• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

প্রাথমিকের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বায়োমেট্রিক হাজিরার আওতায় আসছে


গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২০, ১০:৩২ এএম
প্রাথমিকের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বায়োমেট্রিক হাজিরার আওতায় আসছে

ঢাকা : মুজিববর্ষ পালনের বিশেষ পদক্ষেপ হিসেবে বাংলাদেশে এই প্রথম গোপালগঞ্জের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে সাড়ে চার হাজার শিক্ষকের পাশাপাশি এক লাখ ৮০ হাজার শিক্ষার্থী বায়োমেট্রিক হাজিরার আওতায় আসছে। 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বায়োমেট্রিক হাজিরা বাস্তবায়ন হলে এই জেলার সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী হাজিরা বাড়বে, শিক্ষার্থী ঝরে পড়া রোধ হবে, উপবৃত্তি প্রদানে অনিয়ম বন্ধ হবে, শিক্ষকরাও সঠিক সময়ে স্কুলে যাবেন। এছাড়া বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু হলে কোমলমতি শিশুদের মাঝে ফিঙ্গার প্রিন্ট দেওয়ারও একটা প্রবণতা তৈরি হবে।

গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা জানান, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিশুদের মধ্য দিয়েই সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। সেই শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষার পর্যায় থেকেই সোনার মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার কাজ হাতে নিয়েছি আমরা। আর এটিই হবে গোপালগঞ্জ থেকে মুজিববর্ষের বিশেষ উপহার।’

তিনি আরো বলেন, ‘বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু হলে প্রাইমারি স্কুল চলাকালীন সময়ে ডিসি অফিসে, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরে বা সচিবালয়ে বসেই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মনিটরিং করতে পারবেন। ইতোমধ্যে জেলার বিভিন্ন স্কুলে বায়োমেট্রিক মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। মুজিববর্ষের মধ্যেই জেলার সব প্রাথমিক শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের হাজিরা দেয়ার পদ্ধতি চালু করতে চাই। এ কার্যক্রমকে আমরা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর হাত দিয়েই আমরা এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করতে চাই।’

জেলার প্রাথমিক শিক্ষা অফিস জানায়, মুজিববর্ষ পালনের অংশ হিসেবে দেশের প্রথম জেলা গোপালগঞ্জের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষককে বায়োমেট্রিক হাজিরার আওতায় নিয়ে আসার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের আমন্ত্রণে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু করতে আসা ১৪টি কোম্পানির মধ্যে চারটি কোম্পানিকে এই কাজ দেওয়া হয়। এই পদ্ধতির আওতায় ২২ হাজার টাকায় প্রত্যেকটি স্কুলের সঙ্গে কোম্পানির চুক্তি সম্পাদন করে একটি করে বায়োমেট্রিক মেশিন স্থাপন করার কথা রয়েছে। দুই লাখ লগ ক্যাপাসিটি ও পাঁচ হাজার ফিঙ্গার প্রিন্ট ক্যাপাসিটির দুই দশমিক আট ইঞ্চি এলসিডি মনিটরের এই বায়োমেট্রিক মেশিন অটোমেটিক সার্ভারের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। ৪ ঘণ্টা ব্যাটারি ব্যাকআপের এই বায়োমেট্রিক মেশিনগুলো কোম্পানি তিন বছরের ফুল ওয়ারেন্টি নিশ্চিত করে ইন্টারনেট সংযোগ দিয়ে চালু করবে। এ পর্যন্ত জেলার ১০০টিরও বেশি স্কুলে বায়োমেট্রিক মেশিন স্থাপন করে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের ফিঙ্গার প্রিন্ট, ছবি রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে।

শেখ সুজনসহ একাধিক অভিভাবক বলেন, বায়োমেট্রিক হাজিরা জেলার সব প্রাইমারি স্কুলে বাস্তবায়ন হলে এই জেলার সব প্রাথমিক শিক্ষার্থীর হাজিরা বাড়বে। শিক্ষার্থী ঝরে পড়া রোধ হবে। এছাড়া উপবৃত্তি থেকে বঞ্চিত হবে না শিশুরা। শিক্ষকরা সঠিক সময়ে স্কুলে যাবেন। শিক্ষার্থীরাও সঠিক সময়ে স্কুলে যেতে বাধ্য হবে। ফিঙ্গার প্রিন্ট দেওয়ার নেশায় হলেও বাচ্চারা প্রতিদিন স্কুলে যেতে চাইবে।

গোপালগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আনন্দ কিশোর সাহা বলেন, ‘গোপালগঞ্জেই আমরা প্রথম একযোগে জেলার ৮৬২টি প্রাইমারি স্কুলে বায়োমেট্রিক হাজিরা পদ্ধতি চালুর কাজ শুরু করেছি। ইতোমধ্যে ১০০টিরও বেশি স্কুলে বায়োমেট্রিক মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। এই পদ্ধতি চালু হলে অফিসে বসেই জেলার যেকোনও উপজেলার যেকোনও স্কুলে মনিটরিং করতে পারবো। কোন শিক্ষার্থী অনুপস্থিত রয়েছে, কী কারণে স্কুলে আসেনি, কোন শিক্ষক অনুপস্থিত রয়েছেন, তিনি ছুটিতে আছেন কিনা বা কী কারণে আসেননি, তা জানতে পারবো। শুধু আমি নই, জেলা প্রশাসক তার অফিসে বসেই, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরে বা সচিবালয়ে বসেই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা স্কুল মনিটরিং করতে পারবেন।’

সোনালীনিউজ/এএস

Wordbridge School
Link copied!