• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
অঙ্গদাতার অভাব

বছরে মারা যায় ৪০ হাজার কিডনি বিকল রোগী


নিজস্ব প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২০, ০১:৩২ পিএম
বছরে মারা যায় ৪০ হাজার কিডনি বিকল রোগী

ঢাকা : অঙ্গদাতা বা ডোনার সংকটের কারণে প্রতি বছর মারা যাচ্ছে ৪০ হাজার কিডনি বিকল রোগী। এর মধ্যে ২০ ভাগ কিডনি রোগের চিকিৎসা পেলেও বাকি ৮০ ভাগ চিকিৎসা সেবার বাইরেই থেকে যাচ্ছে। একইভাবে হাজার হাজার মানুষ লিভার, হার্ট, ফুসফুস, অগ্ন্যাশয় ইত্যাদি বিকল হয়ে অকালে মারা যাচ্ছে।

অথচ উন্নত বিশ্বে কিডনি বিকল ৬০-৭০ ভাগের বেশি মানুষ মরণোত্তর অঙ্গদান প্রক্রিয়ায় চিকিৎসা নিয়ে নতুন জীবন ফিরে পাচ্ছে।
বাংলাদেশের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ আইনে কোনো বাধা না থাকলেও এখনো মরণোত্তর অঙ্গদান শুরুই করা যায়নি। এদেশে মরণোত্তর অঙ্গপ্রতিস্থাপনের উদ্যোগ নিলে অকালে হারাতে হবে না এতগুলো জীবন।

শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মিরপুরস্থ কিডনি ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে ‘মরণোত্তর অঙ্গ দান ও সংযোজন’-বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন। কিডনি ফাউন্ডেশন, সোসাইটি অব অর্গান ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন বাংলাদেশ এবং কোরিয়া ইউনিভার্সিটি আনাম হসপিটালের যৌথ উদ্যোগে ও কোরিয়ান সোসাইটি ফর ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন এবং বাংলাদেশ রেনাল অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতায় এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে  তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, যারা নিজেদের কিডনি দান করেছেন এবং যারা গ্রহণ করেছেন তারা একেকটা ইতিহাস। মরণোত্তর অঙ্গদান অনেক কঠিন একটা কাজ হলেও অসম্ভব কিন্তু নয়।

তাছাড়া এটা শুধু কিডনি ফাউন্ডেশনের একার কাজও নয়। এজন্য আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে, মানুষের ইমোশনকে জাগিয়ে তুলতে হবে।

কিডনি ফাউন্ডেশন ও সোসাইটি অব অর্গান ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন, বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আর রশিদ বলেন, দিন দিন কিডনি বিকল রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। জীবিত কিডনি দাতার সংকট প্রকট বলে বিকল রোগীরা প্রতিস্থাপন করতে না পেরে অকালে মারা যাচ্ছে।

এসব বিষয় চিন্তা করে গত বছর থেকে সোসাইটি অব অর্গান ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন, কিডনি ফাউন্ডেশন এবং বাংলাদেশ রেনাল অ্যাসোসিয়েশন মরণোত্তর কিডনি ও লিভার দানের উদ্যোগ ও যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করে। কিন্তু সচেতনতা, ধর্মীয় অজ্ঞতা এবং অনাগ্রহের কারণে সেটি সফল হয়নি। সাফল্যের আশায় আবারো সম্মিলিতভাবে মরণোত্তর অঙ্গপ্রতিস্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ধর্ম কিংবা বিদ্যমান আইনে মরণোত্তর অঙ্গদানে কোনো বাধা নেই। ওআইসি এবং বিশিষ্ট ইসলামিক ওলামাগণ মরণোত্তর কিডনিসহ অন্যান্য অঙ্গদানকে স্বীকৃতি প্রদান করেছেন।

ফলে সৌদি আরব, ইরাক, কুয়েত, মালয়েশিয়া, ইরান প্রভৃতি দেশ মরণোত্তর অঙ্গদানে উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশের জন্য দরকার মানুষের ব্যাপক সচেতনতা।

কিডনি ফাউন্ডেশন ও সোসাইটি অব অর্গান ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন, বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আর রশিদের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক এ কে আজাদ খান, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. কাজী দীন মোহাম্মদ, রোটারি ক্লাব অব ঢাকা রয়েলের সভাপতি মো. জাহিদ হোসেন, রোটারি ইন্টারন্যাশনালের ডিস্ট্রিক্ট গভর্নর এম খাইরুল আলম, লায়ন্স ক্লাব ইন্টারন্যাশনালের ডিস্ট্রিক্ট গভর্নর লায়ন শহিদুল ইসলাম, ইনার হুইল বাংলাদেশের সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান মহসিনা রেজা প্রমুখ।

বক্তব্য দেন কিডনি ফাউন্ডেশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম এ ওয়াহাব, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) অধ্যাপক ডা. জিয়াউদ্দিন আহমেদ, মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম মুহিবুর রহমান প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে অর্গান ডোনার কার্ড চালু করা হয় এবং কিডনি সংযোজন করে বেঁচে আছেন এমন কয়েকজন ব্যক্তিকে সম্মাননা দেওয়া হয়।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!