• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ভারতের স্বীকৃতি


নিজস্ব প্রতিবেদক ডিসেম্বর ৬, ২০১৮, ০২:০৫ পিএম
বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ভারতের স্বীকৃতি

ঢাকা : রাত যত গভীর হতে থাকে আলোর সকাল তত কাছাকাছি হয়- একাত্তরের ডিসেম্বরের অবস্থাটি ছিল অনেকটা এরকমই। যুদ্ধের শেষ সময়ে এসে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর মরণকামড় আর বাড়িয়ে দেয়া নির্যাতন-নিপীড়নের মধ্য দিয়ে বাংলার দামাল ছেলেরা তাদের বিজয়ের দিকে অগ্রসর হচ্ছিলো।

একাত্তরে ডিসেম্বরের এই সময়ে এসে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ কমান্ডের কাছে পূর্বাঞ্চলে পাকিস্তানি বিমানবাহিনীর কার্যকারিতা প্রায় অকার্যকর হয়ে যায়। তখনই মনে হচ্ছিলো হানাদার বাহিনীর পরাজয় আর বাঙালির বিজয় সময়ের ব্যাপার মাত্র। যুদ্ধের মাঠে পরাজয়ের পাশাপাশি কূটনৈতিক যুদ্ধেও পাকিস্তানের পরাজয় ঘটছিলো।

কূটনৈতিক ক্ষেত্রে একাত্তরের ৬ ডিসেম্বরের এই দিনে ঘটে যায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনা। এদিন স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ভারতের স্বীকৃতি পায় বাংলাদেশ।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে দিনটি ছিল জাতির জন্য আনন্দঘন দিন। বিজয়ের বার্তা আসছিল দেশের নানা প্রান্ত থেকে। হানাদারমুক্ত হচ্ছিল একেকটি জনপদ। এই দিনে মুক্ত হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কলারোয়া, দামুড়হুদা, সুনামগঞ্জ, কুলাউড়া, মেহেরপুর, লালমনিরহাট, মৌলভীবাজার, কুড়িগ্রাম, উলিপুর, ঝিনাইদহ, বড়লেখা, বকশীগঞ্জ, ফেনী, শ্রীমঙ্গল, দিরাই, মহেশপুর, ছাতক, কেন্দুয়া, যশোর, রাজনগর ও পীরগঞ্জ।

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের আখাউড়া ছিল যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত। যুদ্ধে আখাউড়া রেলওয়ে জংশনসহ গোটা এলাকা লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। গোটা এলাকা পরিণত হয় ধ্বংসস্তূপে। আখাউড়ায় হয়েছিল সম্মুখযুদ্ধ। দরইন গ্রামে প্রচণ্ড যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর ৯ জন শহীদ হন। তাদের মধ্যে বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ করে শহীদ হন বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী মোস্তফা কামাল।

এইদিনে পাক হানাদারমুক্ত হয় কলারোয়া। স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করেন শিক্ষক শেখ আমানুল্লাহ। দামুড়হুদা শত্রু মুক্ত হয় এদিনে। সম্মুখ সমরে পরাজয় জেনে এইদিনে পাক হানাদাররা এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়। বাংলার দামাল ছেলেরা বিজয়ের গান ও পতাকা নিয়ে এগিয়ে যায় জেলা শহরের দিকে। পর্যায়ক্রমে পতন ঘটতে থাকে পাক সেনাদের। সুনামগঞ্জ মুক্ত হয় এই দিনে।

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র- মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পরপরই বাংলাদেশের প্রবাসী সরকার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত বেতার সম্প্রচার কেন্দ্র। চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে এর প্রাথমিক যাত্রা শুরু হয়। এই কেন্দ্র থেকেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয়েছিল। স্বাধীন বাংলা বেতারের সবচেয়ে জনপ্রিয় দুটি অনুষ্ঠান ছিল। এর একটি হলো ‘চরমপত্র’, অন্যটি ‘জল্লদের দরবার’।

১৯৭১ সালের আজকের দিনে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও অস্থায়ী সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়ার পর স্বাধীন দেশের বেতার কেন্দ্র হিসেবে এর এর নতুন নাম হয় ‘বাংলাদেশ বেতার’।  বাংলাদেশের প্রবাসী সরকার ১৯৭১ সালের ২২ ডিসেম্বর ঢাকায় ফিরে আসে এবং সেদিন থেকেই স্বাধীন দেশের রেডিও হিসেবে বাংলাদেশ বেতারের সম্প্রচার কাজ শুরু হয়।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!