• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ফ্রান্সে বাংলাদেশি সাঁতারুর শরীরে করোনা উপসর্গ, আজ পরীক্ষা


নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ১১, ২০২০, ১০:২০ এএম
ফ্রান্সে বাংলাদেশি সাঁতারুর শরীরে করোনা উপসর্গ, আজ পরীক্ষা

সাঁতারু আরিফুল ইসলাম

ঢাকা : ফ্রান্সে প্রশিক্ষণরত বাংলাদেশি প্রতিশ্রুতিশীল সাঁতারু আরিফুল ইসলাম হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তার মধ্যে করোনা উপসর্গ থাকায় ডাক্তার ভাইরাস পরীক্ষার পরামর্শ দিয়েছেন। 

বৃহস্পতিবার (১১ জুন) স্থানীয় সময় দুপুরে করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দেবেন বাংলাদেশ নৌবাহিনীর এই সাঁতারু।বুধবার রাতে দেশ রূপান্তরকে আরিফ জানান, গত শুক্রবার ক্লাবে সুইমিং করে ফেরার পর থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি।

‘প্রথম তিন দিন অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। জ্বর, শরীর ব্যাথা, বমি তিনটাই ছিল। এখন অবশ্য বেশ ভালো আছি। প্রথম দুই দিন কারো সাথে কথাও বলতে পারিনি…।’ ফেইসবুক ম্যাসেঞ্জার কলে বলছিলেন আরিফ।

প্রথম ক’দিনের সেই ভয়াবহ পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠেছেন। কিন্তু করোনার উপসর্গ থাকায় ডাক্তার ভাইরাস পরীক্ষার করানোর পরামর্শ দিয়েছেন। সে অনুযায়ীই বৃহস্পতিবার করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দেবেন আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির বৃত্তি নিয়ে ফ্রান্সে অবস্থান করা এই সাঁতারু।

মার্চের শুরুতে ইউরোপে যখন করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করে, তখন ফ্রান্সেই আবাসিক ক্যাম্পে বন্দী হয়ে পড়েন আরিফ। রুয়া শহরের দ্য ভাইকিং রুয়েন ক্লাবে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন বিকেএসপিতে বেড়ে ওঠা কিশোরগঞ্জের এই তরুণ।

তবে তার থাকার জায়গা ক্লাব থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে, যেটা অনেকটাই গ্রামের মতো। অন্যান্য প্রশিক্ষণার্থীদের সঙ্গে লকডাউন সময়টা ভালোভাবেই পাড়ি দিয়েছেন। ফ্রান্সে পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হওয়ায় ধীরে ধীরে লকডাউনও শিথিল হয়। আরিফদের ক্লাবের কার্যক্রমও শুরু হয় সীমিত পরিসরে।

তবে লকডাউন পরবর্তী সময়ে ক্যাম্প থেকে ক্লাবে যেতে হতো নিজেদের ব্যবস্থাপনাতে। শুক্রবার যেদিন প্রথম কাঁপুনি দিয়ে জ্বর এলো, সেদিন তো ক্লাবে গিয়েছিলেন প্রায় এক কিলোমিটার পথ বৃষ্টিতে ভিজে।

এ ছাড়া পাবলিক বাসে যাতায়াত করতে হয়েছে। সেখান থেকেই ভাইরাস সংক্রমণ হলো কিনা সন্দেহ আরিফের মনে। যদিও আশা করছেন পরীক্ষায় ফলাফল নেতিবাচক কিছু আসবে না, ‘এখন তো ভালো আছি। আশাকরি খারাপ কিছু হবে না।’

প্রত্যয় ভরা কণ্ঠে বলেন, ‘আর শুরুর ওই অবস্থা যখন কেটে গেছে, পজিটিভ এলেও ভয় পাচ্ছি না। ইনশা আল্লাহ সব ঠিক হয়ে যাবে।’

কিন্তু আরিফ নিজের চেয়েও চিন্তা করছেন ক্যাম্পে থাকা সতীর্থদের নিয়ে, ‘জ্বর হওয়ার পর সবাই আমাকে দেখত এসেছে। এক সাথে আমরা ট্রেনিং করেছি, ক্যাম্পে চলাফেরা সবকিছু…। আমার করোনা উপসর্গ থাকায় এখান সবারই ট্রেনিং বন্ধ আছে। কোয়ারেন্টাইন মেনে চলছে সবাই। এখন যদি আমার পজিটিভ আসে, আর অন্য কারো হয়, তখন আসলে নিজের কাছেই খুব খারাপ লাগবে। আমার কারণে অন্যেরও ক্ষতি হলো…।’

গত শুক্রবার থেকে শরীর খারাপ। এখনো বাবা-মাকে কিছু জানাননি দুশ্চিন্তা করবে বলে, ‘ফোনে কথা বললে তো কণ্ঠ শোনেই বুঝতে পারবে। তাই শুক্রবারের পর ফোনে কথাও বলিনি…।’

নিজে নিজেই সামলাচ্ছেন সব ঝড়। দুর্যোগময় সময়ে দূর দেশে একেবারেই একলা পড়ে থাকা এই সাঁতারু দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন সুস্থতার জন্য। আর আশায় বুক বাঁধছেন, যেন করোনা পজিটিভ না হয়।

সোনালীনিউজ/এএস

Wordbridge School
Link copied!