• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বাংলাদেশের এই মেয়ের সাফল্যগাঁথা শুনবে গোটা বিশ্বের কিশোরীরা


ক্রীড়া প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৯, ০৮:৩১ পিএম
বাংলাদেশের এই মেয়ের সাফল্যগাঁথা শুনবে গোটা বিশ্বের কিশোরীরা

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: মানুষের বাড়িতে বাড়িতে কাজ করে সংসার চালান মা। উপায়ন্তর না দেখে মাকে সাহায্য করতে কাজে যান পনের না পেরোনো মারিয়া মাণ্ডাও। বাবাহীন সংসারে এ ছাড়া যে কোনও উপায়ও ছিল না। ঠিক এই সময়েই ২০১১-তে দেশে বসল বঙ্গমাতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গোল্ডকাপ টুর্নামেন্ট। মারিয়া পড়াশোনা করতেন কলসিন্দুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সেই বিদ্যালয়ের হয়েই ফুটবলের পাঠ নিলেন তিনি। বছর দুয়েক যেতে না যেতেই এই টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হলো মারিয়ার বিদ্যালয়। দারুন পারফর্ম করে নজর কাড়লেন তিনি।

এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি মারিয়াকে। ২০১৪-তে ডাক পেলেন বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৪ মহিলা দলে। সে বছরই তাজিকিস্তানে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৪ আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়নশীপে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। সেই দলের সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন মারিয়া। তিনি নেতৃত্ব পান ২০১৭-এ। সেবার বাংলাদেশ দেখা পেল আরও বড় সাফল্য। প্রথমবার ভারতকে হারিয়ে বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব-১৫ মহিলা দল জিতল সাফ চ্যাম্পিয়নশীপ।

আস্তে আস্তে এই ফুটবলই বদলে দিল মারিয়ার জীবন। আগের মতো তাঁর মা আর মানুষের বাড়িতে বাড়িতে কাজে যান না। ফুটবল খেলে পাওয়া টাকা দিয়ে গ্রামে বাড়ি তৈরি করেছেন। মারিয়া অদম্য ইচ্ছাশক্তিতে জয় করেছেন দারিদ্রকে। তাঁর এই ব্যাপারটিকেই মনে ধরেছে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের। সংস্থাটি মারিয়াকে নিয়ে তৈরি করছে একটি ডকুমেন্টারি। বাংলাদেশের এই মেয়েটির সাফল্যের গল্পগাঁথা ইউনিসেফ ছড়িয়ে দিতে চাইছে বিশ্বের কোটি কিশোরীর কাছে।  

আর যাকে নিয়ে তৈরি হচ্ছে ডকুমেন্টারি সেই মারিয়া তো ভীষণ খুশি ইউনিসেফের এমন উদ্যোগে। তিনি বলছেন, ‘অনেক ভালো লাগছে। ওরা (ইউনিসেফ) আমার জীবনের গল্প জানতে চেয়েছিল। আমি বলেছি, আমার ফুটবলে উঠে আসার কাহিনী। সারাদেশের মতো গোটা বিশ্ব জানতে পারবে আমার সাফল্যের গল্প।’

কেন বিশ্বের কিশোরিদের কাছে মারিয়ার গল্প শোনাতে চায় ইউনিসেফ-এর ব্যাখা দিয়েছেন সংস্থাটির প্রতিনিধি মানুয়েলা ডিসপয়েন্টস। তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘ইউনিসেফের ফেসবুক পেজের জন্য আমরা একটি ডকুমেন্টারি তৈরি করছি। যেখানে তুলে আনার চেষ্টা করছি বাংলাদেশের মহিলা ফুটবলের বর্তমান অবস্থা এবং কিভাবে তারা জাতীয় স্তরে এসে অবদান রাখছে। এটা বিশ্ববাসির কাছে একটা বার্তা হবে যে  কিভাবে উন্নয়নশীল দেশের মেয়ে হয়েও ফুটবলে এত বড় অবদান রাখছে, যা বাংলাদেশের মহিলা ফুটবল সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা তৈরি করবে। আর মারিয়া একটা মডেল। ওকে নিয়ে আমরা কাজ করছি। তাঁকে দেখে কিশোরিরা প্রেরণা পাবে। কিভাবে ফুটবলের মাধ্যমে দারিদ্রকে হার মানিয়েছে মারিয়া, সেই গল্পটাই আমরা বিশ্বের সব কিশোরীদের শোনাতে চাই।’

২৪ ফেব্রুয়ারি ডকুমেন্টারিটি প্রকাশিত হবে উইনিসেফের ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজে। যেখানে একজন বাঙালি মেয়ের সাফল্যগাঁথা শুনবে গোটা দুনিয়ার কিশোরীরা।

সোনালীনিউজ/আরআইবি/জেডআই

Wordbridge School
Link copied!