• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রাথমিকের বৃত্তি নিয়ে জরুরী কিছু পরামর্শ


সোনালীনিউজ ডেস্ক মে ১৭, ২০২০, ০১:১৮ পিএম
প্রাথমিকের বৃত্তি নিয়ে জরুরী কিছু পরামর্শ

উপজেলার সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক,যারা এই মহুর্তে শিওরক্যাশ প্রোর্টালে জানুয়ারী-জুন/২০২০ মাসের উপবৃত্তির চাহিদা আপলোড দিতে ব্যস্ত আছেন তারা পোস্টটি পড়লে এ বিষয়ে হয়ত কিছু তথ্য পেতে পারেন যাতে র্নিভুল ভাবে কাজটি করা যেতে পারে।

ইতোমধ্যে আমরা জেনেছি যে, ১৪ মে ছিল উপবৃত্তি আপলোডের শেষ তারিখ। উপবৃত্তির কাজ করতে গিয়ে আমাদের সচরাচর কিছু ভুল হয়। এতে করে দেখা যায় অনেক শিক্ষার্থীর মোবাইলে উপবৃত্তি আসে না। অনেকের নম্বর ঠিক থাকলেও উপবৃত্তি আসে না।

এবার দেখি উপবৃত্তির কাজ কিভাবে করলে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই কম থাকে-

১। প্রথমেই ‍উপবৃত্তির সফটকপি নিজ নিজ শিক্ষা অফিস থেকে পেনড্রাইভ দিয়ে সংগ্রহ করতে হবে।

২। সফটকপি থেকে হার্ডকপি প্রিন্ট নিয়ে কাজ করতে হবে। তবে ভুল কম হতে পারে।

৩। যদি নিজে কাজ করা যায় তবে ভুলের পরিমাণ এড়ানো সম্ভব।

৪। শিক্ষা অফিস থেকে অনেক কম্পিউটারের দোকান সফটকপি সংগ্রহ করে। কিংবা শিক্ষা অফিস থেকে অনেক কম্পিউটারের দোকানে সফটকপি দেওয়া হয়। এসব জায়গায় অনেককেই কাজ করতে হয়। সেক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতার সাথে কাজ করে নিতে হবে।

৫। অনেকেই বলেন যে, অফিস থেকে নেওয়া ফাইলে শ্রেণি পরিবর্তন করা যায় না। এটা ভুল, মোবাইল নম্বর থাকা ঘরটির মোবাইল নম্বর ছাড়া বাকিসব তথ্য পরিবর্তন করা যায়। এজন্য আপনাকে উপবৃত্তির সফটকপিটি ল্যাপটপ/ডেস্কটপ এ ওপেন করার পর Enable করে নিতে হবে। যদি Enable করতে না পারেন সেক্ষেত্রে ফাইলটি ওপেন করে Save as করে নিতে হবে। তবে Save as করে নিলে প্রকৃত ফাইলের নামের পূর্বে Copy of শব্দটি আসবে। Copy of শব্দটি বাদ দিয়ে ফাইলটি Save করে নিলে আর কোনো সমস্যা থাকবে না।

৬। তথ্য পরিবর্তনের ক্ষেত্রে কোন শিক্ষার্থীকে বাদ দিতে হলে Class এর ঘরে X দিতে হবে।

৭। নুতন সফটকপিতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে শিক্ষার্থীদের ক্লাস পরিবর্তন করানো থাকে। সেক্ষেত্রে কোন শিক্ষার্থী রিপিটার থাকলে Class এর ঘরে Class পরিবর্তন করে দিতে হবে। ধরা যাক, Class 3 এর একজন শিক্ষার্থী বার্ষিক পরীক্ষার ফল খারাপ করায় সে পুনরায় Class 3 তেই থাকবে। কিন্তু সফটকপিতে দেখা যাচ্ছে Class স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিবর্তন হয়ে তাকে Class 4 এ দেখাচ্ছে। সেক্ষেত্রে তার Class 4 এর জায়গায় Class 3 করে দিতে হবে এবং তার রোল নম্বরও পরিবর্তন করে দিতে হবে।

৮। অভিভাবকের জাতীয় পরিচয় পত্র দেখে জাতীয় পরিচয় পত্রের শেষের তিনটি নম্বর এন্ট্রি দিতে হবে।

৯। মোবাইল নম্বর পরিবর্তনের ক্ষেত্রে হার্ডকপির সর্বশেষ ঘরে/ NEW MOBILE NUMBER এর ঘরে নতুন মোবাইল নম্বর যোগ করতে হবে।

১০। শিক্ষা অফিস থেকে নেওয়া উপবৃত্তির সফটকপির প্রকৃত ফাইলের নাম পরিবর্তন করা যাবে না। প্রকৃত ফাইলের নাম পরিবর্তন হলে তা পোর্টালে আপলোড হবে না। এমনকি সফটকপিতে কাজ করতে গিয়ে কোন কলাম বা রো উলোটপালট হলেও তা পোর্টালে আপলোড হবে না। সেক্ষেত্রে কোনক্রমেই প্রকৃত ফাইলের নাম এবং কলাম বা রো এর যেনো পরিবর্তন না হয় সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে। যদি ফাইলের নাম পরিবর্তন হয়েই যা তবে কি হবে? সেক্ষেত্রে অফিসে থেকে সংগৃহীত সফটকপি থেকে প্রকৃত ফাইল নাম কপি করে নিয়ে আপনার কাজ করা ফাইলে রিনেম করে পেস্ট করে দিতে হবে।

১১. এবারের উপবৃত্তির কাজ আরো সতর্কতার সাথে করতে হবে। কারণ এবারে একজন শিক্ষার্থী ০৬ (ছয়) মাসের উপবৃত্তির সাথে কিডস অ্যালাইন্স হিসেবে এককালীন ১০০০ টাকা পাবে। তার মানে ০৬ (ছয়) মাসের উপবৃত্তি পাবে ১৫০×৬=৯০০ টাকা + ১০০০ (কিডস অ্যালাউন্স)= ১৯০০ টাকা। এক্ষেত্রে মোবাইল নম্বর যদি ভুল হয় তবে এই ১৯০০ টাকা থেকে একজন শিক্ষার্থী বঞ্চিত হবে। আর এর সম্পূর্ণ দায়ভার বর্তাবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের উপর। সুতরাং এবারে মোবাইল নম্বর নেওয়ার সময় যেমন সতর্ক থাকতে হবে তেমনি তা উপবৃত্তির সফটকপিতে এন্ট্রি দেওয়ার সময় অতি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

১১. উপবৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মোবাইলে ১০ সেকেন্ডের জন্য হলেও ফোন দিয়ে নিশ্চিত হবে যে মোবাইল নম্বর ঠিক আছে কি না। কারো মোবাইল নম্বর পরিবর্তন হলে তার নতুন নম্বর সংগ্রহ করতে হবে। কারণ গ্রামের অনেক অভিভাবকই মোবাইল নম্বর পরিবর্তন করে থাকেন।

১২. মনে রাখতে হবে বার্ষিক পরীক্ষায় সেসকল শিকার্থী কৃতকার্য হয়েছে শুধুমাত্র তারাই উপবৃত্তি এবং কিডস অ্যালাউন্স পাবে। পুনরাবৃত্তি শিক্ষার্থী উপবৃত্তি ও কিডস অ্যালাউন্স পাবে না (সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক)।

১৩. অনেক সময় দেখা যায় অভিভাবক যে মোবাইল নম্বর দিয়েছেন যা একই সাথে দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দেওয়া আছে। যা বুঝা যায়, উপবৃত্তি সফটকপি পোর্টালে আপলোডের সময়। এজন্য অভিভাবকের কাছ থেকে মোবাইল নম্বর নেওয়ার সময় বেশ কয়েকবার জিজ্ঞাসা করে নিতে হবে যে তার দেওয়া মোবাইল নম্বরটি আর অন্য কোন বিদ্যালয় বা ইবতেদায়ী মাদ্রাসায় দেওয়া আছে কিনা। যদি বুঝতে পারেন যে, অভিভাবক তথ্য গোপন করছেন সেক্ষেত্রে তাকে বুঝাতে হবে যে মোবাইল নম্বর দুই প্রতিষ্ঠানে দেওয়া থাকলে উনি আপনার প্রতিষ্ঠান থেকে উপবৃত্তি নাও পেতে পারেন (উপবৃত্তি আসবেই না)। আবার দেখা যায় যে, অনেক অভিভাবকের মোবাইল নাই। সেক্ষেত্রে একজন অভিভাবক অন্য অভিভাবকের মোবাইল নম্বর দিতে বলেন। সেক্ষেত্রে যে অভিভাবকের মোবাইল দিবেন তার সাথে কথা বলে নেওয়াই ভালো। তাতে করে সমস্যার সম্ভাবনা থাকে না।

১৪. পোর্টালে তথ্য আপলোডের পর আপলোডকৃত ফাইলটি ডাউনলোড করে হার্ডকপি প্রিন্ট নেওয়া দরকার । তা না হলে ভুল ধরা পড়বে না। কারণ কম্পিউটারে করা কাজের ক্ষেত্রে অতটা ভুল চোখে পরে না। কিন্তু আপলোডকৃত ফাইলটির হার্ডকপি প্রিন্ট নিলে ভুল বের করা সম্ভব ও সহজ এবং তা দ্রুত সংশোধন করে পুনরায় তা পোর্টালে ঠিক করা যায়।

১৫. উপবৃত্তির সফটকপিতে থাকা ছাত্র-ছাত্রীদের Reference number কোনক্রমেই পরিবর্তন করা যাবে না।

১৬. নতুন ছাত্র-ছাত্রীর তথ্য পূরণের ক্ষেত্রে সফটকপির একেবারে শেষে থেকে তথ্য দেওয়া শুরু করতে হবে। সেক্ষেত্রে কোনরূপ Reference number দেওয়া যাবে না। মনে রাখতে হবে পূরণকৃত সফট কপিটি পোর্টালে আপলোডের পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে Reference number আসবে।

১৭. হার্ডকপিতে তথ্য সংশোধনের ক্ষেত্রে #লাল কালির কলম ব্যবহার করা সবচেয়ে ভালো।

১৮. অনেক অভিভাবক এসে বলেন যে, তার মোবাইলে টাকা আসে নাই। এক্ষেত্রে প্রথম কাজ হলো অভিভাবকের মোবাইল নিয়ে *495# ডায়াল করে ব্যালেন্স চেক করা। অনেক সময় এসএমএস না আসলেও ব্যালেন্সে টাকা জমা থাকে। আবার *495# ডায়াল করেও যদি দেখা যায় টাকা নাই তাহলে আপনাকে*495# ডায়াল করে. mini statement চেক করতে হবে। mini statement এই দেখা যাবে টাকা কবে এসেছে আর কবে উত্তোলন করেছেন, কোথা থেকে উত্তোলন করেছেন। আরো বিস্তারিত চেক করার জন্য আপনার শিক্ষা অফিসে যোগাযোগ করতে হবে। ল্যাপটপ/ডেস্কটপ দিয়ে পোর্টালে চেক করলেই দেখা যাবে আসলেই তার মোবাইলে টাকা এসেছে কিনা, কবে, কখন, কোথায় থেকে টাকা উত্তোলন করেছেন সব বিস্তারিত পাওয়া যাবে।যদি অন্য কোন নম্বরে টাকা যায় তাও দেখা যাবে। এক্ষেত্রে প্রথম কাজ অভিভাবকের মোবাইল চেক করা। সর্বশেষ শিক্ষা অফিসে যোগাযোগ করা।

১৯. উপবৃত্তির কাজ নিজে করুন আর বাইরে করুন, সব তথ্য সাথে নিয়েই কাজ করুন। তাতে কাজের যেমন সুবিধা হবে তেমনি ভুলের পরিমাণও এড়ানো সম্ভব। (ফেসবুক থেকে নেওয়া)

সোনালীনিউজ/এইচএন

Wordbridge School
Link copied!