• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বন্যাকবলিত এলাকায় ছড়াচ্ছে রোগব্যাধি


নিজস্ব প্রতিবেদক জুলাই ১৬, ২০১৯, ০৩:০৪ পিএম
বন্যাকবলিত এলাকায় ছড়াচ্ছে রোগব্যাধি

ঢাকা : অতি ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বিভিন্ন নদ-নদীর পানি ৬৮টি পয়েন্টে বেড়েছে। বাড়ছে পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা। পাশাপাশি বন্যা আক্রান্ত ১৬ জেলায় ছড়াচ্ছে রোগব্যাধি।

ডায়রিয়া, শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহ (আরটিআই), চোখের প্রদাহ ও চর্মরোগসহ নানা রোগব্যাধি ছড়িয়ে পড়ছে। গত ১০ জুলাই থেকে সোমবার (১৫ জুলাই) পর্যন্ত এসব এলাকায় পানিতে ডুবে, বজ্রপাতে ও সাপের কামড়ে মোট ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের ৯৩টি পানি সমতল স্টেশনের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, গতকাল সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সুরমা, কুশিয়ারা, মনু, ধলাই, খোয়াই, পুরাতন সুরমা, সোমেশ্বরী, কংস, ধরলা, তিস্তা, ঘাগট, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা ও সাঙ্গু এই ১৪টি নদীর পানি ২৬টি পয়েন্টে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বিভিন্ন নদ-নদীর পানি ৬৮টি পয়েন্টে বৃদ্ধি ও ২২টি পয়েণ্টে হ্রাস পেয়েছে। গত রোববার ১৪টি নদীর ২৫টি পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, নিহতদের মধ্যে পানিতে ডুবে ৭ জন, বজ্রপাতে ৩ জন ও সাপের কামড়ে ২ জনের মৃত্যু হয়। এছাড়া ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগব্যাধিতে মোট এক হাজার ২২৫ জন আক্রান্ত হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় বিভিন্ন রোগে ৬৭২ জন আক্রান্ত ও একজনের মৃত্যু হয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তার এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, বর্তমানে দেশের নেত্রকোনা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান, বগুড়া, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, নীলফামারী, সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও জামালপুরে বন্যা দেখা দিয়েছে। গত ১০ জুলাই থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এই ১৬ জেলার রোগব্যাধি সম্পর্কে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করছে।

তিনি আরো জানান, এই ১৬ জেলার ৫৩টি উপজেলার ২০৯টি ইউনিয়ন বন্যায় আক্রান্ত। এসব এলাকায় মোট আশ্রয়কেন্দ্রের সংখ্যা এক হাজার ২৬৯টি। বর্তমানে ১৬ জেলায় এক হাজার ৫৪৩টি মেডিকেল টিম কাজ করছে।

গত ছয় দিনে আক্রান্ত জেলাগুলোতে ৪২৮ জন ডায়রিয়া, ১৮৯ জন আরটিআই, ৭ জন বজ্রপাতে, ১০ জন সাপের কামড়ে, ৪ জন পানিতে পড়ে, ১১৪ জন চর্মরোগে, ৪৯ জন চোখের প্রদাহ, ১৫ জন আঘাতপ্রাপ্ত ও অন্যান্য রোগে ৪১২ জন আক্রান্ত হন। তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি জানান, অব্যাহত পানি বৃদ্ধি থাকায় বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে কুড়িগ্রামে। বন্যায় সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ৪ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। জেলার সদর, নাগেশ্বরী, ভূরুঙ্গামারী, চিলমারী, রাজারহাট, রৌমারী, রাজিবপুর এবং কচাকাটা উপজেলার অধিকাংশ বাড়িতে পানি ঢুকে পড়ায় বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে বানভাসি মানুষজন।

পাশাপাশি ৯ উপজেলার ৩৮৪ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। জেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। বন্যাকবলিত মানুষের জন্য ইতোমধ্যে ৮৫টি মেডিকেল টিম মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, সোমবার সকালে ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার ১০৫ সেন্টিমিটার এবং ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৯৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী দুদিন পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম।

দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি জানান, দিনাজপুরে বন্যার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। জেলার প্রধান ৩টি নদীর পানি বিপদসীমার খুব কাছাকাছি অবস্থান করছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিপদসীমা পার করবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন দিনাজপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের সার্ভেয়ার মো. মাহাবুব আলম।

গাইবান্ধা প্রতিনিধি জানান, গত কদিন ধরে অবিরাম বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পানির ঢলে গাইবান্ধার ব্রহ্মপুত্র নদ, যমুনা, ঘাঘট ও তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও সদর উপজেলার ১৫৪টি গ্রাম বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলার ৪টি স্থানে বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। ফলে ওইসব এলাকার বিভিন্ন ফসলি জমি ও রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে এবং বন্যাকবলিত এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলার চার উপজেলার পানিবন্দি নিরাশ্রয় মানুষের জন্য ৬৩টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, সোমবার দুপুর পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমার ১১০ সে.মি. তিস্তার ১৬ সে.মি এবং ঘাঘট নদীর পানি ৬৬ সে.মি. ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি জানান, খাগড়াছড়ি জেলা সদরের বন্যা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নতি ঘটলেও এখনো অপরিবর্তিত জেলার দীঘিনালা উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি। গতকাল সোমবার সকালে দীঘিনালার মাইনী নদীর পানি কিছুটা কমতে শুরু করলেও বৃষ্টি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা আবারো বাড়ছে। এতে  ৪ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ।

ইতোমধ্যে বেশ কিছু পরিবার নতুন করে আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছে। বন্যার পানিতে এখনো তলিয়ে আছে দীঘিনালার মেরুং বাজার। এতে ডুবে গেছে অধিকাংশ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও বসতবাড়ি। পানিবন্দি থাকায় বন্ধ রয়েছে ২৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। রাঙামাটির লংগদু উপজেলার সঙ্গে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এতে করে এ সড়কে যাতায়াতকারী যানবাহন শ্রমিকরা কর্মহীন হয়ে পড়েছে। জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। বাজারে কাঁচা তরিতরকারি নেই বললেই চলে।

পর্যটন স্পট সাজেকে পর্যটকদের যাতায়াতের ক্ষেত্রে সতর্কতা জারি অব্যাহত রেখেছে প্রশাসন। এদিকে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে গ্রামীণ সড়ক, কালভার্ট, ফসলী জমি কি পরিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা নিরূপণ করছে স্থানীয় প্রশাসন।

অপরদিকে জেলার চেংগী নদীর পানি কমে যাওয়ায় পানিতে ডুবে যাওয়া ফসলি জমিগুলো ভেসে উঠেছে ।

বন্যা ও পাহাড় ধসে যেসব রাস্তাঘাট ভেঙে গেছে তা মেরামত করছে সড়ক বিভাগের লোকজন ।

ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি জানান, জামালপুরের ইসলামপুরে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। যমুনার পানি বিপদসীমার ১২৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যমুনা-ব্রহ্মপুত্রসহ সবগুলো নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহতার দিকে যাচ্ছে।

ইসলামপুর উপজেলার ১২ ইউনিয়ন ও একটি পৌর সভার অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়ে প্রায় ৭০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় প্রতি মুহূর্তে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। যমুনার তীরবর্তী ইসলামপুর উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করেছে। সরকারি হিসাবে ইসলামপুরের সাত ইউনিয়নের ৭০ হাজার মানুষ বন্যা আক্রান্ত হয়েছে।

পূর্বধলা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি জানান, নেত্রকোনার পূূর্বধলা উপজেলায় অবিরাম বারী বর্ষণে উপজেলার জারিয়া, ধলামুলগাঁও ও ঘাগড়া ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ফলে ৪০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। আমন ফসলের বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। জনজীবনে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কয়েক দিনের টানা বর্ষণের ফলে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা বন্যায় ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এতে উপজেলার অন্তত ২৫ গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাঘাট বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে।

সাঘাটা (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি জানান, গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার সাঘাটা ইউনিয়নের উত্তর সাথালিয়া বৌ-বাজার সোনাইল বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় পার্শ্ববর্তী নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে ফসলি জমি।

জানা গেছে, গত রোববার বাঁধ ভাঙায় পানিবন্দি হয়ে পড়ে প্রায় ৫ হাজার পরিবার। প্রায় ২০০ একর ফসলি জমি পানির নিচে নিমজ্জিত হয়।

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টির কারণে সিরাজগঞ্জের হার্ট পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বেড়ে বর্তমানে বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর  দিয়ে প্রবাহি হচ্ছে। অপরদিকে যমুনা নদীর কাজিপুর পয়েন্টে বিপদসীমার ৪১ মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গতকাল সোমবার দুপুরে যমুনার পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে ১৩.৫৫ মিটার রেকর্ড করা হয়, যা বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সিরাজগঞ্জ সদর, শাহজাদপুর এনায়েতপুরের ব্রাহ্মণগাতী, আড়কান্দি, হাটপাচিল এবং কাজিপুর উপজেলার নাটুয়ারপাড়া, বাঐখোলা পাটাগ্রামসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে ব্যাপক নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। নদীগর্ভে চলে গেছে অসংখ্য বাড়িঘর।

সিলেট ব্যুরো জানায়, পাহাড়ি ঢল আর বিরামহীন বৃষ্টির পানিতে কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ওসমানীনগরে আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। পানি ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় ইতিমধ্যে উপজেলার নিম্নাঞ্চলে রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়েছে। গতকাল সোমবার সকাল ৯টার দিকে কুশিয়ারার পানি ওসমানীনগরের শেরপুরে ৪৫ সে.মি. বিপদ সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে বলে জানা গেছে। পানি কুশিয়ারা ডাইকের ওপর দিয়ে প্রবেশ করায় ভেসে গেছে অর্ধশতাধিক মৎস্য খামার। প্রায় ২০টি বিদ্যালয়ে পানি উঠেছে। কুশিয়ারার ডাইকের বালুর বস্তা দিয়ে বাদ রক্ষা করারর চেষ্টা করছেন স্থানীয়রা। প্লাবিত হয়েছে প্রায় ২০টি গ্রাম।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও আখাউড়া প্রতিনিধি জানান, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অব্যাহত ভারী বর্ষণের কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার সীমান্তবর্তী কয়েকটি এলাকা পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। উপজেলার চারটি ইউনিয়নের অন্তত ৩০ গ্রামের মানুষ ইতোমধ্যে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে কৃষকদের সবজি ক্ষেত, ফসলি জমি, পুকুরসহ এলাকার রাস্তাঘাট ও বাড়িঘর। এদিকে পাহাড়ি ঢলের পানিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে আখাউড়া ইমিগ্রেশনের চেকপোস্ট কার্যালয় হয়ে ভারতগামী পাসপোর্টধারী যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। খবর পেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

চিলমারী (কুড়িগ্রাম)  প্রতিনিধি জানায়, কুড়িগ্রামের চিলমারীতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও কয়েকদিনের টানা প্রবল বর্ষণে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়ে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ায় প্রায় ৭০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানি বৃদ্ধির ফলে অষ্টমীরচর, চিলমারী, থানাহাট, রমনা ও নয়ারহাট ইউনিয়নে গত ৫ দিনে নদীভাঙনে প্রায় ১৭০টি বাড়ি ও ৮টি দোকান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে প্রায় একলক্ষ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি মানুষগুলো পাউবো বাঁধ, উঁচু স্থানে খোলা আকাশের নিচে গবাদি পশুসহ আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। গত ৪ দিনে প্রায় ১৭০টি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। পাউবো জানায়, ব্রহ্মপুত্র নদে চিলমারী পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ১০৫ সে.মি. ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

হাতীবান্ধা (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি জানান, লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় তিস্তা নদীর পানির প্রবাহ কমেছে। গতকাল সোমবার দুপুরে তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে নদীর পানিপ্রবাহ ছিল ৫২ দশমিক ৬০। গত রোববার পানিপ্রবাহ ছিল ৫২ দশমিক ৮৫। এ নদীর পানিপ্রবাহ কমলেও জনদুর্ভোগ বেড়েছে।

লালমনিরহাট প্রতিনিধি জানান, লালমনিরহাটে তিস্তার পানি কমলেও বেড়েছে ধরলার পানি। কমেনি পানিবন্দির সংখ্যা। এখনো বন্ধ রয়েছে জেলার ৪৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। পানি কমে তিস্তার পানি বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে ও ধরলা নদীর পানি বেড়ে বিপদসীমার ৪৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!