• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশের উন্নতি ভারতের প্রেরণার উৎস : মোদি


নিজস্ব প্রতিবেদক মার্চ ১২, ২০১৯, ০৩:৪৮ পিএম
বাংলাদেশের উন্নতি ভারতের প্রেরণার উৎস : মোদি

ঢাকা : ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেছেন, বাংলাদেশের উন্নতি সব সময়ই ভারতের জন্য আনন্দের বিষয় এবং প্রেরণার উৎস।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নতি ভারতের জন্য সব সময়ই একটি আনন্দের বিষয় তো রয়েছেই, উপরন্তু আমাদের জন্য প্রেরণার উৎস।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সোমবার (১১ মার্চ) অপরাহ্নে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে একযোগে তার দেশের আর্থিক সহযোগিতায় বাংলাদেশে চারটি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধনকালে প্রদত্ত ভাষণে এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা গণভবন থেকে এবং নরেন্দ্র মোদি নয়াদিল্লিতে তার কার্যালয় থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দেন। খবর বাসস।

ভারত-বাংলাদেশ সহযোগিতার প্রসঙ্গ টেনে মোদি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য মাহাত্ম্যপূর্ণ লক্ষ্য স্থির করেছেন। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে তৈরি করা এবং ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলায় তার রূপকল্পকে বাস্তব রূপ দিতে সহায়তা করা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে মিলে বিগত পাঁচ বছরে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের সোনালি অধ্যায়ের জন্য কাজ করতে পারাকে অত্যন্ত সৌভাগ্যজনক আখ্যায়িত করে মোদি বলেন, আমার পুরো বিশ্বাস রয়েছে বিগত পাঁচ বছর আমাদের জন্য যতটা গৌরবজনক ছিল, তারচেয়ে আগামী পাঁচ বছরে আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরো অধিক উচ্চতায় আসীন হবে।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এবং ভারতের বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেন। এ সময় ভারত সফররত বাংলাদেশের সংসদ সদস্যদের একটি প্রতিনিধিদল নরেন্দ্র মোদির দিল্লির কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন।

ভাষণের শুরুতেই মোদি বাংলায় বলেন, ‘আশা করি যে বাংলাদেশের সবাই ভালো আছেন।’

পুলওয়ামায় শহীদদের প্রতি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সমবেদনা জানানোয় এ সময় তার (শেখ হাসিনা) প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মোদি শেখ হাসিনা ও নৌকার বিপুল বিজয়ে তাকে পুনরায় অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, সর্বপ্রথম আমি সাধারণ নির্বাচনে আপনাকে বিপুল সমর্থন প্রদান করায় বাংলাদেশের জনগণকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। সঙ্গে বিপুল ভোট নিয়ে বিজয় অর্জন করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমি আন্তরিক মোবারকবাদ জানাচ্ছি।

এ সময় বাংলাদেশ সংসদ সদস্যদের একটি দল সম্প্রতি ভারতে আগমন করায় তাদেরকেও অভিনন্দন জানান মোদি। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আমার এটি ষষ্ঠ ভিডিও কনফারেন্স। এতটা সরলতার সঙ্গে এতবার দু’দেশের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে যোগাযোগ সাধন নিজে থেকেই বলে দিচ্ছে আমাদের দু’দেশের সম্পর্ক কতটা গভীর এবং মজবুত। তিনি এ সময় ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী এবং ২৬ মার্চ ৪৮তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশের জনগণকে শুভেচ্ছা জানিয়ে এর মধ্যেই দু’দেশের জনগণ হিন্দুদের পবিত্র উৎসব হোলি উদযাপন করবে উল্লেখ করে শুভেচ্ছা জানান।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, বন্ধুরা ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে কানেকটিভি জোরদার করার বিষয়ে আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রূপকল্পকে সবচেয়ে বড় প্রেরণা হিসেবে মনে করছি। আর এজন্য আমার খুবই আনন্দ হচ্ছে যে, আজ আমরা কেবল যানবাহন এবং কানেকটিভিই নয় একসঙ্গে মিলে জ্ঞান বাড়ানোরও পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে ভারতের ন্যাশনাল নলেজ নেটওয়ার্ক এখন থেকে বাংলাদেশের মেধাবী এবং গবেষকরাও ভারতের গবেষকদের সঙ্গে মিলিত হতে যাচ্ছেন, যা একটি শক্তিশালী বন্ধনের সৃষ্টি করবে।

বাংলাদেশ সরকারের স্বল্প ব্যয়ে জনগণকে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট দেওয়ার প্রচেষ্টায় তার সরকারের বাস এবং ট্রাক প্রদান অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, পানি বিশুদ্ধকরণ প্ল্যান্ট হাজার হাজার বাড়িঘরে বিশুদ্ধ পানির নিশ্চয়তা বিধান করবে। আর কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে এরসঙ্গে সংযুক্ত প্রায় দুই লাখ জনগণ সরাসরি উপকারভোগী হবে। যাদের নিজ বাড়ির পাশেই স্বাস্থ্যসেবা মিলবে। এসব প্রকল্পই সোজাসুজিভাবে জনগণের জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত। এই প্রকল্পগুলো দেখাচ্ছে যে, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক আসলে দু’দেশের জনগণের জীবনযাত্রার মান-উন্নয়নের জন্য এক মাহাত্ম্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

নরেন্দ্র মোদি বলেন, ভারত এবং বাংলাদেশের জনগণের সম্পর্ক পারস্পরিক আত্মীয়তা এবং পারিবারিক চিন্তাভাবনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।

নরেন্দ্র মোদি এটাকে তার ‘বিশ্বাস’ এবং ‘অঙ্গীকার’ উভয়ই উল্লেখ করে বলেন, আমার এই বিশ্বাস আজ আরো মজবুত হলো। কারণ, আজকে (গতকাল) বাংলাদেশ থেকে আসা বেশ কয়েকজন যুবনেতা এবং সংসদ সদস্যের সঙ্গে আলাপ করার সুযোগ হয়েছে।

তিনি বাংলাদেশ থেকে আগত সংসদ সদস্যদের প্রতিভা এবং কর্মচাঞ্চল্যে আগামীতে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছেন বলেও উল্লেখ করেন। তিনি পুনরায় বাংলায় ‘ভারত-বাংলাদেশ বন্ধুত্ব চিরজীবী হোক’ বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে তার বক্তব্য শেষ করেন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!