• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বাংলাদেশে ঢুকছে হাজার হাজার চীনা, চরম ঝুঁকিতে দেশ


বিশেষ প্রতিনিধি ফেব্রুয়ারি ২, ২০২০, ০৭:২১ পিএম
বাংলাদেশে ঢুকছে হাজার হাজার চীনা, চরম ঝুঁকিতে দেশ

ঢাকা : যেকোন সময় বাংলাদেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে! গত ২১ জানুয়ারি থেকে রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টা পর্যন্ত চীন থেকে মোট পাঁচ হাজার ৫৪৬ চীনা নাগরিক ও বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন।

সরকারি হিসেবে চায়না ইস্টার্ন, চায়না সাউদার্ন, ড্রাগন এয়ার ও ইউএস বাংলা-এ চার ফ্লাইটে আসা যাত্রীদের হিসাব করা হচ্ছে। বিমানবন্দরের থার্মাল স্ক্যানার ও হ্যান্ড স্ক্যানারে শুধুমাত্র এ চার ফ্লাইটের যাত্রীদের স্ক্যানিং ও নিবিড়ভাবে স্ক্যানিং করা হচ্ছে।

কিন্তু হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের একাধিক কর্মকর্তা জানান, এ চারটি ফ্লাইট ছাড়াও আরও কমপক্ষে পাঁচটি ফ্লাইটে চীন থেকে যাত্রী পরিবহনের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) নেপালের হিমালিয়ান ফ্লাইটে চীনে অধ্যয়নরত কমপক্ষে ১৬ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী দেশে ফিরেন। তারা স্বপ্রণোদিত হয়ে বিমানবন্দরে কর্মরত স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের থাইল্যান্ড হয়ে দেশে ফেরার কথা জানান।

করোনাভাইরাসে আক্রান্তের কবল থেকে রক্ষা ও রোগটি যেন সংক্রমিত না হয় সেই উপলব্ধি থেকেই তারা বিকল্প পথে দেশে ফেরার কথা জানান।

শাহজালাল বিমানবন্দরে কর্মরত স্বাস্থ্য অধিদফতরের সহকারী পরিচালক ডা. শাহরিয়ার সাজ্জাদ বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এখন পর্যন্ত মোট ৯টি ফ্লাইটে চীন থেকে যাত্রী আসার তথ্য পাওয়া গেছে। করোনাভাইরাস বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ায় এখন সব ফ্লাইটের রোগীদের স্ক্যানিংয়ের আওতায় আনতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এদিকে শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) চীনের উহান প্রদেশ থেকে বিমান বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে দেশে ফিরেছেন ৩১২ বাংলাদেশি। তাদের মধ্যে ৩০২ জনকে দক্ষিণখানের আশকোনা হজ কাম্পে কোয়ারেন্টাইন করে রাখা হয়েছে। বাকি দশজনের মধ্যে সাতজনকে সরকারি কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল ও তিনজনকে (তিনজনের মধ্যে একজন মহিলা জ্বরের রোগী, তার সঙ্গে তার স্বামী ও শিশু সন্তান ইচ্ছে করেই হাসপাতালে অবস্থান করছেন) সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

আশকোনা হজ ক্যাম্পে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও আর্ম মেডিকেল কোরের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও রোগতত্ত্ববিদরা সকলের সার্বক্ষণিক খোঁজ রাখছেন।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, চীন থেকে ফেরা যাত্রীদের মাধ্যমে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি সব সময় রয়েছে। যারা চীন থেকে ফিরছেন তাদের সকলকে কোয়ারেন্টাইন করা হচ্ছে না।

এছাড়া এ রোগটির উপসর্গ দুই সপ্তাহের মধ্যে যে কোনো সময় দেখা দিতে পারে। এ কারণে যার গায়ে জ্বর নেই তাকে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। কিন্তু তার উপসর্গ পরেও দেখা দিতে পারে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার আগাম সর্বোচ্চ সতকর্তামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। এরপর যদি রোগী পাওয়া যায় তাদেরকে আইসোলেশন ইউনিটে রেখে চিকিৎসার প্রস্তুতি রাখা হয়েছে।

তিনি বলেন, এখন সব এয়ারলাইন্সের যাত্রীদেরকেই পরীক্ষা নিরীক্ষারও আওতায় আনতে হবে। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বিকেলে এয়ারলাইন্সগুলোর কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন সংস্থার সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে। (জাগো)

বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে চীন : প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের দ্রুত বিস্তার নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের কয়েকটি দেশ চীন থেকে আগতদের ঠেকাতে সীমানা বন্ধ করে দিয়েছে। সেইসঙ্গে ইতিমধ্যে চীনে ফ্লাইট বন্ধ করে দিয়েছে বিভিন্ন দেশ। এতে কার্যত পুরো বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে চীন।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র এবং অস্ট্রেলিয়া জানিয়েছে তারা সম্প্রতি চীনে অবস্থানরত সমস্ত বিদেশী ভ্রমণকারীদের নিজ দেশে প্রবেশ করতে দিবে না।

এর আগে, রাশিয়া, জাপান, পাকিস্তান এবং ইতালিসহ কয়েকটি দেশ একই ধরণের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করে।

তবে বিশ্বের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা এমন পদক্ষেপ না নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্র জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে, এবং গত দুই সপ্তাহে যেসব বিদেশী নাগরিক চীনে ভ্রমণে গেছেন, তাদের সবার প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে।

এদিকে কানাডার এয়ারলাইন্স এয়ার কানাডা, ফ্রান্সভিত্তিক এয়ারলাইন্স সংস্থা এয়ার ফ্রান্স, দক্ষিণ কোরিয়াভিত্তিক এয়ারলাইন্স সংস্থা এয়ার সিউল, তানজানিয়ার রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা, ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ, যুক্তরাষ্ট্রের ডেল্টা এয়ারলাইন্স, ইজিপ্ট এয়ার, ফিনল্যান্ডভিত্তিক ফিনএয়ার ইতিমধ্যে চীনগামী ফ্লাইট স্থগিত ও বাতিল করেছে।

এছাড়া এই তালিকায় আরও আছে, ইন্দোনেশিয়ার লায়ন এয়ার গ্রুপ, জার্মানির লুফথানসা, সুইডেনভিত্তিক সাস, তুর্কিশ এয়ারলাইন্স, শিকাগোভিত্তিক ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স, যুক্তরাজ্যভিত্তিক ভার্জিন আটলান্টিক এয়ারলাইন্স সংস্থা।

গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে করোনা ভাইরাসের আবির্ভাব ঘটে। এখন পর্যন্ত চীনে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩০৪ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া প্রাণঘাতি এই ভাইরাসে চীনে আক্রান্ত হয়েছেন ১৪ হাজার ৩৮০ জন। পাশাপাশি এই ভাইরাস ইতিমধ্যে ২৩ টির বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।

এছাড়া প্রতিনিয়ত এই ভাইরাসে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের শরীরে প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে শ্বাসকষ্ট, জ্বর, সর্দি, কাশির মত সমস্যা দেখা দেয়। বিবিসি, রয়টার্স।

চীনাদের যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা : করোনাভাইরাসের দ্রুত বিস্তার নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের কয়েকটি দেশ চীন থেকে আগতদের ঠেকাতে সীমানা বন্ধ করে দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র এবং অস্ট্রেলিয়া জানিয়েছে যে সাম্প্রতিককালে চীনে অবস্থানরত সমস্ত বিদেশী ভ্রমণকারীদের তারা নিজ দেশে প্রবেশ করতে দেবে না। ডিসেম্বরে চীনে এই ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। এর আগে, রাশিয়া, জাপান, পাকিস্তান এবং ইতালিসহ কয়েকটি দেশ একই ধরণের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছিল।

তবে বিশ্বের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা এ জাতীয় পদক্ষেপ না নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউএইচও) প্রধান শুক্রবার বলেছেন,‘ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা ভালোর চাইতে ক্ষতি বেশি করবে। কেননা এতে তথ্য ভাগাভাগি, চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ এবং অর্থনীতির ক্ষতি হবে।’

ডাব্লিউএইচও সীমান্ত পারাপারের আনুষ্ঠানিক স্থানগুলোয় স্ক্রিনিং ব্যবস্থা চালুর পরামর্শ দিয়েছে। তারা সতর্ক করেছে যে, সীমান্ত বন্ধ করে দিলে যাত্রীরা অনানুষ্ঠানিকভাবে বা অবৈধভাবে দেশে প্রবেশের মাধ্যমে ভাইরাসের বিস্তারকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।

একের পর এক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করে চীনও। ওইসব দেশের সরকার, স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ উপেক্ষা করছে বলেও তারা অভিযোগ করে।

‘ডব্লিউএইচও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে সুপারিশ করলেও যুক্তরাষ্ট্র ঠিক তার উল্টোদিকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছে। যা কোন সদিচ্ছার পরিচয় নয়,’ চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনিং বলেছেন।
 
সর্বশেষ পরিস্থিতি কি : নতুন ভাইরাস, যা আনুষ্ঠানিকভাবে ২০১৯-এনকভ নামে পরিচিত, এই ভাইরাসের প্রকোপে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ৩০৪জন। সমস্ত মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে চীনের মধ্যে এবং সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে হুবেই প্রদেশে, ২৯৪ জন। এই প্রদেশ থেকেই ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়েছিল। শনিবার হুবেইতে আরও ৪৫ জনের মৃত্যুর ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে।

চীনের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন দেশটির জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, সারা চীন জুড়ে ২,৫৯০টি নতুন সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে, এতে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪,৩৮০ জনে। চীনের বাইরে প্রায় ১০০জনের আক্রান্ত হওয়ার খবর ঘটনা চিহ্নিত করা হয়েছে। সাম্প্রতিক দিনগুলোয় যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া এবং জার্মানিতে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে।

এদিকে হুবেই প্রদেশের কর্তৃপক্ষ ১৩ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চান্দ্র নববর্ষের ছুটি বাড়ি দিয়েছে এবং জন সমাবেশ নিরুৎসাহিত করার জন্য বিবাহ নিবন্ধন স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে। চীন, ২৪শে জানুয়ারি থেকে চান্দ্র নববর্ষ উপলক্ষে ছুটি উদযাপন শুরু করে এবং চীনা কর্মকর্তারা সাধারণ মানুষের ভ্রমণ স্থগিত করার জন্য ইতিমধ্যে এই ছুটির সময় বাড়িয়ে দিয়েছে যেন বিপুল সংখ্যক মানুষ কাজে ফিরে যেতে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় না যেতে পারে।

হংকংয়ে হাসপাতালের কর্মীরা সোমবার থেকে চীনের মূল ভূখণ্ডের সাথে এই অঞ্চলটির সীমানা পুরোপুরি বন্ধ করে না দিলে ধর্মঘটে যাওয়ার পক্ষে অবস্থান দিয়েছেন। হংকং সরকার ডাব্লিউএইচও-এর সুপারিশের উদ্ধৃতি দিয়ে তা করতে অস্বীকার করেছে। বিশ্বব্যাপী করোনভাইরাসের এই প্রকোপ সার্সের রোগের প্রাদুর্ভাবকে ছাড়িয়ে গেছে। ২০০৩ সালে এই সার্স ভাইরাস ২৪টিরও বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল।

তবে নতুন ভাইরাসে মৃত্যুর হার সার্সের তুলনায় অনেক কম, যার ফলে কর্মকর্তারা বিশ্বাস করেন যে এটি তেমন মারাত্মক নয়। হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের ধারণা অনুসারে, সরকারি পরিসংখ্যানগুলোয় আক্রান্তের সংখ্যা যা বলা হচ্ছে তার তুলনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কেন্দ্রস্থল উহান শহরে ৭৫ হাজার মানুষ সংক্রামিত হতে পারে।

চীনের বাইরের দেশগুলি কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছ : সাম্প্রতিক দিনগুলোতে একের পর এক দেশ, চীনে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করে। যুক্তরাষ্ট্র জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে, এবং গত দুই সপ্তাহে যেসব বিদেশী নাগরিক চীনে ভ্রমণে গেছেন, তাদের সবার প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে। যেসব মার্কিন নাগরিককে হুবেই প্রদেশ থেকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে, যেখানে কিনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছিল, তাদেরকে ১৪ দিনের জন্য আলাদা করে রাখা হবে।

চীনের অন্যান্য অঞ্চল থেকে যারা ফিরে আসছেন তাদেরও এই দুই সপ্তাহ ধরে নিজেদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করার অনুমতি দেওয়া হবে।

শনিবার মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর বলেছে, ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যারা বিদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসবে, তাদের মধ্যে যাদেরকে পৃথক রাখা প্রয়োজন, এমন এক হাজার মানুষের জন্য পেন্টাগন আবাসনের ব্যবস্থা করবে। ক্যালিফোর্নিয়া, কলোরাডো এবং টেক্সাসের চারটি সামরিক ঘাঁটির প্রতিটিতে ২৫০টি করে কক্ষ সরবরাহ করা হবে।

শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যে আরও এক ব্যক্তির করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। এতে যুক্তরাষ্ট্রে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে আট জনে। একই ধরণের নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেয়া অস্ট্রেলিয়া জানিয়েছে, চীন থেকে আসা নিজস্ব নাগরিকদের তারা দুই সপ্তাহের জন্য আলাদা করে রাখবেন।

এদিকে অনেক দেশের সরকার চীন থেকে তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে আনতে শুরু করেছে। এরইমধ্যে ৩০০ জনেরও বেশি ভারতীয়কে উহান থেকে ফিরিয়া আনা হয়েছে। শনিবার তারা দিল্লিতে পৌঁছায়, একই দিনে প্রায় ১০০জন জার্মান ফ্রাঙ্কফুর্টে আসেন।

থাইল্যান্ডও সামনের কয়েকদিনের মধ্যে চীনের উহান শহর থেকে তার নাগরিকদের ফিরিয়ে আনার প্রস্তুতি শুরু করেছে।

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেস্কভ বলেছেন, রাশিয়া সোমবার ও মঙ্গলবার হুবেই প্রদেশ থেকে তাদের কয়েকশ নাগরিককে সরিয়ে নেবে। দেশটি চীনা নাগরিকদের জন্য ভিসামুক্ত ভ্রমণ বন্ধ করে দিয়েছে। আশা করা হচ্ছে যেসব দেশ তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে আনছে তারা সংক্রমণ এড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে ওই মানুষদের দুই সপ্তাহের জন্য আলাদা করে রাখবে।

অন্যান্য সাম্প্রতিক ঘটনা : চীন, ইউরোপীয় ইউনিয়নকে বলেছে তারা যেন সদস্য দেশগুলি থেকে চিকিৎসা সরবরাহ পাঠানোর ব্যবস্থা করে। ভিয়েতনাম এয়ারলাইন্স চীন, হংকং এবং তাইওয়ানের সমস্ত ফ্লাইট স্থগিত করেছে। কান্টাস, এয়ার নিউজিল্যান্ড, এয়ার কানাডা এবং ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ এয়ারলাইনগুলি তাদের ফ্লাইট পুরোপুরি বন্ধ না হলে বাতিল করে দিয়েছে। উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন চীনের রাষ্ট্রপতির কাছে একটি চিঠিতে তার সমবেদনা জানিয়েছেন।

হায়াত, রেডিসন এবং হিল্টনসহ বিভিন্ন বিলাসবহুল হোটেলের চেইনগুলো চীনে ভ্রমণকারী অতিথিদের জন্য তাদের বাতিলকরণের নীতি বাড়িয়েছে। অ্যাপল জানিয়েছে যে তারা চীনে থাকা স্টোরগুলো অস্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেবে।

যুক্তরাজ্য ঘোষণা করেছে যে তারা চীনের মূল ভূখণ্ড থেকে তাদের বেশ কয়েকজন বিদেশি কর্মকর্তাকে সরিয়ে নেবে। রাশিয়া জানিয়েছে যে, স্বাস্থ্য পরীক্ষায় দুই চীনা নাগরিকের শরীরে ভাইরাসের উপস্থিতি সনাক্ত হওয়ায় তাদেরকে আলাদা করে রাখা হয়েছে। জার্মানি, ইতালি এবং সুইডেন ইউরোপে আরও কয়েকজনের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সিঙ্গাপুর চীন থেকে আসা সমস্ত ভ্রমণকারীদের জন্য তার সীমানা বন্ধ করে দিয়েছে। সূত্র : বিবিসি, জাগোনিউজ

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!