায় দুই বিষয়ে ফেল করেছে। ওই ২ বিষয়ে উত্তীর্ণ দেখাতে ২০ হাজার টাকা দিয়েছি যাতে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে।

তবে প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কোনো শিক্ষার্থীর কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়নি। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন জানান, কোনো অভিভাবক বা শিক্ষার্থী এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ করলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সোনালীনিউজ/এইচএন

Wordbridge School
Link copied!