• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
আদালতকে খালেদা

বলে দেওয়া হোক নির্বাচনে যাওয়ার আমার দরকার নেই


আদালত প্রতিবেদক নভেম্বর ১৫, ২০১৮, ০২:০৩ পিএম
বলে দেওয়া হোক নির্বাচনে যাওয়ার আমার দরকার নেই

ঢাকা : নাইকো দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বুধবার (১৪ নভেম্বর) কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয় হুইল চেয়ারে করে।

শুনানিতে অংশ নিয়ে আদালতের কাছে খালেদা জিয়া প্রশ্ন রাখেন, ‘আমার মামলাগুলো কেন এত দ্রুত বিচার করা হচ্ছে? কয়টা মামলা দ্রুত বিচারে নিষ্পত্তি করা হয়েছে?নারায়ণগঞ্জের সাত খুন কি দ্রুত বিচার আইনে হয়েছে?’ বর্তমান রাজনীতির সঙ্গে সবকিছু চলছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

খালেদা জিয়া বলেন, ‘মামলা দিয়ে কোর্টের মাধ্যমে আমাদের আটকে রাখা হচ্ছে। তাহলে আমাদের বলে দেয়া হোক যে, আমাদের নির্বাচনে যাওয়ার দরকার নেই। একদিকে মামলা চলবে, অন্যদিকে তারা নির্বাচন করবে -এটা তো হতে পারে না।’

গতকাল বুধবার বেলা ১১টা ৫৮ মিনিটে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে অবস্থিত ঢাকার ৯নং বিশেষ জজ মাহমুদুল কবিরের আদালতে তাকে হাজির করা হয়।

নির্বাচনের পর অভিযোগ গঠনের পরবর্তী শুনানির জন্য অনুরোধ করে খালেদা বলেন, ‘নির্বাচনে আমার নেতাকর্মীরা ব্যস্ত থাকবেন। কেউ আসতে পারবেন না। এ কারণে নির্বাচনের পর শুনানির দিন ধার্য করা হোক।’

পরে তার বক্তব্য শেষে আদালত ৩ জানুয়ারি অভিযোগ গঠনের পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, কানাডীয় প্রতিষ্ঠান নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম সাবেক তত্ত¡াবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় নাইকো দুর্নীতি মামলাটি করেন।

মামলা করার পরের বছর ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। পরে আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, বাগেরহাটের সাবেক সাংসদ এম এ এইচ সেলিম এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া-বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।

প্রসঙ্গত, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও চ্যারিটেবল টাস্ট দুর্নীতি মামলায় যথাক্রমে ১০ ও ৭ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন খালেদা জিয়া।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণার পর পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে খালেদা জিয়াকে বন্দি রাখা হয়।

চ্যারিটেবল মামলার রায়ের কপি হস্তান্তর : জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে দেয়া ৭ বছরের কারাদণ্ডাদেশের রায়ের সার্টিফায়েড কপি আইনজীবীদের কাছে হস্তান্তর করেছে আদালত।

বুধবার (১৪ নভেম্বর) ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ আদালতের পেশকার মোকাররম হোসেন রায়ের ৬৩২ পৃষ্ঠার সার্টিফায়েট কপি খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া ও জয়নুল আবেদীন মেজবাহের কাছে হস্তান্তার করেন।

খালেদার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন মেজবাহ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘এ মামলায় খালেদার জামিন ও রায়ের বিরুদ্ধে আমরা শিগগিরই উচ্চ আদালতে আবেদন করব।’

এর আগে ৩০ অক্টোবর খালেদার রায়ের সার্টিফায়েড কপির জন্য আবেদন করেন আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া ও জয়নুল আবেদীন মেজবাহ।

২৯ অক্টোবর এ মামলায় খালেদা জিয়াকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে অবস্থিত ঢাকার ৫ নম্বর অস্থায়ী বিশেষ জজ আদালত।

রায়ে ৭ বছরের কারাদণ্ড ছাড়াও খালেদা জিয়াকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত। মামলার অপর তিন আসামিকেও একই শাস্তির আদেশ দেন আদালত।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!